ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে জমা দেওয়া যাবে ট্রেজারি চালানের অর্থ

বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৫৯, ৮ অক্টোবর ২০২০  
স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে জমা দেওয়া যাবে ট্রেজারি চালানের অর্থ

এখন থেকে যেকোনো ট্রেজারি চালানের অর্থ ‘স্বয়ংক্রিয় চালান পদ্ধতি’র মাধ্যমে জমা দেওয়া যাবে। ফলে গ্রাহক হয়রানি কমবে। এর পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়বে এবং এক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

অর্থ বিভাগের ‘স্ট্রেনদেনিং পাবলিক ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম টু এনাবল সার্ভিস ডেলিভারি’ (এসপিএফএমএস) প্রোগ্রামের অধীন ‘ইমপ্রুভমেন্ট অব পাবলিক ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস ডেলিভারি থ্রু ইমপ্লিমেন্টেশন অব বিএসসিএস ইবাস++স্কিম’ এর আওতায় উদ্ভাবিত ‘স্বয়ংক্রিয় চালান পদ্ধতি’ চালু করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৮অক্টোবর) সকালে জুম প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ‘স্বয়ংক্রিয় চালান পদ্ধতি’র উদ্বোধন করেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম এবং অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল, হিসাব মহানিয়ন্ত্রক মো. জহুরুল ইসলাম, এনবিআর সদস্য মো. আলমগীর হোসেন, এসপিএফএমএস প্রোগ্রামের জাতীয় কর্মসূচি পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব (বাজেট-১) মো. হাবিবুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

স্বয়ংক্রিয় চালান পদ্ধতি সারা দেশে তিন পর্যায়ে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রথম পর্যায়ে ঢাকা মহানগরীর সোনালী, রূপালী, অগ্রণী ও জনতা ব্যাংকের সব শাখায়, দ্বিতীয় পর্যায়ে ঢাকা মহানগরীর অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংকের সব শাখায় এবং তৃতীয় পর্যায়ে সারা দেশে সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের সব শাখায় বাস্তবায়ন করা হবে।

ঢাকা কর অঞ্চল-৪ এর আওতায় ব্যক্তি ও কোম্পানির আয়কর জমা দেওয়ার মাধ‌্যমে ঢাকা মহানগরীতে শুরু হলো ‘স্বয়ংক্রিয় চালান পদ্ধতি’ বাস্তবায়নের কার্যক্রম। অচিরেই এই সিস্টেমের মাধ্যমে ভ্যাট, জমি রেজিস্ট্রেশন ও গাড়ি রেজিস্টেশন ফি-সহ সরকারি ১৯৬ ধরনের রাজস্ব ও ফি জমা নেওয়া হবে।

ট্রেজারি চালানের অর্থ জমা দেওয়ার প্রচলিত পদ্ধতি সহজ করা, গ্রাহক ভোগান্তি কমানো, ভুয়া চালান জমা ও রাজস্ব ফাঁকির প্রবণতা রোধসহ সঠিক সময়ে চালানের অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা নিশ্চিত করার জন্য স্বয়ংক্রিয় চালান পদ্ধতি উন্নয়ন করা হয়েছে। স্বয়ংক্রিয় চালান পদ্ধতির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের যেকোনো শাখায় ট্রেজারি চালানের অর্থ জমা দেওয়া যাবে। বর্তমানে শুধু বাংলাদেশ ব্যাংকের ৯টি শাখায় এবং সোনালী ব্যাংকের ১ হাজার ২২৪টি শাখায় ট্রেজারি চালানের অর্থ জমা নেওয়া হচ্ছে।

এছাড়া, স্বয়ংক্রিয় চালান পদ্ধতিতে ব্যাংক শাখার কাউন্টারে নগদ, চেক ও অ্যাকাউন্ট ডেবিটের মাধ্যমে অর্থ জমাসহ গ্রাহক অনলাইন ব্যাংকিং ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সিস্টেমের মাধ্যমেও চালানের অর্থ জমা দেওয়া যাবে। নগদ, অনলাইন ব্যাংকিং বা এমএফএসের মাধ্যমে অর্থ জমা দেওয়া হলে গ্রাহককে তাৎক্ষণিকভাবে চালানের কপি দেওয়া হবে। চেকের ক্ষেত্রে গ্রাহক চেক জমা স্লিপ পাবেন এবং পরবর্তীতে চেক ক্লিয়ার হলে গ্রাহককে পূর্বনির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী চালান দেওয়া হবে। চেক গ্রহণ এবং চালান ইস্যুর প্রতিটি স্তরেই গ্রাহক তার মোবাইলে টেক্সট ম্যাসেজ পাবেন। অনলাইন ব্যাংকিং ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সিস্টেমের মাধ্যমে অর্থ জমা দেওয়া হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের আরটিজিএসের মাধ্যমে চালানের অর্থ তাৎক্ষণিকভাবে সরকারি কোষাগারে জমা হবে। নগদ, অ্যাকাউন্ট ডেবিটের মাধ্যমে অর্থ জমা দেওয়া হলে দিনে ট্রেজারি চালানের অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা হবে। চেকের ক্ষেত্রে চেক ক্লিয়ারিং হওয়ার দিনে চালানের অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা হবে।

‘স্বয়ংক্রিয় চালান পদ্ধতি’ পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন হলে সরকারের রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী অগ্রগতি হবে। রাজস্ব জমার ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। ‘স্বয়ংক্রিয় চালান পদ্ধতি’র মাধ্যমে প্রতিটি চালানের ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাংক, হিসাবরক্ষণ অফিস ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান যেমন: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মধ্যে সমন্বয় সাধনের ফলে সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়বে। রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ের প্রদত্ত হিসাবের মধ্যকার পার্থক্য দূর হবে। সরকারি প্রাপ্তি সম্পর্কিত হালনাগাদ তথ্য সরকারের আর্থিক অবস্থান ও ঋণ ব্যবস্থাপনা কৌশল নির্ধারণে ভূমিকা রাখবে।

ঢাকা/হাসনাত/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়