ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

ফের ঊর্ধ্বমুখী নিত্যপণ্যের বাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:০১, ২৬ মে ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
ফের ঊর্ধ্বমুখী নিত্যপণ্যের বাজার

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশে সাধারণ ছুটি চলছে। এরইমধ্যে সোমবার (২৫ মে) পবিত্র ঈদুল ফিতর উৎযাপিত হলো। করোনাসংকটের মধ্যেও বাজারে মুরগি, ডিম ও সবজিসহ বেশিরভাগই নিত্যপণ্যের দাম চড়া।

গত দশদিন আগে সবজি যে দামে বিক্রি হয়েছে, সেটি এ সপ্তাহের শুরুতে দ্বিগুণে দাঁড়িয়েছে। ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকার বেশি দাম বেড়েছে। আর ডিমে ( প্রতি ডজনে) বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা।

মঙ্গলবার (২৬ মে) রাজধানীর যাত্রবাড়ী, রায়েরবাগ, দয়াগঞ্জ, শনিরআখড়ার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পটল ৩৫-৫০ টাকা, করলা ৪০-৫০ টাকা, বরবটি ৫০-৬০ টাকা, ঝিঙা ৫০-৬৫ টাকা, কচুর লতি ৪৫-৬৫ টাকা, গাজর ৮০-১০০ টাকা, শশা ৪০-৬০ টাকা কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে।  এসব সবজি গত ১০ দিন আগে অর্ধেক দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি বেগুন (প্রকারভেদে) ৫০ থেকে ৬০ টাকা,  কাঁচা মরিচ ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা,  ধুন্দুল ৪০ থেকে ৫৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।  আলু ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, শাক প্রতি আঁটি ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

লাউ প্রতি পিস ৪০ থেকে ৬০ টাকা, প্রতি হালি লেবু ২০ থেকে ৪০ টাকা হালি (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে।

সবজির দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে রায়েরবাগ বাজারের ব্যবসায়ী সুলতান হোসেন বলেন, আড়ৎ থেকে বলা হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ফসলের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া কৃষিপণ্যের গাড়ি কম আসছে। এ কারণে কেজিতে ৮ থেকে ২০ টাকা। আবার কোনটির দাম দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

যাত্রবাড়ীর কাঁচামালের আড়ৎদার আনিছুর রহমান বুলু বলেন, ঝড়ের কারণে উত্তর-দক্ষিণ অঞ্চলের অনেক শাক-শবজি ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। চাহিদার তুলনায় বাজারে পণ্য কম থাকায় দাম বেড়েছে। ঈদের সপ্তাহ খানেক পর সব ঠিক হয়ে যাবে।  

মাতুয়াইলের ব্যবসায়ী রুমেল বলেন, বাজারে সবজি কম তাই দাম বেশি। চাহিদা মতো আনতে পারিনি। আড়ৎ থেকে বলছে ঈদের পর আবার স্বাভাবিক হবে।

গত ১০/১২ ধরে বয়লার মুরগির দামও ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ৮০ টাকা ডজনের ডিম এখন ১০০ থেকে ১১০ টাকা। সাদা ব্রয়লার ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা করে বিক্রি হলেও। ঈদের দুদিন আগ থেকে এ সপ্তাহে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। লাল লেয়ার মুরগি ২২৫ টাকা ২৫০ টাকায় করে বিক্রি হচ্ছে। কক (সোনালী) ২৪০ থেকে ২৭০ টাকায়, এছাড়া দেশি মুরগির কেজি ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গরুর মাংস রোজার শুরুর পর থেকে (হাড়সহ) ৬০০, গরুর মাংস (হাড় ছাড়া) ৬৫০ টাকা, খাসির মাংস ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

যাত্রবাড়ীর বাজারে মুরগি ব্যবসায়ী রফিক মিয়া বলেন, রোজার আগে ১২০ থেকে ১১৫ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। এখন সাপ্লাই কমে যাওয়ার কারণে দিন দিন দাম বাড়ছে।  

গত ১০ দিন আগে থেকে রাজধানীর বাজারগুলোতে কমতে শুরু করেছে চালের দাম। যাত্রাবাড়ী চালের আড়তে গিয়ে দেখা যায়, নতুন মিনিকেট চাল ৪২ টাকা থেকে ৪৯ টাকায় (মানভেদে) বিক্রি হচ্ছে, যা ১০ দিন আগেও ছিল ৫৪ থেকে ৫৮ টাকা, আর পুরনো মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৪৯-৫২ টাকা কেজি দরে।  নাজিরশাইল প্রতিকেজি ৪৫-৫০ টাকায় (মানভেদে), যা গত ১০ দিন আগেও ৫২ থেকে থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে।  বিআর আটাশ ৩৬-৪৩ টাকা (মানভেদে) কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

অপরদিকে, প্রতি কেজি চায়না রসুন ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, চায়না আদা ১৫০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই সপ্তাহ আগেও আদার দাম ছিল ৩৫০ টাকা কেজি

এছাড়া প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা, ছোলা ৬৮ থেকে ৭৫ টাকা, চিনি ৬২ থেকে ৭০ টাকা, সয়াবিন তেল (খোলা) ৯২ থেকে ৯৬ টাকা, ডাবলি ৫২ থেকে ৭০ টাকা, অ্যাঙ্কর ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, দেশি মসুর ডাল (চিকন) ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ৭৬ থেকে ৯০ টাকা, ছোলার ডাল ৭৫ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

ফোরকান নামে রায়েরবাগ বাজারের একজন ক্রেতা বলেন, বাজারে চালের দাম কমেছে। তবে বয়লার মুরগির দাম বেড়েছে। গরিব মানুষ আমিষের চাহিদা পূরণে বয়লার মুরগি ও ডিম খায়। এ দুটির দাম গত ১০ দিন আগ থেকে বেড়েছে। প্রতি কেজি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা এবং  ৮০ টাকা ডজনের ডিম এখন ১০০ থেকে ১১০ টাকা।  সরকারের উচিত অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের  উপপরিচালক আতিয়া সুলতানা বলেন, রমজানের আগ থেকে নিয়মিত বাজার তদারকি করছি। একারণে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে ছিল। এখনও বাজার মনিটংরি চলছে। পাইকারি-খুচরা বাজারে দামে অসঙ্গতি দেখা দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


ঢাকা/আসাদ/এসএম

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়