ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এলপিজির দাম নির্ধারণ করতে চায় বিইআরসি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৪৫, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ২০:৪৬, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০
৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এলপিজির দাম নির্ধারণ করতে চায় বিইআরসি

তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম নির্ধারণ করতে ফর্মুলা তুলে ধরেছে বাংলাদেশে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। 

কমিশন বলছে, সারা দেশে এলপিজির অভিন্ন একটি মূল্য তালিকা হতে পারে৷ একইসঙ্গে মাসিক বা প্রতি ৩ মাসে একবার করে এলপিজির দাম নির্ধারণ করতে চায় তারা। এজন্য ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দাম নির্ধারণ করতে চায়  রেগুলেটরি কমিশন। শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে অনলাইন প্লাটফর্ম জুমে বিইআরসির পক্ষ থেকে এটি তুলে ধরা হয়।

এলপিজির দাম কীভাবে আরও কমিয়ে আনা সম্ভব-এ বিষয়ে বিইআরসির পক্ষ থেকে কিছু উদ্যোগের কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের এলপিজির দাম নিয়ন্ত্রণে বড় জাহাজে করে এলপিজি আনতে হবে। এককভাবে না পারলে যৌথভাবেও এলপিজি আনা সম্ভব।

মূল প্রবন্ধে বিইআরসির উপ-পরিচালক (ট্যারিফ) কামরুজ্জামান বলেন, এলপিজির রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের টন প্রতি পরিবহন ব্যয় ভারতের চেয়ে দ্বিগুণ। এই ব্যয় কমানো গেলে দেশে এলপিজির দাম কমানো সম্ভব।

মূল প্রবন্ধে বিইআরসির পক্ষ থেকে বলা হয়, ভারতের হলদিয়া বন্দরে টনপ্রতি এলপিজি আমদানি ব্যয় ৬০ ডলার অন্যদিকে বাংলাদেশে যা সর্বোচ্চ ১৩০ ডলার। বলা হয়, মোংলা বন্দরের হারবারিয়া এলাকায় ৩০ হাজার টন এলপিজির জাহাজ আনা সম্ভব। এটি করা সম্ভব হলেও দেশে এলপিজির পরিবহন ব্যয় টনপ্রতি ৮০ ডলারে নামিয়ে আনা সম্ভব।

ভারতের কলকাতায় এলপিজির দর কেজি প্রতি ৫০ টাকা। অন্যদিকে বাংলাদেশে এই দাম স্থান ভেদে সর্বোচ্চ ৮৩ টাকা। বলা হচ্ছে, ভারতে পরিবহন ব্যয়ের তুলনায় বাংলাদেশে পরিবহন ব্যয় দ্বিগুণ এছাড়া ভারতে এলপিজির বিপণন ব্যয় কেজিতে ১৫ টাকা হলেও বাংলাদেশে তা ৩০ থেকে ৩২ টাকা। এলপিজি পর্যায়ে মূসক আছে পাঁচ ভাগ। এটি সরকার নির্ধারিত সময়ে পরিবর্তন হতে পারে। স্টোরেজ এবং বোতলের দাম বছরে একবার ঠিক করতে চায়।

এলপিজি সংগঠনের সভাপতি আজম জে চৌধুরী বলেন, বেসরকারি খাতে যদি কোনও ব্যবসা করতে চায় তাহলে বিপিসির জন্য একটি মার্কেটিং ফি দিতে হয়। পাঁচ লাখ টাকা করে বিপিসিতে বছরে দিতে হয়। আবার এখন বিইআরসি চিঠি দিয়ে বলছে তারা দাম ঠিক করতে চায়। যেহেতু দুই পক্ষই আমাদের কাছ থেকে অর্থ নিচ্ছে। তাই আমরা ঠিক জানি না কে রেগুলেটর, বিইআরসি না বিপিসি?। 

তিনি বলেন, দাম নির্ধারণ করতে গিয়ে বিইআরসি যে কমিটি করেছে, সেখানে কোনো ব্যবসায়ী প্রতিনিধি রাখা হয়নি। তাহলে আমাদের আর প্রয়োজন কী? তারাই দাম ঠিক করে দিয়ে দেন।

তিনি জানান, বিইআরসি বছরে একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৫৬ লাখ টাকা বিভিন্ন ধরনের ফি নিচ্ছে। তাদের কাছে আমরা এসব ফি কমাতে বলেছি। কিন্তু তারা এখনও কমায়নি। তিনি বলেন, এভাবে এগুলো কার্যকর করা সম্ভব না।

সাংবাদিক মোল্লাহ আমজাদ বলেন, এলপিজির জন্য উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের বাসিন্দাদের ভর্তুকির ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি বলেন, বিপিসি ৬৫০ টাকায় এলপিজির দাম ঠিক করে রেখেছে। কিন্তু এই এলপিজি পায় কারা। এটি সময়ের সেরা জোকস বলে উল্লেখ করেন তিনি। 

মোল্লাহ আমজাদ বলেন, ব্যবসায়ীদের প্রতিপক্ষ মনে করলে ভোক্তারা সুবিধা পাবে না।

ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা শামসুল আলম বলেন, আইন অনুযায়ী লাইসেন্সধারীরা আবেদন না করলে বিইআরসি মূল্য নির্ধারণ করতে পারে না। কিন্তু কেউ আবেদন না করলে বিইআরসি তাহলে  কীভাবে দাম নির্ধারণ করছে। এ সময় বিইআরসির চেয়ারম্যান বলেন,  কেউ না চাইলে আমরা দাম পরিবর্তন করতে পারি না। কিন্তু এখন আমরা দাম নির্ধারণ করছি।

ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, বিইআরসির প্রবিধানমালা প্রস্তুতই হয়নি। তিনি বলেন, বিষয়টি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। যেহেতু এলপিজির দাম বৃদ্ধির প্রবিধানমালাই নেই সেজন্য কোনোভাবে এই আলোচনাই হতে পারে না।

আলোচনা সভায় বিআইরসি চেয়ারম্যান ছাড়াও সদস্য মকবুল ই ইলাহী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক বদরুল ইমামসহ এলপিজি প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।

হাসান/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়