করোনা: যেভাবে হবে এবারের বাজেট অধিবেশন
আগামী ১১ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপন করবেন। এখন দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের প্রকোপ থাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভিন্ন আঙ্গিকে বাজেট উপস্থাপন করা হবে।
এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘প্রতি বছর বাজেটের দিন জাতীয় সংসদ ভবনে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। সব সংসদ সদস্যই চান বাজেট উপস্থাপনের দিন সংসদে উপস্থিত থাকতে। কিন্তু এবার অনেকে সে সুযোগ নাও পেতে পারেন। করোনার কারণে বাজেট উপস্থাপনের দিন স্বাস্থ্যবিধি মানতে সংসদ সদস্যদের উপস্থিতি সীমিত রাখা হবে। যারা শারীরিকভাবে অসুস্থ তাদেরকে সংসদে আসতে নিষেধ করা হবে। বয়োজ্যেষ্ঠ বেশ কয়েকজনকে এবার হয়তো বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনে সংসদে নাও দেখা যেতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে একটি করে আসন ফাঁকা রেখে আসন বিন্যাস করা হবে। সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করতে হবে।’
ওই কর্মকর্তা জানান, প্রতি বছর বাজেট বক্তৃতায় একটি শিরোনাম ব্যবহার করা হয়। এবারের বাজেট বক্তৃতার প্রাথমিক শিরোনাম করা হয়েছে,‘ অর্থনৈতিক উত্তরণ: ভবিষ্যৎ পথপরিক্রমা’। মূল বাজেট বক্তৃতার পৃষ্ঠা সংখ্যা ৭৫ এর মধ্যে সীমিত রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। সংযোজনীসহ তা ১২০ পাতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হবে।
১১ জুন দুপুরে মন্ত্রিসভার এক বিশেষ অধিবেশনে নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন করিয়ে নেওয়া হবে। সংসদ নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে সীমিত সংখ্যক মন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে অর্থ বিভাগ ও অন্যান্য কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, করোনার কারণে এবারই প্রথম সংসদ অধিবেশনে কোনো দর্শনার্থী থাকবে না। প্রতিবছর অর্থনীতি ও সংসদ বিটের সাংবাদিকরা বাজেট অধিবেশন কাভার করে থাকেন। কিন্তু এবার তাদেরকে সংসদে প্রবেশাধিকার দেওয়া হচ্ছে না। তবে জাতীয় সংসদের পশ্চিম দিকে মিডিয়া সেন্টার থেকে সাংবাদিকদের বাজেটের যাবতীয় ডকুমেন্ট সরবরাহ করা হবে। একই সময় অর্থ বিভাগের ওয়েবসাইটে বাজেট বক্তৃতা আপলোড করা হবে।
প্রতিবার বাজেট উপস্থাপনের পরের দিন অর্থমন্ত্রীর পক্ষ থেকে একটি বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এবার এ সংবাদ সম্মেলন অনলাইনে করা হবে। অর্থমন্ত্রী তার পরিকল্পনা কমিশনের অফিস থেকে জুম অনলাইনের মাধ্যমে বাজেট সম্পর্কিত বক্তব্য তুলে ধরবেন এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী আমাদের সবকিছু সীমিত রাখতে হচ্ছে। অন্যান্য বার আমাদের বাজেট টিমের সবাই বাজেট উপস্থাপনের দিন সংসদে উপস্থিত থাকতেন। কিন্তু এবার এই টিমের সদস্যদের সংখ্য অত্যন্ত সীমিত রাখা হবে। মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা এবার বাজেট অধিবেশনে উপস্থিত থাকবেন। এবার বাজেটের ডকুমেন্টের সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে।’
জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের বাজেটে মূল ফোকাস থাকবে করোনার ওপর। করোনা কারণে অর্থনীতির কী ক্ষতি হয়েছে তার বিবরণসহ এ পর্যন্ত যেসব প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে তার একটি ফিরিস্তি তুলে ধরবেন অর্থমন্ত্রী। বলা হবে, চলতি অর্থবছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেলেও আগামী অর্থবছরে তা বেড়ে যাবে। আগামী সেপ্টেম্বর নাগাদ দেশের সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড করোনাপূর্ব অবস্থায় ফিরে যাবে। এখানে আশাবাদী চিত্রই বেশি থাকবে। এ বিষয়ে বিশ্বখ্যাত কয়েকজনের উদ্ধৃতিও তুলে ধরা হবে।
ঢাকা/হাসনাত/রফিক
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন