ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

৪০ হাজার মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল কিনবে বিপিসি

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:০৪, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১  
৪০ হাজার মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল কিনবে বিপিসি

জ্বালানি তেলের চাহিদা মেটাতে অক্টোবর মাসের জন্য ৪০ হাজার মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল কেনার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। জি-টু-জি ভিত্তিতে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোটেশনের মাধ্যমে এসব তেল সংগ্রহ করা হবে। এজন্য প্রিমিয়াম ও রেফারেন্স মূল্যসহ ব্যয় হবে ১৭৪ কোটি ২০ লাখ টাকা।

সূত্র জানায়, বিপিসি দেশের জ্বালানি চাহিদা পূরণের জন্য প্রতিবছর বিভিন্ন দেশের সাতটি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান যেমন: পিটিএলসিএল,ইএনওসি,বিএসপি,পেট্রোচায়না,ইউনিপেক, পিআইটিটি ও কেপিসি থেকে মেয়াদী চুক্তির আওতায় পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করে থাকে। সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১৬ সাল থেকে জ্বালানি তেলের মোট চাহিদার ৫০ শতাংশ জি-টু-জি ভিত্তিতে এবং ৫০ শতাংশ উন্মুক্ত আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে আমদানি করে আসছে বিপিসি। ২০২১ সালের পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির প্রস্তাব গত ২০২০ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় অনুমোদিত হয়।

সূত্র জানায়, বিশ্ববাজারে স্পট মার্কেটে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম বেড়ে যাওয়া এবং স্থানীয় সরবরাহ কমে যাওয়ায় গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর চাহিদা অনুযায়ী পিক-আওয়ারে পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে ডিজেল/ফার্নেস অয়েল ও ডুয়েল ফুয়েল-ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বেশি সময় চালু রাখার প্রয়োজনে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) থেকে ২৮৫.৮ হাজার মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েলের চাহিদা পাঠানো হয়েছে।

২০২১ সালের সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবহারের জন্য ৮০ হাজার মেট্রিক টন (+/-১০%) ফার্নেস অয়েল আমদানির বিষয়ে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি থেকে অনুমোদন নেওয়া হয়। অনুমোদিত ৮০ হাজার মেট্রিক টনের মধ‌্যে ইতোমধ্যে ২৫ হাজার ৫২ মেট্রিক টন আমদানি করা হয়েছে। ৪০ হাজার মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে জি-টু-জি সরবরাহকারীদের কাছ থেকে কোটেশনের মাধ্যমে আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির গত ১৬ সেপ্টেম্বর তারিখের সভায় অনুমোদিত পরিমানের +/-১০% এর সীমার মধ্যে থাকবে।

সূত্র জানায়, বিউবো’র চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি ভিত্তিতে ফার্নেস অয়েলের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে দুটি পার্সেলে ৪০ হাজার মেট্রিক টন (+/-১০%) ফার্নেস অয়েল (এইচএসএফও ১৮০ সিএসটি) আমদানির জন্য কেপিসি ছাড়া অবশিষ্ট ছয়টি জি-টু-জি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোটেশন চেয়ে গত ১ সেপ্টেম্ব তারিখে বিপিসি থেকে চিঠি পাঠানো হয়।

উল্লেখ্য, কুয়েত পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (কেপিসি) ২০২১ সালে জ্বালানি তেল সরবরাহে অপারগতা প্রকাশ করেছে। কোটেশন প্রস্তাব দাখিলের শেষ সময় ছিল গত ১৫ সেপ্টেম্বর। ওই দিন বিকেলে কোটেশন প্রস্তাবকারী প্রতিষ্ঠানের মনোনীত প্রতিনিধি ও কোটেশন উন্মুক্তকরণ কমিটির সব সদস্যের উপস্থিতিতে চট্টগ্রামে বিপিসি’র প্রধান কার্যালয়ে কোটেশন প্রস্তাব খোলা হয়। নির্ধারিত সময়ে তিনটি প্রতিষ্ঠান থেকে দরপ্রস্তাব পাওয়া যায়। কোটেশন প্রস্তাবের বৈধতা ২০২১ সালের ১০ অক্টোবর পর্যন্ত বলবৎ আছে।

সূত্র জানায়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর কোটেশন মূল্যায়ন কমিটির সভায় মূল্যায়ন প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে। এতে ইন্দোনেশিয়ার পিটি.ভুমি সিয়াক পুসাকু জাপিন প্রতি মেট্রিক টনের প্রিমিয়াম ৪৪.৮৮ ডলার উল্লেখ করে সর্বনিম্ন দরদাতা বিবেচিত হয়।

প্রস্তাবিত প্রিমিয়াম ও রেফারেন্স মূল্য অনুযায়ী সর্বমোট ২ কোটি ৪ লাখ ৩৪ হাজার মার্কিন ডলার (১৭৪ কোটি ২০ লাখ টাকা) ব্যয় হবে। তবে, আমদানিকৃত জ্বালানি তেলের প্রকৃত মূল্য হবে চুক্তি অনুযায়ী বি/এল (বিল অব লোডিং) তারিখে প্রকাশিত প্ল্যাটসকে ভিত্তি ধরে দুই দিন আগে এবং দুই দিন পরে (২+১+২) অর্থাৎ ৫ দিনের গড় মূল্য। বি/এল তারিখের প্ল্যাটস প্রকাশিত না হলে বি/এল তারিখের আগের তিন দিন ও পরের দুই দিন অর্থাৎ পাঁচ দিনের গড় হিসেবে জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারিত হবে।

হাসনাত/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়