ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

পাল্টা ব্যবস্থা, এবার ভারত থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ

শাহ আলম খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০৮, ৩ জুলাই ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
পাল্টা ব্যবস্থা, এবার ভারত থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ

বেনাপোল দিয়ে আমদানি-রপ্তানি চালু করতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।  চিঠিতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য পুনরায়  চালু করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।  বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

করোনার অজুহাতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অনুমোদন না মেলায় রপ্তানি চালান ভারতে পাঠাতে পারছে না বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা।  দীর্ঘদিনেও এর সুরাহা না হওয়ায় বুধবার পাল্টা ব্যবস্থা হিসাবে ভারত থেকেও পণ্য আমদানি বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা।  উদ্ভূত পরিস্থিতিতে  ওই দিনই পররাষ্ট্র্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভারতের পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়।

বাণিজ্য সচিব ড. জাফর উদ্দিন শুক্রবার (৩ জুলাই) রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি অবহিত হওয়ার পরপরই দ্রুত পদক্ষেপ নিই।  সৃষ্ট সমস্যার দ্রুত সুরাহা নিয়ে দুই দেশের সরকারের মধ্যে এখন কূটনৈতিক পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা চলছে।  আশা করছি সমস্যা কেটে যাবে।’

এফবিসিসিআইএর সাবেক সভাপতি ও ইন্দোবাংলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড  ইন্ডাষ্ট্রির (আইবিসিসিআই) সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, ‘এ সমস্যা সাময়িক।  পানির স্রোত ও পারস্পরিক মেলবন্ধন আটকে রাখা যায় না।  আমরা মনে করি, করোনাও পারবে না দুই দেশের বাণিজ্যকে স্থবির রাখতে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সমস্যা নিরসনে দুই দেশের সরকারই আন্তরিক।’

জানা গেছে, ওই চিঠিতে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত বাণিজ্য সমজোতা চুক্তি (এমওইউ) বাস্তবায়নে পারস্পরিক সহযোগিতা চাওয়া হয়।  বলা হয়, স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য দীর্ঘদিনের।  করোনা অজুহাতে মাঝে কিছু সময় বৈশ্বিক উদ্যোগ হিসাবে বন্ধ রাখা হয়।  কিন্তু করোনা পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হচ্ছে।  ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অর্থনীতি সচলে আবারও জোর দিয়েছে।  স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু করা হচ্ছে আমদানি-রপ্তানি।  এরই ধারাবাহিকতায় দুই দেশের মধ্যে বন্ধ হয়ে পড়া বাণিজ্য আবারও চালু হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের (ভারতের বাণিজ্য দপ্তর) এ বিষয়ে অনুমোদন থাকলেও লেনদেন সম্পন্ন পর্যায়ে বাংলাদেশের পণ্য ভারতে প্রবেশ ও খালাসে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পাওয়া যাচ্ছে না। যদিও ভারতের পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশ সরকারের কোনো অস্বীকৃতি নেই।  এভাবে ধারাবাহিকভাবে একপাক্ষিক বাণিজ্য চলতে থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা। যা সুষম বাণিজ্য পরিস্থিতিতে বৈষম্যের সৃষ্টি করবে এবং দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্য ঘাটতি আরও বাড়বে।

প্রসঙ্গত, করোনা পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে স্থল বন্দরকেন্দ্রিক বাণিজ্য বন্ধ ছিলো টানা ৭৬ দিন।  গত ২২ মার্চ বেনাপোল-পেট্টাপোল এ দুই বন্দরের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়।  স্থানীয়ভাবে দুই দেশের বন্দর, কাস্টমস, বন্দর ব্যবহারকারীরা দফায় দফায় বৈঠকের পর গত ৭ জুন সীমান্ত বাণিজ্য সচল হয়।  তবে এই বাণিজ্য চলতে থাকে একপাক্ষিকভাবে।  অর্থাৎ বাংলাদেশ শুধু আমদানিই করছে।  এর বিপরীতে পণ্য রপ্তানি করতে পারছে না। ওদিকে ভারত সরকার লকডাউনের মেয়াদের দফায় দফায় বাড়িয়ে ৩১ জুলাই করেছে।  তবে করোনাকেন্দ্রিক বন্ধ বাণিজ্য চালু হওয়ার পর পণ্য রপ্তানিতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো বিধি-নিষেধ না থাকলেও লকডাউনের কারণে বাংলাদেশের পণ্য গ্রহণ করছে না পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এর ফলে বন্দরে অপেক্ষমান অসংখ্য রপ্তানি চালান আটকে আছে।  ভারতীয় কর্তৃপক্ষ রপ্তানি পণ্য না নেওয়ায় পাল্টা ব্যবস্থা হিসাবে বুধবার (১ জুলাই) সকাল থেকে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি বাণিজ্য কার্যকক্রমও বন্ধ করে দেওয়া হয়। 


শাহ আলম খান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়