ভৈরবের দুই গ্রামে পুলিশি পাহারায় ধান কাটার উৎসব

কিশোরগঞ্জ জেলার প্রতিটি গ্রামে গ্রামে এখন ধান কাটার উৎসব চলছে। কিন্তু তার মধ‌্যে ব‌্যতিক্রম ভৈরব উপজেলার দুটি গ্রাম খলাপাড়া ও লুন্দিয়া।

টানা ১৩ দিন এ গ্রাম দুটি ছিলো পুরুষশূন্য। ফলে সারাদেশের মতো এ দুটি গ্রামের ধানক্ষেতে ছিল না কোনো উৎসব আমেজ। অবশেষে পুলিশের পাহারায় গ্রামের কৃষকরা ফিরে এলেন তাদের জমিতে। আনন্দভরা মন নিয়ে কাটছেন ধান।

কোন ভয়-ভীতি ছাড়া নিজেদের জমির ধান কাটতে পেরে আনন্দিত তারা। আর নিরীহ কোন পুরুষ হয়রানির শিকার হবেনা, পুলিশের কাছে আশ্বাস পাওয়ার পর একে একে বাড়ি ফিরছেন সবাই।

গত ১৭ এপ্রিল ভৈরব উপজেলার খলাপাড়া ও লুন্দিয়া গ্রামের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে নিহত হন  ২ জন এবং আহত হন দুই গ্রামের প্রায় অর্ধশত মানুষ। যে কারণে মামলার ভয়ে পুরুষশূন্য হয়ে পড়ে এ গ্রাম দুটি। ক্ষেতে পাকা ধান পড়ে থাকলেও কাটার কোন মানুষ ছিলো না। যে কারণে গ্রামের গৃহিনীরাও ছিলেন আতঙ্কে।

এবার ধান কাটা উৎসবে মেতেছেন গ্রাম দুটির কৃষকেরা। শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষকরা পুলিশি পাহারায় জমির ধান কেটে মাড়াই করে ঘরে তুলেছেন। যতদিন পর্যন্ত কৃষকদের ধান কাটা শেষ না হবে ততদিন পর্যন্ত পুলিশের উপস্থিতিতে ধান কাটা অব‌্যাহত থাকবে।

ভৈরব থানা পুলিশের পক্ষ থেকে এলাকায় মাইকিং করে জানানো হয়, মামলার আসামি ছাড়া কোনো নিরীহ মানুষকে পুলিশ গ্রেপ্তার করবে না। প্রয়োজনে পুলিশ কৃষকদের নিরাপত্তা দেবে। এরই মধ‌্যে পুলিশের উপস্থিতিতে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম জানান, কৃষি বিভাগ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে ধান কাটার ব্যবস্থা করেছে। জমির মালিকরাও প্রশাসনের আশ্বাসে আশ্বস্ত হয়ে উপস্থিত থেকে ধান কাটছেন।

ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিন বলেন,যারা মামলার আসামি নন, তাদের কোনো ভয় নেই। কৃষি বিভাগের অনুরোধে পুলিশের উপস্থিতিতে কৃষকরা নির্বিঘ্নে নিরাপদে ধান কাটছেন। যতদিন জমিতে পাকা ধান থাকবে, ততদিন পুলিশ উপস্থিত থেকে ধান কাটতে সহযোগিতা করবে।