ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ক্ষতিগ্রস্ত আবাসন খাতে কালো টাকা বিনিয়োগ দাবি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪৫, ৫ মে ২০২১  
ক্ষতিগ্রস্ত আবাসন খাতে কালো টাকা বিনিয়োগ দাবি

ফাইল ছবি

করোনায় দেশের আবাসন শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)।  এজন্য খাত সংশ্লিষ্ট বিষয়কে গুরুত্ব বিবেচনায় নতুন অর্থবছরে (২০২১-২২) অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা বিনিয়োগের সুবিধা বহাল রাখতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে রিহ্যাব নেতারা।  এজন্য অর্থমন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

রিহ্যাব নেতারা জানিয়েছেন, গত বছর করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসার পর রেডি ফ্লাটের সংকট দেখা দিয়েছিল। কারণ ক্রেতাদের বিনিয়োগে সরকার সুযোগ দিয়েছিল। এখন অর্থবছর শেষে আবার করোনার প্রভাবে এবং বিনিয়োগ নিরাপত্তার প্রশ্নে ফ্লাট কেনাবেচায় মন্দাভাব দেখা দিয়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ থাকলে করোনার মধ্যেও তাদের ব্যবসায় গতি আসেব।  বিক্রি বাড়বে। ফলে খাত সংশ্লিষ্ট ৫০ লাখ ও লিংকেজ বা সংযোগ শিল্পের আড়াই কোটি লোকের রুজি রুটির ব্যবস্থা হবে।

সার্বিক বিষয়ে রিহ্যাবের সহ-সভাপতি কামাল মাহমুদ রাইজিংবিডিকে বলেন, নতুন অর্থবছরে অপ্রদর্শিত টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দিলে লকডাউন থাকলেও ব্যবসার সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবো।  চলতি অর্থবছরে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ থাকায় গ্রহকদের মধ্যে রেডি ফ্লাট কিনতে উৎসাহ সৃষ্টি হয়েছিল।  অনেকে ফ্লাট বুকিং দিয়েছিল।  করোনা আসার পরে গ্রাহকের কিস্তির ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা তৈরি হচ্ছে।  আর সরকারি সংস্থাগুলোর বিভিন্ন ধরনের তদন্তের কারণে নতুন ফ্লাট ক্রয়ে গ্রহকের মধ্যে একটা আতঙ্ক কাজ করছে।  এমন পরিস্থিতি থাকলে কেনাবেচায় সমস্যা তৈরি করে।  বর্তমানে আমাদের ফ্লাট বিক্রি বন্ধ রয়েছে। 

গ্রাহকদের কিস্তির বিষয়ে তিনি বলেন, কিস্তি পরিশোধে আমারা কোন ছাড় দিতে পারি না। কারণ জমির মালিকের সঙ্গে আমাদের একটা চুক্তি থাকে- নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তার প্রকল্পের কাজ শেষ করবো। এরপর ক্রেতাকে যেসব সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় তার ভিত্তিতে চুক্তি হয়। ক্রেতা, ডেভেলপার ও জমির মালিকের মধ্যে সমন্বয় থাকতে হবে। যেহেতু সব বিষয়ে আগেই চুক্তি করা থাকে সেক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার কিছু থাকে না। প্রকল্পে যে বিনিয়োগ সেক্ষেত্রে ব্যাংকের সুদের বিষয় রয়েছে। তাতো আমাদের পরিশোধ করতে হবে। ব্যাংক আমাদের কোনো ছাড় দিচ্ছে না। শিল্প হিসেবেও সরকারি ব্যাংকের পক্ষ থেকে কোন সুবিধা পাচ্ছি না। এছাড়া কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিতে হচ্ছে।

খাতের ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে রিহ্যাব সহ-সভাপতি বলেন, আবাসন খাতের ক্ষতির পরিমাপ করা কঠিন। বিশাল খাত।  শুধু এতটুকু বলতে পারি, বিক্রি থাকলে বলি খাত চাঙা আছে। আর বিক্রি না থাকলে বলি মন্দাভাব।  এখন আবসান শিল্প মন্দা অবস্থায় রয়েছে। নতুন অর্থবছরে অপ্রদর্শিত টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দিলে লকডাউন থাকলেও আমরা ব্যবসার সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবো। 

আবাসন শিল্প সুরক্ষায় সরকারের কাছে প্রস্তাব সম্পর্কে রিহ্যাবের এই নেতা বলেন, আবাসন খাতে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সিঙ্গেল ডিজিট সুদে দীর্ঘমেয়াদী রি-ফাইন্যান্সিং চালু এবং ২০ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের জন্য আমরা সরকারের নিকট প্রস্তাব দিয়েছি।  এছাড়া আর কয়েটি প্রস্তাব রয়েছে।

প্রস্তাবের মধ্যে-ফ্ল্যাট ও প্লট রেজিষ্ট্রেশন সংশ্লিষ্ট কর ও ফি সর্বমোট ৭ শতাংশ নির্ধারণ করা; বিনা প্রশ্নে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুবিধা বহাল রাখা; আবাসন শিল্প রক্ষার্থে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিদ্যমান মূল্য সংযোজন কর হ্রাসসহ নতুনভাবে মূল্য সংযোজন কর আরোপ না করা; গৃহায়ণ শিল্পের উদ্যোক্তাদের আয়কর হ্রাসকরণ সংক্রান্ত প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

শিশির/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়