ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের প্রণোদনা খুব প্রয়োজন : মিনহাজ মান্নান ইমন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪৭, ১২ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের প্রণোদনা খুব প্রয়োজন : মিনহাজ মান্নান ইমন

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেছেন, ‘বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বৈশ্বিক পুঁজিবাজারের বাইরে নয়৷  পুঁজিবাজারের স্বার্থে এই মুহূর্তে সরকারের কাছ থেকে অন্যান্য খাতের মতো প্রণোদনা বা আর্থিক সাহায্য দরকার।’

রোববার (১২ এপ্রিল) ডিএসই থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, ‘ব্রোকার কমিউনিটি বা ট্রেকহোল্ডার, মার্চেন্ট ব্যাংক, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, মিউচ্যুয়াল ফান্ডসহ অন্য যারা আছেন, তাদেরকে স্বল্প সুদে ও স্বল্প মেয়াদে আর্থিক সাহায্য বা প্রণোদনা দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি। এ মুহূর্তে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের আর্থিক সহযোগিতা খুবই জরুরি। বিশেষ করে, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে স্বল্প সুদে সরকার এ মুহূর্তে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করতে পারে। দিন শেষে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার দিকটাও চিন্তা করতে হবে।’

সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘লেনদেনে ০.০৫ অর্থাৎ ৫ পয়সা হারে যে অগ্রিম ইনকাম ট্যাক্স দিতে হয়, সেটা এই মুহূর্তে সম্পূর্ণ মওকুফ করে দেওয়া হোক। আর সর্বশেষ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কথা ভাবতে বলব। তারাও খুব ক্ষতিগ্রস্ত। বাজার খোলার পরে তাদের ব্যাপারেও প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে দেখতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘শেয়ারবাজার বন্ধ রাখার বিষয়টি আমাদের জন্য দুঃখজনক৷ আসলে এটার সাথে আমরা পরিচিত না৷ এতদিন যাবত শেয়ারবাজার বন্ধ থাকা খুবই কষ্টকর এবং একটি খারাপ অভিজ্ঞতা। তবে বাস্তবতার দিকটাও আমাদের চিন্তা করতে হবে। উন্নত বিশ্বের সাথে আমাদের কিছুটা টেকনিক্যাল পার্থক্য আছে।’

মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, ‘উন্নত বিশ্বের স্টক মার্কেট সম্পূর্ণ অটোমেটেড মার্কেট এবং অনলাইন প্লাটফর্মভিত্তিক মার্কেট। সেখানে মোবাইল অ্যাপসগুলো অনেক কার্যকরী। যেমন: সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ পুরো লেনদেন মোবাইলে হয়। সেখানে একটি ইন্টিগ্রেটেড সিস্টেম আছে এবং এক সত্ত্বা হিসেবে কাজ করে। এই সিস্টেমে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, সিডিবিএল, সিসিবিএল সবই সম্পৃক্ত। তবে আমাদের সত্ত্বাগুলো ভিন্ন। ফলে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন যদি বন্ধ থাকে, আমাদেরও বন্ধ রাখতে হয়। আবার সিডিবিএলও পাশাপাশি বন্ধ। ফলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে চালু রাখাটা কিছুটা কষ্টকর।’

এদিকে, দেশের লকডাউন পরিস্থিতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, নিরাপত্তা সরঞ্জামের অভাবসহ বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা দেওয়া বা অফিসের কর্মচারী, কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা দেয়ার বিষয়টাও প্রাধান্য পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

ডিএসইর পরিচালক বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ডিএসইর বোর্ডের সিদ্ধান্ত—সরকারের ছুটি যদি বাড়ে, দুঃখজনক হলেও এটার বাস্তবতায় আমাদের লেনদেনটা বন্ধ থাকবে। তবে কমিশন অফিস খোলা রাখে, সেক্ষেত্রে ভিন্ন সিদ্ধান্ত আসতে পারে। আমরা ব্রোকাররা অনেক খারাপ অবস্থায় আছি। ২০১৯ সাল থেকেই আমাদের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। লেনদেন কমায় আয় কমেছে। আমরা প্রত্যকেই লোকসানে ব্যবসা করছি। এই করোনাকালে তো আমাদের অবস্থা আরো ভয়াবহ খারাপ। এপ্রিল মাসে আমাদের আয় হবে শূন্য। অথচ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দিতে হবে৷

এদিকে, শেয়ারের দরপতনের সর্বনিম্ন সীমা (যে দরের নিচে নামতে পারবে না) বেঁধে দেওয়ার কারণে লেনদেন এক ধরনের বন্ধ অবস্থায় আছে বলে জানিয়েছেন ইমন।

তিনি বলেন, ‘এ অবস্থায় অফিস খুললেও খুব একটা আয়-রোজগার হবে না। প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, শিল্প উদপাদন, রপ্তানি বাণিজ্য, পর্যটন, এভিয়েশন ও হসপিটালিটি খাত, ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোগ, কর্মসংস্থান ইতাদি ক্ষেএে ধস নেমেছে৷ পুঁজিবাজারে বিশ্বব্যাপী বিগত কয়েক সপ্তাহে ২৮-৩৪ শতাংশ দরপতন ঘটেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন৷ সম্ভাব্য অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের জন্য আর্থিক সহায়তা হিসেবে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি প্রণোদনা পাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার। আশা করা হচ্ছে, এতে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে।’


ঢাকা/এনটি/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়