ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের অসঙ্গতি নিরীক্ষায় এসএফ আহমেদ  

নুরুজ্জামান তানিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৫৫, ১৪ জুলাই ২০২১  
প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের অসঙ্গতি নিরীক্ষায় এসএফ আহমেদ  

শেয়ারবাজারে বিমা খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের আর্থিক প্রতিবেদনে অসঙ্গতি খতিয়ে দেখতে বিশেষ নিরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদন বিশেষ নিরীক্ষার জন্য চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট এসএফ আহমেদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

বিএসইসি ও কোম্পানি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্য মতে, প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের আর্থিক প্রতিবেদনে অসঙ্গতির অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদন বিশেষ নিরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। ২০১৭ থেকে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সমাপ্ত হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদন বিশেষ নিরীক্ষা করা হবে।

এস. এফ. আহমেদ চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টকে আগামী দুই মাসের মধ্যে এ বিশেষ নিরীক্ষার কার্যক্রম শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  এই কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে ৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা ফি দেওয়া হবে।

আর্থিক প্রতিবেদনে অসঙ্গতি খতিয়ে দেখতে প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্সুইরেন্সের প্রকৃত ও ন্যায্য সম্পদ, দায়, আয় এবং নগদ প্রবাহসহ অন্যান্য বিষয়াদি পর্যালোচনা করবে সংশ্লিষ্ট নিরীক্ষক।

এছাড়া প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের উদ্যোক্তা ও শেয়ারহোল্ডার পরিচালকদের গত দশ বছরের লেনদেনের অবস্থা যাচাই করা হবে।

এছাড়াও প্রাইম ইসলামী লাইফের সমস্ত মেয়াদী আমানত, অ্যাকাউন্ট পরিবর্তন, নির্ভরযোগ্যতা এবং গত দশ বছরে জমা দেওয়ার সমস্ত অর্থ পরিশোধের হিসাব পর্যালোচনা করা হবে।

একইসঙ্গে কোম্পানিটির জমি ও জমি উন্নয়নসহ সম্পত্তি এবং সরঞ্জামাদি সম্পর্কিত অন্যান্য খাতে বিনিয়োগও পর্যালোচনা করা হবে।

এদিকে প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ২০২০ সালে ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদনে আপত্তি বা কোয়ালিফায়েড অপিনিয়ন জানিয়েছেন নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান সাইফুল সামসুল আলম অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের ম্যানেজিং পার্টনার মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি আপত্তি হিসেবে জানিয়েছেন, প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে ১৬৭ কোটি ৮০ লাখ টাকার স্বল্পমেয়াদি বিনিয়োগ রয়েছে প্রাইম ফাইন্যান্স ইনভেস্টমেন্ট (পিএফআই) সিকিউরিটিজের। পাশাপাশি পিএফআই সিকিউরিটিজের কাছেও কোম্পানিটির ১৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা বিনিয়োগ বাবদ পাওনা রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই এ টাকা পাওনা রয়েছে প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের। আর পিএফআই সিকিউরিটিজের আর্থিক অবস্থাও দুর্বলতার কারণে ওই টাকা আদায় করা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এ অর্থের বিপরীতে প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোনো ধরনের সঞ্চিতি সংরক্ষণ করেনি। এর মাধ্যমে কোম্পানিটি আর্থিক প্রতিবেদনে ১৮৩ কোটি ১৭ লাখ টাকার সম্পদ ও মুনাফার অতিরঞ্জিত তথ্য দেখিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্সুইরেন্সের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কোম্পানি সচিব এম. নুরুল আলম রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে এখনও কোনো বিএসইসির চিঠি হাতে পাইনি। তবে এ বিষয়ে বিএসইসির সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, এস. এফ. আহমেদ চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টকে বিশেষ নিরীক্ষার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। সে জন্য ওই নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সার্বিক সহযোগিতা করতে জানিয়েছে বিএসইসি।’ 

এদিকে এসএফ আহমেদকে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট এর পরিচালক মোসা. সায়মা রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিশেষ নিরীক্ষার বিষয়ে আমরা এখনও বিএসইসির চিঠি পাইনি। চিঠি হাতে পেলে তারপর বলতে পারব।’ 

ঢাকা/এনটি/এমএম

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়