ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ঋণখেলাপিদের প্রণোদনার সদ্ব্যবহার চান অর্থনীতিবিদরা

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৪৭, ১২ মে ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
ঋণখেলাপিদের প্রণোদনার সদ্ব্যবহার চান অর্থনীতিবিদরা

প্রতীকী ছবি

করোনাভাইরাসের কারণে ‘ভঙুর অর্থনৈতিক’ পরিস্থিতিতে উৎপাদন শুরু করার জন্য শর্ত শিথিল করে প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ পাওয়ার জন্য ঋণখেলাপিদের সুযোগ দিয়েছে সরকার। জাতীয় অর্থনীতি সচল রাখার স্বার্থে সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসাবেই দেখছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা মনে করছেন সংশ্লিষ্টদের উচিত হবে জাতীয় স্বার্থে এর সদ্ব্যবহার করা।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বর্তমান সরকার শুরু থেকেই ঋণখেলাপিদের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে থাকার ঘোষণা দিয়ে আসছে। এর অংশ হিসাবে গত এপ্রিলে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছিল ঋণখেলাপিরা প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ পাবেন না। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় প্রকাশিত তালিকায় দেখা যায় দেশের অনেক বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানও ঋণখেলাপির তালিকায় রয়েছে। আবার জাতীয় উৎপাদনখাতে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের অবদানও রয়েছে।  বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই হয়তো নীতিমালা শিথিল এর কথা বলা হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্টদের উচিত হবে জাতীয় স্বার্থে এর সদ্ব্যবহার করা।

করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবেলায় সরকার ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে। এরমধ্যে ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সেবাখাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসেবে টাকা জোগানোর জন্য। এই তহবিল থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে উদ্যোক্তারা ৯ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে পারবেন। তবে তাদের ৪.৫ শতাংশ সুদ পরিশোধ করতে হবে, বাকি ৪.৫ শতাংশ সুদ সরকার ভর্তুকি হিসাবে দেবে। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছিল, প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ ঋণখেলাপিরা পাবে না। এমনকি যেসব ঋণখেলাপি বিভিন্ন সময়ে সরকারের দেওয়া সুযোগ নিয়ে তিনবারের বেশি তাদের ঋণ পুনঃতফসিল করেছেন, তারাও এই প্রণোদনার অর্থ পাবে না। সংকটকালীন সময়ের জন্য ঘোষিত এই প্রণোদনার অর্থ ব্যবহারের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত ১২ এপ্রিল এ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে। এতে যেসব শিল্প ও সেবাখাতের প্রতিষ্ঠান ভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শুধু সেসব প্রতিষ্ঠানকে এই সুবিধার আওতাভুক্ত করা হয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা এ সংক্রান্ত কিছু শর্ত শিথিল করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অর্থনীতিবীদ অধ্যাপক আবু আহমেদ রাইজিংবিডিকে বলেন, করোনাভাইরাসের সংকটকালীন সময়ে দেশের জাতীয় উৎপাদন অব্যাহত রাখা জরুরি।  তাই বাংলাদেশ ব্যাংক প্রণীত ইন্টারনাল ক্রেডিট রিস্ক গ্রেডিং সিস্টেম এর শর্ত শিথিল করে ঋণ খেলাপিদের আওতাভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু সংকটকালীন মুহূর্তে বিষয়টিকে আমাদের ইতিবাচক হিসাবেই দেখা উচিত।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, আমরা দেখছি কোনো না কোনো সুযোগ তৈরি করে ঋণখেলাপিরা পার পেয়েই যাচ্ছে।  সরকার বড় ঋণখেলাপিদের ধরতে পারছে না। এখন উৎপাদন শুরু করার জন্য ঋণ খেলাপিদের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। জাতীয় স্বার্থে এটি সরকারের আন্তরিকতার পরিচয় দেয়। কিন্তু এটি কতটা কাজে আসে সেটাই দেখার বিষয়।


ঢাকা/হাসান/জেডআর

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়