ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

লকডাউন: সুপারশপ-অনলাইনে ঝুঁকছেন ক্রেতারা

নুরুজ্জামান তানিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:২৬, ২ জুলাই ২০২১   আপডেট: ১৯:২৭, ২ জুলাই ২০২১
লকডাউন: সুপারশপ-অনলাইনে ঝুঁকছেন ক্রেতারা

ছবি: রাইজিংবিডি

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) থেকে এক সপ্তাহের জন্য সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে।  

লকডাউনকে কেন্দ্র করে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সাধারণ মানুষকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হতে পারছেন না। তবে করোনার সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে লকডাউনের মধ্যে অনলাইনভিত্তিক কেনাকাটা করতে পারছেন ক্রেতারা। পাশাপাশি সাধারণ বাজারের চেয়ে সুপারশপগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবণতা বেশি। তাই লকডাউনে অনেক ক্রেতাই সুপারশপমুখী হচ্ছেন।

শুক্রবার (২ জুলাই) রাজধানীর বাসাবো, দক্ষিণ বনশ্রী, খিলগাঁও, মালিবাগ, মগবাজারে অবস্থিত স্বপ্ন, আগোরা ও মিনা বাজার সুপার শপ ঘুরে এমন এ চিত্র দেখা গেছে।

এদিকে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। অন্যদিকে, রাজধানীর দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। তাই এই দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে সুপারশপ আগের চেয়ে আগ্রহের জায়গায় পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।

তবে কোনো কোনো সময় ক্রেতাদের চাপে সুপারশপে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সুপারশপ কর্তৃপক্ষ করোনার ঝুঁকি এড়াতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে।  

জানা গেছে, কঠোর লকডাউনের ঘোষণার পর থেকে সুপারশপগুলোতে ক্রেতার সংখ্যা তুলনামূলক কমেছে। তবে এ পরিস্থিতিতে ক্রেতারা টেলিফোনে কিংবা অনলাইনে অর্ডার দিয়ে পণ্য হোম ডেলিভারি নিচ্ছেন। এছাড়া অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এড়াতেও সচেতন শ্রেণির মানুষ এখন সুপার শপের দিকে ছুটছেন।

দক্ষিণ বনশ্রী এলাকার সুপারশপ ডেইলি শপিংয়ের ম্যানেজার মো. আল মামুন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘সাধারণ বাজারে করোনার সময়ে একসঙ্গে সব পণ্য কিনতে পারেন না ক্রেতারা।  তাই এ পরিস্থিতিতে সচেতন শ্রেণিরসহ সাধারণ মানুষের কাছেও আগ্রহের জায়গায় পরিণত হচ্ছে সুপার শপ। লকডাউনের কারণে বাইরে ঘোরাঘুরিতে নিষেধাজ্ঞা থাকায় সুপার শপে অন্যান্য স্বাভাবিক দিনের তুলনায় লোকজনের ভিড় কিছুটা কম। তবে অনলাইনে পণ্য কেনাকাটায় ক্রেতাদের বেশ আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।'

দক্ষিণ বনশ্রী এলাকার বাসিন্দা মীর সাজ্জাদুর রহমান অমি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে বাজারে ভিড়ের মধ্যে গিয়ে ঝুঁকি বাড়ানোর যৌক্তিকতা নেই। তাই অনেকেই সুপার শপমুখী হচ্ছেন।’

এদিকে, মগবাজার ওয়ারলেস অবস্থিত আগোরা সুপার শপের সহকারী আউটলেট ম্যানেজার মোহাম্মদ মোস্তফা রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘লকডাউন ঘোষণার পর থেকে ক্রেতার সংখ্যা কিছুটা কমেছে।  তবে লকডাউন ঘোষণার আগেই ক্রেতারা প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে ক্রেতারা সশরীরে আউটলেট এর না আসলেও অনলাইনে পণ্য অর্ডার করছেন।’

আগোরা সুপার শপের ক্রেতা ওমর ফারুক শুভ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘মাছ, মাংস, কাঁচাবাজার ও মুদি দোকানে সামাজিক দূরত্বকে তোয়াক্কা করেন না ক্রেতারা। গাদাগাদি করে কেনা-কাটায় ব্যস্ত তারা।  সে তুলনায় সুপার শপ অনেকটাই স্বচ্ছন্দে করা যায়। আর সুপার শপগুলোতে অনলাইনে কেনাকাটার সুবিধা রয়েছে। সশরীরে কেনাকাটা প্রয়োজন ছাড়া অন্য সকল কেনাকাটা অনলাইনে আছেন সচেতন শ্রেণির ক্রেতারা।’

মগবাজার ইস্কাটন রোডে অবস্থিত মিনা বাজার সুপার শপের আউটলেট ম্যানেজার মো. বারি রাইজিংবিডিকে বলেন, লকডাউনের কারণে আমরা অনলাইনে অর্ডার বেশি পাচ্ছি। কাস্টমাররা সরাসরি আউটলেটে কমই আসছেন।'

বাসাবো এলাকার স্বপ্ন সুপার শপের কাস্টমার রিলেশনস অফিসার মো. শুভ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘নতুন কাস্টমার তেমন বাড়েনি।  শততম শ্রেণির পুরনো কাস্টমাররা এখনো আউটলেটে এসে কেনাকাটা করছেন। তবে আমরা অনলাইনে সেবা তুলনামূলক কম দিচ্ছে।’

প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ১ জুলাই ভোর ৬টা থেকে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার।  এ সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বেচাকেনা করা যাবে।

/এনটি/এসবি/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়