ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘পেট চালাতে পারলেই হলো’

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:১৬, ১৬ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ১৭:৩১, ১৬ অক্টোবর ২০২০
‘পেট চালাতে পারলেই হলো’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হলে বাবুর্চি হিসেবে কাজ করতেন মো. ফারুক। গত মাসের শেষ দিকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তার কাজও বন্ধ হয়ে যায়। জীবন-জীবিকার তাগিদে বর্তমানে তিনি ফেরি করে পণ্য বিক্রি করেন। দিন শেষে যা আয় হয় তা দিয়ে পরিবারের সদস্যদের জন্য খাবার কেনেন। 

কিন্তু বাজারের ‘গরম হাওয়ায়’ কোনোভাবেই যেন আর পেরে উঠছেন না তিনি। হতাশা হয়ে ফারুক বলেন, ‘কোনো সবজি ৭০-৮০ টাকার নিচে নেই। এতদিন আলু-ডাল এসব দিয়ে কোনোরকম পরিবার চালিয়েছি। এখন সেটিও নাগালের বাইরে চলে গেছে। দুই সন্তান, স্ত্রী, বাসা ভাড়া সবকিছু মিলিয়ে কিভাবে যে দিন পার করছি, বলে বোঝাতে পারবো না। ভ্যানে গিয়ে দেখি কোনটির দাম সবচেয়ে কম আছে। কোনোরকম পেট চালাতেই পারলেই হলো।’

শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর আনন্দ বাজার ও পলাশী বাজার ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ সবজির কেজি ৭০ টাকার ওপরে।  আবার কিছু কিছু সবজি একশর ঘর পেরিয়েছে।  বাজারে টমেটোর কেজি ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, গাজর ৮০ থেকে ১০০ টাকা, শিমের কেজি ১৪০ টাকা, শসার কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকা, বরবটি-বেগুনের কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা।  কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, লাউ, লতি, পটল, ঢেঁড়স, ঝিঙা, কাঁকরোলের কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা। ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা।  মূলা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।

একটি দোকানে কাজ করে সংসার চালান তারিকুল ইসলাম। দৈনিক আয় ৩০০ টাকা দিয়ে তাকে পাঁচ সদস্যের পরিবার চালাতে হয়। কিন্তু বাজার করতে গিয়ে সবজির দামে অনেকটাই ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়’ দশা তারিকুলের।

হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী মুসা মিয়া জানান, শুধু সবজির বাজার নয়, অন্য কাঁচামালের দামও লাগামহীন। এখনই বিষয়টি নিয়ে সরকারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

ভ্যানে করে সবজি বিক্রি করেন ইসমাইল হোসেন। তিনি জানান, পাইকারিতে বেশিরভাগ সবজি কিনে নিয়েছি ৬০ টাকার ওপরে। সেগুলো পাঁচ-দশ টাকা লাভে বিক্রি করছি। কেনা বেশি বলে বিক্রিও বেশি দামে করতে হয়। 

খুচরা বিক্রেতা জওহর জানান, আমাদের কি করার আছে। আমরা সীমিত আয়ের মানুষ। কিনছি বেশি দাম দিয়ে, তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে। আগে যারা এক কেজি জিনিস কিনতো তারা এখন ভেবেচিন্তে বাজার করে।

পাইকারিতে সবজি বিক্রি করেন হামিদ মুন্সি। তিনি জানান, চাহিদার তুলনায় বাজারে সবজির সরবরাহ অনেক কম। মূলত বন্যার প্রভাব পড়েছে। টানা বৃষ্টিতে প্রচুর সবজি নষ্ট হয়েছে। এ কারণে সবজির দাম বাড়ছে।

ইয়ামিন/জেডআর

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়