ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

রিং সাইন কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:০০, ২৬ জুন ২০২১  
রিং সাইন কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

শেয়ারবাজারে বস্ত্র খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি রিং সাইন টেক্সটাইল কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে অর্থপাচার ও সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সম্প্রতি বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, রিং সাইন নিয়ে বিএসইসির করা তদন্তে বেরিয়ে এসেছে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ছিল ৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। উদ্যোক্তা বা পরিচালক ও ৭৩ জন সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের কাছে ২৭৫ কোটি ১০ লাখ টাকার প্লেসমেন্ট শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে এই পরিশোধিত মূলধন ২৮৫ কোটি পাঁচ লাখ টাকা করা হয়েছে। তবে ১১ জন উদ্যোক্তা বা পরিচালক এবং ৩৩ জন সাধারণ শেয়ারহোল্ডার এই শেয়ারের বিপরীতে কোনো টাকা পরিশোধ করেননি। এছাড়া ২০১৭ সালের ৩০ জুন থেকে ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রকাশিত নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে কোম্পানির প্রকৃত আর্থিক চিত্র উঠে আসেনি। যার ফলে কমিশন অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সিকিউরিটিজ আইন ও মানি লন্ডারিং (অর্থপাচার) আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তথ্য মতে, ২০১৮ সালের ১২ মার্চ পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন রিং সাইনকে আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে টাকা তোলার অনুমোদন দেয়। নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পেয়ে প্রতিষ্ঠানটি যন্ত্রপাতি ও কলকব্জা ক্রয়, ঋণ পরিশোধ এবং আইপিও খরচ খাতে ব্যয় করতে শেয়ারবাজারে ১৫ কোটি সাধারণ শেয়ার ছেড়ে ১৫০ কোটি টাকা উত্তোলন করে।

আইপিওর কিছু দিনের মধ্যেই কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দেশ ছেড়ে যাওয়ার গুজবের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাব সাময়িকভাবে জব্দ করা হয়। বিএসইসির অনুরোধে বাংলাদেশ ব্যাংক এই ব্যবস্থা নিয়েছিল।

এর পাশাপাশি বন্ধ হয়ে যাওয়া উৎপাদন পুনরায় শুরুর মাধ্যমে ব্যবসার উন্নয়নে কোম্পানিটির পর্ষদ ভেঙে সাত স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেয় বিএসইসি। কোম্পানিটির অনিয়ম অনুসন্ধানে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এছাড়া, রিং সাইনের কেলেঙ্কারি তদন্তে ৬১টি বিও হিসাবের তথ্য তলব করে বিএসইসি।

এ পরিস্থিতিতে গত ২০ মে কমিশন সভা করে বিএসইসি রিং সাইনের আইপিও’র মাধ্যমে উত্তোলন করা অর্থের ৪০ কোটি টাকা ব্যবহারের অনুমতি দেয়। সে সময় বিএসইসি থেকে জানানো হয়, এই অর্থ থেকে শ্রমিকদের অবসর ভাতা ১৫ কোটি টাকা, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের বকেয়া তিন কোটি টাকা, তিতাস গ্যাসের বকেয়া তিন কোটি ৫০ লাখ টাকা, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ঋণ ১০ কোটি টাকা, ঢাকা ব্যাংকের ঋণ ছয় কোটি টাকা এবং বিবিধ খাতে দুই কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় করা যাবে।

এদিকে, বিএসইসির নতুন কমিশন রিং সাইনের পর্ষদ ভেঙে সাতজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিয়েছে। ওই স্বতন্ত্র পরিচালকরা হলেন, পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত আইজিপি মেজবাহ উদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ল্যাদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্সের অধ্যাপক মোহাম্মদ সগির হোসাইন খন্দকার, জনতা ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফোরোজ আলী, পাওয়ার গ্রিডের স্বতন্ত্র পরিচালক ইসতাক আহমেদ শিমুল এবং অ্যাভিয়েশন ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেসের সাবেক মহাব্যবস্থাপক আব্দুর রাজ্জাক। এর মধ্যে কোম্পানিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত আইজিপি মেজবাহ উদ্দিন।

ঢাকা/এনটি/ইভা 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়