ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

বেড়েছে চাল-তেল-চিনি-পেঁয়াজের দাম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩৬, ৩০ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ১৬:৫৫, ৩০ এপ্রিল ২০২১
বেড়েছে চাল-তেল-চিনি-পেঁয়াজের দাম

ছবি: মেসবাহ য়াযাদ

রোজা আর লকডাউন। পরিবহন ঠিকমতো পান না। এই অজুহাতে বাজারে চাল-তেল-চিনি-পেঁয়াজ-মুরগিসহ বেড়েছে সব ধররের ফলের দাম। হাতে গোনা ৪-৫টি পণ্য পাওয়া গেলেও বাধ্য হয়ে নিম্ন আয়ের মানুষের পাশাপাশি নিম্ন মধ্যবিত্ত-মধ্যবিত্তরা ভিড় করছেন টিসিবি-এর ট্রাকের সামনে। 

শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর হাতিরপুল, নিউমার্কেট, কারওয়ান বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, লম্বা সময় ধরে টিসিবির ট্রাকের সামনে মানুষকে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে প্রয়োজনীয়র পণ্য সংগ্রহ করছে।

টিসিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মনির হোসেন বলেন, ‘রাজধানী ছাড়াও সারা দেশে প্রায় ৫০০ এলাকায় টিসিবির পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা রয়েছে।  বর্তমানে টিসিবির খোলা ট্রাক থেকে বিক্রি করা পণ্যের মূল্য বাজারের চেয়ে কম।  চিনি কেজি ৫৫ টাকা, মশুর ডাল কেজি ৫৫ টাকা, সয়াবিন তেল লিটার ১০০টাকা, পেঁয়াজ কেজি ২০টাকা, ছোলা কেজি ৫৫টাকা এবং খেজুর কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’

লকডাউনের সময়ও নিত্যপণ্যের সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও দাম কমছে না।  বেশকিছু পণ্যের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে। বিভিন্ন বাজারে মানভেদে সব ধরনের চাল, সয়াবিন তেল, পিঁয়াজ, চিনি, খেজুর, লেবু, কলা, তরমুজ, মালটাসহ সব পণ্যেরে দাম বেশি দেখা গেছে।

কারওয়ান বাজারে নাজিরশাইল ৭০-৭২ টাকায়, মিনিকেট ৬০-৬৫ টাকায়, পাইজাম ৪৬- ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫২ টাকা পর্যন্ত।

খোলা সয়াবিন তেল লিটার ১১৫-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৩৫-১৪০ টাকা, ২ লিটার ২৬৫-২৭০, ৫ লিটারে আজ বিক্রি হচ্ছে ৬৪০- ৬৬০ টাকায়। প্রতি কেজি মশুর ডাল (দেশি) ১০০ টাকা আর ভারতীয় ডাল বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকা।

নিউমার্কেটে ক্রেতা ও পাইকারি এবং খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোজার প্রথম দিকে সব পণ্যের দাম একদফা বেড়েছে। তার ওপর লকডানের অজুহাত হয়েছে ব্যবসায়ীদের জন্য সোনায় সোহাগা।  লকডাউনে পণ্য পরিবহনে খরচ বেশি বলে ব্যবসায়ীরাও দাম বাড়িয়ে যার কাছে যেভাবে পারছেন, দাম নিচ্ছেন।

আজ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, আলু ২০, রসুন ১২০, আদা ১২০-১৪০ টাকা।  সবজির বাজার মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে। টমেটু ৪০ টাকা, পটল ৫০, লম্বা বেগুণ ৬০, করলা ৮০, উস্তা ৬০, ঢেড়স ৫০ এবং শসাও ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ঢাকার নিউমার্কেট, হাতিরপুল, কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঈদ ঘনিয়ে আসার কারণে ক্রেতারা একবারে ঈদের বাজার সেরে নিচ্ছেন। বেশি পরিমাণ পণ্য কেনার কারণে, বাজারে পণ্যের চাহিদা বেড়েছে।  আর সাময়িক অতিরিক্ত এই চাহিদার কারণে পাইকারি বাজার থেকে প্রচুর পরিমাণে পণ্য কিনে মজুত করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। ফলে সুযোগ বুঝে পাইকারি ব্যবসায়ীরাও পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।

ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়, সাদা চিনি দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৮-৭০ টাকায়। লাল চিরি দাম ৭৮-৮৫ টাকা। সব রকমের মশলার দাম আগের মতোই আছে।

মাছের দাম কিছুটা কমলেও গরুর মাংশের দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ৫৮০ টাকায় বিক্রি বিক্রি হওয়া গরুর মাংশ আজ ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  অন্যদিকে খাশির মাংশ কেজিতে অন্তত ৩০ টাকা কমেছে। ৯০০ টাকা কেজির খাশির মাংশ আজ বিক্রি হচ্ছে ৮৭০ টাকায়। 

পাবদা মাছ ৩৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০, পাঙাস ১২০, রুই (আকারভেদে) ১৫০ থেকে ২৫০, কাতল ২৬০, চিংড়ি (বড়) ৭০০, মাঝারি ৫৫০-৬০০, ছোট ৪০০-৪৫০ টাকায় কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এক ধরনের নদীর ছোট সাদা চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৭০০-৮০০ টাকায়। এছাড়াও টেংরা ৪০০ টাকা, মলা ৩৫০-৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

হাতে ভাড়া মুড়ি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজিতে।  খেজুরের দাম বেড়েছে।  সর্বনিম্ন ১০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি।  সব ফলের দাম বেড়েছে। আনারস আকারভেদে প্রতিটি ৩০ থেকে ৫০ টাকা, বাঙ্গী প্রতিটি ৫০ থেকে ২৫০ টাকা।  তরমুজ যথারীতি কেজি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে আজও।  আকারভেদে ৫০ থেকে ৬৫ টাকা।  মালটা ১৬০, আপেল ১৮০, বেল (পিস) ১০০ থেকে ২৫০, পেয়ারা কেজি ১২০ এবং পেঁপের কেজি ১৪০ টাকা। কলার হালি প্রকারভেদে ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

লকডাউন ও রোজা এই দুই কারণে বাজারে পণ্যের দাম ইচ্ছেমতো ব্যবসায়ীরা বাড়াচ্ছেন বলে মনে করেন বাজার বিশ্লেষকরা। 

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আলী আকবর ভুঁইয়া বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে সব পণ্য মজুত আছে। তারপরও ব্যবসায়ীরা বেশি দামে পণ্য বিক্রি করছেন।  এটা অনৈতিক। ক্রেতারাও লকডাউন বা রোজার কারণে বেশি পরিমাণে পণ্য কিনছেন। যার সুযোগে ব্যবসায়ীরা প্রায় সব পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে।

মেসবাহ/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়