ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি হচ্ছে

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:২৫, ২২ জুন ২০২১  
৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি হচ্ছে

ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে প্যাকেজ- ১৫ এর আওতায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। 

প্রতি মেট্রিক টনের দাম ৩৯৯.৯০ মার্কিন ডলার হিসেবে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানি করতে বাংলাদেশি টাকায় ১৬৯ কোটি ৫৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা ব্যয় হবে। সে হিসেবে প্রতি কেজি চালের দাম পড়বে ৩৩.৯১ টাকা।

খাদ্য অধিদপ্তরের গত ১৭/০৬/২০২১ তারিখের দৈনিক প্রতিবেদন অনুসারে মজুদের পরিমাণ চাল ৯.৩৯ লাখ মেট্রিক টন ও গম ৩.০৬ লাখ মেট্রিক টন অর্থাৎ সর্বমোট ১২.৪৫ লাখ মেট্রিক টন। সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখাসহ নিরাপত্তা মজুত সুসংহত রাখার স্বার্থে প্রস্তাবিত পরিমাণ চাল ক্রয় করা অত্যাবশক বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, চলতি ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ধান ও চাল সংগ্রহের অভ্যন্তরীণ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় খাদ্যশস্যের নিরাপত্তা মজুত সুসংহত করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতি ও জি টু জি পদ্ধতিতে চাল আমদানি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ১১.৫০ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির চুক্তি হয়েছে এবং ৬.২৫ লাখ মেট্রিক টন চাল পাওয়া গেছে।

সূত্র জানায়, গত ০৩ মার্চ, ২০২১ তারিখে ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা ২০০৮ এর বিধি ৮৩ এর উপবিধি (১) এর দফা (ক) অনুযায়ী ৫.৫০ লাখ মেট্রি টন চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। তারমধ্যে ২.৫০ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় খাদ্য অধিদপ্তর গত ৩ জুন আরও ৫০ হাজার মেট্রি টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল কিনতে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করে। দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দুটি বাংলা ও দুটি ইংরেজি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এছাড়াও দরপত্র বিজ্ঞপ্তি সিপিটিইউ, খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং খাদ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মোট ৯টি দরপত্র বিক্রি হলেও জমা পড়ে ৫টি দরপত্র। দাখিল করা দরপত্রে ভারতের রায়পুর ভিত্তিক মেসার্স বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড প্রতি মেট্রিক টনের দাম ৩৯৯.৯০ মার্কিন ডলার দর উল্লেখ করে সর্বনিম্ন দরদাতা নির্বাচিত হয়। অন্য চারটি দরদাতার মধ্যে ভারতের কলকাতা ভিত্তিক মেসার্স সৌবিক এক্সপোর্টস লিমিটেড প্রতি মেট্রিক টনের দাম ৪০৩.০০ মার্কিন ডলার উল্লেখ করে ২য়, মেসার্স ইটিসি অ্যাগ্রো প্রসেসিং(ইন্ডিয়া) ৪০৫.০০ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩য়, মেসার্স কেআরবিএল লিমিটেড ৪১৯.০০ মার্কিন ডলার উল্লেখ করে ৪র্থ এবং মেসার্স হেমরাজ ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেড প্রতি মেট্রিক টনের দাম ৪২৭.২৮ মার্কিন ডলার উল্লেখ করে ৫ম স্থান অধিকার করে। দরপত্রে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে ৬০:৪০ হারে এ চাল সরবরাহ করার শর্ত দেওয়া হয়েছে। 

উল্লেখ্য, বিদেশ থেকে সরকারিভাবে খাদ্যশস্য আমদানির ক্ষেত্রে পণ্যবাহী জাহাজ বন্দরে আগমনের পর পণ্য খালাসের আগেই দরদাতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, খাদ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধি এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে পর্যায়ক্রমে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সংগৃহীত নমুনা প্রথমে খাদ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম ও খুলনাস্থ পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হয় এবং পরে সংগৃহীত নমুনা কম্পোজিট করে এক প্যাকেট পরীক্ষার জন্য খাদ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়। খাদ্য অধিদপ্তরের পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করে গুণগত মান নিশ্চিত করা হয়। দরপত্রে উল্লেখিত বিনির্দেশের কোনো প্যারামিটারের সঙ্গে পণ্যের প্রাপ্ত গুণগত মান নিম্নমানের হলে পুরো চাল প্রত্যাখান করার বিধান রয়েছে।

সূত্র জানায়, দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে দরপত্রে অংশগ্রহণকারী ৫টি প্রতিষ্ঠানকে গ্রহণযোগ্য দরদাতা ঘোষণা করে। দাখিলকৃত দরপত্রগুলো মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা মেসার্স বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড এর উদ্ধৃত দর প্রতি মেট্রিক টন ৩৯৯.৯০ মার্কিন ডলার যা ভারতের পশ্চিম উপকূল, পূর্ব উপকূল, থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারের চালের প্রাক্কলিত দরের চেয়ে যথাক্রমে ১২.৪৭, ৭.৯৮, ৯৪.৮১ ও ১৭১.৯৫ মার্কিন ডলার কম হওয়ায় তা গ্রহণ করার জন্য সুপারিশ করে।

সূত্র জানায়, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির উক্ত সুপারিশের সাথে একমত পোষণ করে তা অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় উপস্থাপন করার জন্য পাঠিয়েছেন। বুধবার (২৩ জুন) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকা/সনি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়