ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

বাংলাদেশে বিনিয়োগের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি: মাসরুর আরেফিন

উদয় হাকিম, সান ফ্রান্সিসকো থেকে || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:০১, ৩ আগস্ট ২০২১   আপডেট: ২১:২৮, ৩ আগস্ট ২০২১

আমেরিকার চারটি বড় শহরে নিউ ইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসি, লস অ্যাঞ্জেলস ও সান ফ্রান্সিসকোর সিলিকন ভ্যালিতে সাফল্যের সঙ্গে ‘রোড শো’ সম্পন্ন হয়েছে। এসব শহরে বসবাসরত প্রবাসী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানাতেই এ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সপ্তাহব্যাপী চারদিনের এ আয়োজন সফল হওয়ায় বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগের পরিষ্কার ও উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাসরুর আরেফিন।

সান ফ্রান্সিসকোর হায়াত রিজেন্সি হোটেলে চতুর্থ ও শেষ পর্বের রোড শো শেষে রাইজিংবিডির সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতে তিনি এ কথা বলেন।  

রোড শো প্রসঙ্গে মাসরুর আরেফিন বলেন, ‘যেসব ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট অগ্রযাত্রার সেক্টর রয়েছে, আমি কিন্তু এরকম কিছু শীর্ষ নির্বাহীর সঙ্গে কথা বলেছি। এছাড়া কিছু এনআরবি  বাংলাদেশিদের সাথে পরিচয় হলো। তাছাড়া যেভাবে বিডার চেয়ারম্যান, বেপজার চেয়ারম্যান,  সালমান এফ রহমান নিজে মানুষকে ডাকছেন, তাতে এদের ( বিনিয়োগকারীদের) তো আর বাংলাদেশে যেতে কোনো বাধা নেই, ওখানে গিয়ে ইপিজেডে একটা ছোট ইকোনমিক জোনে  জায়গা নিয়ে ব্যবসা শুরু করতেই পারেন। আমি কিন্তু এমন বিনিয়োগের পরিষ্কার সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি এই চার শহরে।’

রোড শো তে বেশ কিছু কোম্পানি এসেছে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে। তার মধ্যে ইবিএল, ওয়ালটন এবং নগদ আছে। এই বিষয়টাকে আপনি কিভাবে দেখছেন? জানতে চাইলে মাসরুর আরেফিন বলেন, ‘এটি দেশের জন্য খুবই জরুরি এবং কর্তব্যের বিষয়। কারণ এরা সবাই বড় কোম্পানি। ইবিএল, নগদ ও ওয়ালটন সব বড় কোম্পানি। বড় কোম্পানি তো শুধু প্রফিট করলে হবে না, দেশের জন্য তো কিছু করতে হবে। যেমন- আমি সিটি ব্যাংকের ম্যানিজিং ডিরেক্টর। সিটি ব্যাংক এর আগে তিনটি বিনিয়োগ সম্মেলন করেছে। সিঙ্গাপুরে দুটো এবং হংকংয়ে একটি। আসলে এগুলো কোম্পানির দায়িত্ববোধ। করপোরেট ও সামাজিক দায়িত্বের জায়গা থেকে দেশের জন্য এটি করা কর্তব্য। আমি খুশি যে তিনটা বড় কোম্পানি আমেরিকারটা এই চার শহরে এই আয়োজনে সামিল হলো।  সামনের আয়োজন সিটি ব্যাংক করতে চাচ্ছে। ইনশাআল্লাহ মালয়েশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়াতে ও এ আয়োজন করা হবে। আমাদের সঙ্গে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কথা হচ্ছে এ বিষয়ে।’

সিটি ব্যাংকের পক্ষ থেকে এনআরবিদের উদ্দেশ্যে মাসরুর আরেফিন বলেন, ‘তাদের জন্য একটাই কথা- বাংলাদেশ থেকে আসা যারা এখানে সম্পদশালী বাংলাদেশি রয়েছেন, তারা এখন ব্যবসার জায়গা খুঁজছেন। তাদেরকে বলব, বাংলাদেশে বিজনেস স্থাপনের মতন সহজ বিষয় এখন আর কোথাও নেই। এখন কিন্তু ওয়ান স্টপ সলিউশনে চালু হলো, যেটা বিডা চালু করল। বাংলাদেশ বিনিয়োগের  আর্কষণীয় জায়গা। এখন প্রবাসীদের উচিত বাংলাদেশে আসা, এখানে বিনিয়োগ করা। এখানে শুধুমাত্র শ্রম সস্তা, সেটাই কথা না। এখানে অনেক কিছুই সুন্দর গোছানো। এখন সমস্ত কিছু কিন্তু এক জায়গায়। ভিসা থেকে নিয়ে গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ, ভ্যাট, এনবিআরের সবকিছু একই প্ল্যাটফর্মে পাবেন। আমরা ব্যাংক হিসেবে পাশে আছি। তাই আপনারা বাংলাদেশে আসুন, বাংলাদেশে এই মুহূর্তে বিশ্বের ৪০তম বা ৪১তম অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ দেশ।
যে গতিতে বাংলাদেশে এগুচ্ছে, এই স্রোতের মধ্যে থাকতেই হবে। চীনের কিন্তু ওই দিন পার হয়ে গেছে। বাংলাদেশের এই সময়ে বা এই স্রোতে এই মোমেন্টে আপনারা সঙ্গী হবেন, আমরা সেটাই আশা করি।’

আমেরিকায় এই রোড শো’র সাফল্যের বিষয়ে জানতে চাইলে সান ফ্রান্সিসকোতে কর্মরত সাংবাদিক আল মামুন লস্কর বলেন, ‘এটি নিঃসন্দেহে একটি বড় বিষয়। কারণ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের বিনিয়োগের জন্য এই কর্মশালা বিরাট কর্মযজ্ঞ, যা সত্যিই প্রশংসনীয়। প্রবাসী বাংলাদেশিসহ এমনকি মার্কিনি বিদেশিরাও কল্পনা করতে পারেনি যে, এতো বড় একটি সম্মেলন করা সম্ভব। যুক্তরাষ্ট্রের বড় চারটি শহরে এই ‘রোড শো’ নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য বড় প্রাপ্তি এবং আশার আলো। এর মাধ্যমে ব্যাপক হারে বিদেশি বিনিয়োগ বাংলাদেশে আকৃষ্ট হতে পারে।'

দেশের বাইরে এমন একটি আয়োজনকে সফল করতে দেশীয় কোম্পানি ওয়ালটনের পৃষ্ঠপোষকতা প্রসঙ্গে আল মামুন লস্কর বলেন, ‘এটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। কারণ, ওয়ালটন এখন শুধুমাত্র বাংলাদেশেরই নয়, এটি এখন সারা বিশ্বে পরিচিত। এই প্রতিষ্ঠানের টেকনোলজি সুনাম বিশ্বব্যাপী ছড়িয়েছে। দেশের অর্থনীতিকে সুসংহত ও শক্তিশালী করতে ওয়ালটনের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

এমএম/এনটি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়