অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় কমান: এফবিসিসিআই সভাপতি
বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
করোনাভাইরাসের সংকটকালে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার কাছ থেকে অতিরিক্ত তহবিল পাওয়ার প্রচেষ্টা চালালোর পাশাপাশি ব্যাংকের তারল্য ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখার লক্ষ্যে অনুৎপাদনশীল খাতের খরচ কমানোর পরামর্শ দিয়েছে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
সংগঠনটি পরিস্থিতি মোকাবিলায় অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং এফবিসিসিআইয়ের সমন্বয়ে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে সরকারের কাছে।
বুধবার (৬ মে) করোনা সংকটে ব্যবসায়ীদের জন্য বিভিন্ন প্রণোদনা ও ঋণ প্যাকেজ নিয়ে আয়োজিত অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে পরামর্শ ও প্রস্তাব তুলে ধরেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম।
লিখিত বক্তব্যে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের অবশ্যই অতিরিক্ত রিসোর্স প্রয়োজন হবে। এজন্য উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের অগ্রাধিকার পুনর্বিন্যাস করতে হবে।’
অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে তিনি উন্নয়ন সহযোগী বিশেষ করে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি এবং আইডিবি থেকে তহবিল পাওয়ার ক্ষেত্রে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি ৪০ বছরের জন্য নমিনাল কস্ট-এ তহবিল পাওয়ার বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণের পরামর্শ দেন। যেন পরবর্তী পর্যায়ে এ তহবিল এসএমই প্রতিষ্ঠানের লোনের একটি অংশ অনুদান হিসেবে দেওয়া হয়। এছাড়া অনুৎপাদনশীল খরচ বিশেষ করে বিবিধ খরচ, বিদেশ ভ্রমণ, হাউজিং ও কার লোন কমানোর পরামর্শ দেন তিনি।
করোনায় আর্থিক ক্ষতি মোকাবিলায় সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে যথাযথ মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করার পাশাপাশি ডিজাইন এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে প্রয়োজনে সমন্বয়ের তাগিদ দিয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর সম্ভাব্য প্রভাব মোকাবিলায় ৪ কোটি মানুষকে খাদ্য সহযোগিতা, ইনফরমাল সেক্টরে কর্মরতদের আর্থিক সহযোগিতায় ৭০০ কোটি টাকা, এসএমই শিল্পের ২০ হাজার কোটি টাকা, বৃহৎ শিল্পে ৩০ হাজার কোটি টাকা, রফতানি শিল্পে ৫ হাজার কোটি টাকা, কৃষি খাতে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেছে সরকার এসব সামাজিক কর্মকাণ্ড যতটা স্বাভাবিক রাখা যাবে, তাতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে মনে করছেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, ব্যাংকিং খাতের বিদ্যমান তারল্য ও মূলধন বিষয়ক চ্যালেঞ্জগুলোর কারণে ব্যাংকগুলো ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ঝুঁকির বিষয়টি অগ্রাহ্য করতে পারছে না। ব্যাংকের তারল্য বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের পুর্নবিন্যাস সুনির্দিষ্ট উদ্যোগের কারণে বর্তমানে তারল্য ৪৬ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধি পাওয়ার কথা এবং ইডিএফসহ ৭০ হাজার কোটি টাকা হওয়ার কথা এবং এসএলআর-এর মাধ্যমে এক লাখ কোটি টাকা এক্সেস টু ফান্ড থাকার কথা।
তিনি বলেন, সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রণোদনা তহবিলের আওতায় ব্যাংকগুলোকে সুদের হারের ভর্তুকির পাশাপাশি ম্যাচিং ফান্ড সুবিধা প্রদানের বিষয়টি ব্যাংকিং সেক্টরকে সহায়তা করবে। গতানুগতিক ব্যাংকিং থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ রিফাইন্যান্স স্কিম প্রণোদনাকে আরও কার্যকর করবে।
বর্তমান ঋণের কিস্তি এবং সুদের ওপর মোরাটোরিয়াম ১ এপ্রিল ২০২০ থেকে পরবর্তী তিন কোয়াটারের জন্য দাবি জানায় এফবিসিসিআই। ব্যবসায়িক কার্যক্রম অস্বাভাবিক পরিস্থিতির কারণে এবং ঋণ খেলাপি যেন না হয়, সেই লক্ষ্যে এ মোরাটোরিয়াম-এর আবেদন করা হয়।
দেশের ৪৫ লাখের বেশি খুচরা দোকানদার, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও স্ব-উদ্যোক্তার জন্য ডেডিকেটেড প্রণোদনা তহবিল বিবেচনা করার প্রস্তাব দেন শেখ ফজলে ফাহিম।
হাসনাত/সাইফ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন