ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

কর্মপরিকল্পনাসহ ওটিসির ২১ কোম্পানির পর্ষদকে বিএসইসিতে তলব

নুরুজ্জামান তানিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:২৩, ২০ ডিসেম্বর ২০২০   আপডেট: ০০:৪১, ২১ ডিসেম্বর ২০২০
কর্মপরিকল্পনাসহ ওটিসির ২১ কোম্পানির পর্ষদকে বিএসইসিতে তলব

ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি প্ল্যাটফর্ম) মার্কেটে তালিকাভুক্ত ২১টি কোম্পানিকে তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নে উপযুক্ত কর্মপরিকল্পনা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। একই সঙ্গে আর্থিক অবস্থার তথ্য অনুসন্ধানের লক্ষ্যে আরও ১১টি বিষয়ে তথ্য চেয়ে কোম্পানিগুলোর পরিচালনা পর্ষদ, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) ও কোম্পানি সচিবকে শুনানির জন্য তলব করেছে এ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

রোববার (২০ ডিসেম্বর) ওটিসির ২১টি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদসহ ব্যবস্থাপনা পরিচালককে এ সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।

ওটিসির কোম্পানিগুলো হলো—বিডি মনোস্পুল পেপার, পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, তমিজ উদ্দিন টেক্সটাইল মিলস, মুন্নু ফেব্রিক্স, আজাদী প্রিন্টার্স, বাংলাদেশ হোটেলস, রহমান কেমিক্যালস, ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়েজ, অ্যাপেক্স ওয়েভিং অ্যান্ড ফিনিশিং মিলস, ইউসুফ ফ্লাওয়ার মিলস, গাছিহাটা অ্যাকুয়াকালচার ফার্ম, হিমাদ্রি, যশোর সিমেন্ট কোম্পানি, ম্যাক এন্টারপ্রাইজ, ম্যাক পেপার ইন্ডাস্ট্রিজ, মোনা ফুড প্রোডাক্টস, পদ্মা প্রিন্টার্স অ্যান্ড কালার, ফিনিক্স লেদার কমপ্লেক্স, দি ইঞ্জিনিয়ার্স, বেঙ্গল বিস্কুট ও হিল প্ল্যান্টেশন।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ২০০৯ সাল থেকে কোম্পানিগুলো উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের ওটিসি প্ল্যাটফর্মে তাকিাভুক্ত আছে। স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত থাকা সত্ত্বেও কোম্পানিগুলো সিকিউরিটিজ আইন যথাযথভাবে পরিপালন করছে না এবং প্রতিনিয়তই আইন লঙ্ঘন করছে। এ দীর্ঘ সময়ের মধ্যে কোম্পানিগুলোর আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে না পারছেন না পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা।

এছাড়া, ওটিসির কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগ করে দীর্ঘদিন ধরে কোনো মুনাফা পাচ্ছেন না বিনিয়োগকারীরা। কখনও কখনও এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারীরা সর্বস্ব খুইয়েছেন। ফলে এ পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের জন্য স্বার্থহানিকর ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বিএসইসির কাছে অগ্রহণযোগ্য।

তাই সিকিউরিটিজ অ্যান্ড অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর ধারা ১১(২) অনুযায়ী কোম্পানিগুলোকে পরিচালনা পর্ষদ, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) ও কোম্পানি সচিবকে বিভিন্ন দিনে শুনানির জন্য বিএসইসিতে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, কোম্পানিগুলোর কাছে যে ১১টি বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে সেগুলো হলো—সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন ও অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, বর্তমান আর্থিক অবস্থার প্রতিবেদন, সকল সম্পত্তির বর্তমান অবস্থা, উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের বর্তমান শেয়ার ধারণের অবস্থা, প্রসপেক্টাস, প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও), পুনঃপ্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আরপিও) ও রাইট ইস্যুর তথ্যের (আরওডি) কপি, কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধ থাকার কারণ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, আইপিওর মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থের ব্যবহার ও অব্যবহৃত অর্থের তথ্য, ব্যাংকের কাছে বর্তমান দায়বদ্ধতা ও ঋণের তথ্য, ইনভেন্টরির তথ্য, ট্যাক্স ও ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের তথ্য এবং কোম্পানি সংক্রান্ত আরও প্রয়োজনীয় তথ্য।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ওটিসির অধিকাংশ কোম্পানির অস্তিত্ব নেই। এসব কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারীদের লাখ লাখ টাকা আটকে আছে। ফলে সার্বিকভাবে বিনিয়োগকারীরা ভোগান্তিতে আছেন।

এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ আবু আহমেদ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ওটিসি মার্কেট পুনর্গঠন করা জরুরি। তবে ওটিসি থেকে যেসব কোম্পানিকে বাদ দেওয়া হবে, তাদের বাদ দেওয়ার আগে অবসায়নের ব্যবস্থা করা উচিত। এটা করা হলে শেয়ারহোল্ডাররা কিছুটাও হলেও উপকৃত হবেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ওটিসির কোম্পানিগুলোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পর্যাক্রমে তাদেরকে বিএসইসিতে শুনানির জন্য তলব করা হবে।’

এর আগে গত মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) কাছে ওটিসি মার্কেটে তালিকাভুক্ত ২১ কোম্পানির ওপর বিশেষ নিরীক্ষা করার নির্দেশনা দিয়েছে বিএসইসি। একই সঙ্গে ওটিসির আরও ৪৩ কোম্পানির বিষয়ে সার্বিক প্রতিবেদন তৈরিরও নির্দেশ দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে ডিএসইর ওটিসিতে ৬৪টি ও সিএসইর ওটিসিতে ৪৯টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত আছে।

ঢাকা/এনটি/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়