ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

চাঁদপুরে জমে উঠেছে পশুর হাট

অমরেশ দত্ত জয় || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:০৪, ২০ জুলাই ২০২১  
চাঁদপুরে জমে উঠেছে পশুর হাট

চাঁদপুরে জমে উঠেছে পবিত্র ঈদুল আজহার গরু-ছাগলসহ গবাদিপশু বেচাকেনা। আর তাই হাটে নির্বিঘ্নে বেচাকেনায় প্রতিটি হাটেই জাল নোট, মলম পার্টি, অতিরিক্ত ইজারাসহ যাবতীয় বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। এর পাশাপাশি হাটগুলোতে গবাদিপশুর সুরক্ষায় প্রাণিসম্পদ বিভাগের ১৪টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।

চাঁদপুর সদরের বাগাদী চৌরাস্তার অস্থায়ী গবাদিপশুর হাটের ইজারাদার জাকির হোসেন খান জানান, ১৬'শ এর অধিক গরু আমাদের হাটে রয়েছে। দেশের ফরিদপুর, নোয়াখালী, মানিকগঞ্জ, যশোর থেকেও এই হাটে গরু এসেছে। এখন পর্যন্ত শতাধিক গরু বেচাকেনা হয়েছে। আমাদের হাটে পুলিশ কন্ট্রোল টিম স্থাপন রয়েছে। যেজন্য সুনামের সাথে নির্বিঘ্নে গরু বেচাকেনা চলছে।

তবে শুধু হাটেই নয়, গবাদিপশু বেচাকেনা জমে উঠেছে খামাড়গুলোতেও। আলাউদ্দিন, মুন্নাসহ বেশ কয়েকজন খামাড়ির সাথে আলাপ করলে তারা জানান, করোনা মহামারি হওয়ায় হাটের চেয়ে খামাড়ে গরু কেনা নিরাপদ। তাছাড়া হাটের চেয়ে খামাড় থেকে গবাদিপশু কম ও সুলভ মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। তাই আমাদের আহ্বান থাকবে, স্বাস্থবিধি মেনে খামাড় থেকে পছন্দের গবাদিপশু কম দামে ক্রয় করুন।

অন্যদিকে মনছুর, জামাল, শরীফসহ একাধিক বেপারী জানান, হাটে ক্রেতাসমাগম বাড়ছে। গবাদিপশু বেশি হওয়ায় হাটে গরু-ছাগল দেখে শুনে কেনা যায়। তাছাড়া দূর দূরান্ত থেকে অনেক বেপারি গবাদিপশু নিয়ে হাটে আসে। তখন ঐ সব গরু-ছাগল আনতে যেমন খনচ, আবার ফেরত নিতেও অনেক খরচ। তাই তারা একটু কম দাম পেলেও চেষ্টা করে গরু-ছাগল বিক্রি করে দিতে। আর তাই দাম কম বলেই ক্রেতারা হাটের দিকে ঝুঁকছেন। আর নির্ধারিত কম ইজারা দিয়ে গবাদিপশু বিক্রি করতে পেরে আমরাও খুশি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে জেলায় মোট ১ লক্ষ ১৮ হাজার ৩৬১টি গবাদিপশুর চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে গরু ৮২ হাজার ৯৭০টি এবং ছাগল, ভেড়া ও অন্যান্য পশুর চাহিদা রয়েছে ৩৫ হাজার ৪১৬টি। এক্ষেত্রে গবাদিপশুর ঘাটতি রয়েছে মাত্র ১ হাজার ৯৩টি।

সোমবার (১৯ জুলাই) এ তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের উপ-সহকারি (প্রাণি পুষ্টি) মো. মোবারক হোসেন। তিনি আরও জানান, আমাদের ৩ হাজার ২৪০ জন খামাড়ি রয়েছে। যাদের কাছে ২৬ হাজার ৭৯০টি গরু এবং ১৩ হাজার ৬৫৪টি ছাগল ও ভেড়া রয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ খামাড়িরাই গরু-ছাগল-ভেড়া হাটে বিক্রির উদ্দ্যেশ্যে তাদের গবাদিপশু তুলেছেন।

এ ব্যপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. বখতিয়ার উদ্দিন জানান, এবার হাটে দেশি প্রজাতির গবাদিপশুর পরিমাণ বেশি হলেও ভারতীয় গবাদিপশুও রয়েছে। অনলাইনে ক্রেতা-বিক্রেতাদের আগ্রহ কম হওয়ায় জেলা প্রশাসন ও এসপি মহোদয়ের সমন্বিত সিদ্ধান্তে আমরা হাট খুলে দিয়েছি। সেক্ষেত্রে আমাদের স্থায়ী ১৮৫টা হাটের পাশাপাশি অস্থায়ী আরও ২৬টি হাট বসানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যা আরও বাড়তে পারে।

তিনি আরও বলেন, পৌরসভার মধ্যে আমরা কোন অস্থায়ী হাটকে অনুমোদন দেইনি। কেউ বসাচ্ছে কিনা সে ব্যপারে আমরা তদারকি করছি। তাছাড়াও হাটগুলোতে গবাদিপশুর সুরক্ষায় আমাদের ১৪টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। তবে এই টিমের বাইরেও আমাদের লোকজন প্রতিটি হাটেই রয়েছে। স্বাস্থবিধি নিশ্চিতসহ যাবতীয় বিষয়ে আমরা হাটে প্রয়োজনে মোবাইল কোর্টে ব্যবস্থা নিবো।

এ ব্যপারে পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ জানান, আমরা প্রতিটি হাটেই পুলিশ দিয়েছি। নানা বিষয়ে হাটে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধ করতে আমিসহ আমাদের অফিসাররা মনিটরিং করছেন। নির্বিঘ্নে কোরবানির পশু ক্রয় করতে দিতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।

কোরবানির হাট প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ জানান, সরকারি নির্দেশনায় হাট বসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। হাটে স্বাস্থবিধি মেনে চলাসহ যাবতীয় বিষয়ে জেলা প্রশাসন তৎপর থেকে প্রয়োজনীয় মনিটরিং করছে।

ঢাকা/আমিনুল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়