ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘মিউচ্যুয়াল ফান্ড বিনিয়োগের আকর্ষণীয় খাত’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫৮, ৯ অক্টোবর ২০২১   আপডেট: ১৬:৩৩, ৯ অক্টোবর ২০২১
‘মিউচ্যুয়াল ফান্ড বিনিয়োগের আকর্ষণীয় খাত’

ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ রেস ম্যানেজমেন্টর সিইও ড. হাসান ইমাম

অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ অ্যান্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডসের (এএএমসিএমএফ) সভাপতি ও বাংলাদেশ রেস ম্যানেজমেন্টর সিইও ড. হাসান ইমাম বলেছেন, ‘শেয়ারবাজারে এখন মিউচ্যুয়াল ফান্ড বিনিয়োগের সবচেয়ে আকর্ষণীয় খাত। বাংলাদেশের শেযারবাজারে এ সেক্টরের বড় সম্ভাবনা আছে। গত ছয়-সাত বছরে এ কথাটা বলা যায়নি। কিন্তু এখন সেটা বলার সময় এসেছে।’

শনিবার (৯ অক্টোবর) বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত ‘ইনস্টিটিউশনাল রোল ইন সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এএএমসিএমএফ আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শীবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসি’র কমিশনার অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান ও ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আরফান আলী। অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেব উপস্থিত ছিলেন—ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের এমডি আবুল হোসেন, সিডব্লিউটি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের এমডি মোনিজা চৌধুরী এবং অ্যালায়েন্স অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের সিইও ও এমডি খন্দকার আসাদুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অল্টারনেটিভ ইনভেস্ট ম্যানেজমেন্টের সিইও ও ম্যানেজিং পার্টনার আজার চৌধুরী।

ড. হাসান ইমাম বলেন, ‘এ বছরে অবশ্যই মিউচ্যুয়াল ফান্ড ভালো করেছে। ডিভিডেন্ড গেইন হিসাবে এ বছর ইক্যুইটি বা শেয়ারভিত্তিক মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো সম্মিলিভাবে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে, যেটা বর্তমান কমিশনের বড় কৃতিত্ব। কারণ, তারা আমাদের ভালো লভ্যাংশ দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করেছেন। মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো এ ক্যাটারির বড় ও মাঝারি কোম্পানির শেয়ারের সিংহভাগ বিনিয়োগ করছে। ফান্ডগুলোর পোর্টফোলিওতে গড়ে ৩০ থেকে ৫০টি কোম্পানির শেয়ার থাকে। কাজেই একটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করে ব্রড ডাইভারসিফিকেশন পাওয়া যাচ্ছে, যেটা নিজের পোর্টফোলিওতে বিনিয়োগ করে সম্ভব নয়।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স পুঁজিবাজারে প্রসার করতে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বড় ভূমিকা আছে। এটা ভবিষ্যতেও থাকবে। যদি পুঁজিবাজারের সাসটেইনিবিলিটি চিন্তা করা যায়, তাহলে মিউচ্যুয়াল ফান্ড প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। একইভাবে ভবিষ্যতে মিউচ্যুযাল ফান্ড সেক্টর এ ভূমিকা পালন করে যাবে। ফলে, শেয়ারবাজারে সাসটেইনেবল ইনভেস্টমেন্ট হিসেবে মিউচ্যুয়াল ফান্ড ভালো ইনস্ট্রুমেন্ট, যা বিনিয়োগকারীদের ভালো রিটার্ন দিতে সক্ষম হবে।’

এএএমসিএমএফের প্রেসিডিন্টে বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, মিউচ্যুয়াল ফান্ডে ভালো ক্যাপিটাল গেইন দিতে পারছে না। কিন্তু তথ্য সেটা বলছে না। তথ্য বলছে, গত অর্থবছরের ডিএসই’র বেঞ্চমার্ক ইনডেক্স (ডিএসইএক্স) বিবেচনায় বাংক বা আর্থিক খাতের শেয়ারের চেয়ে মিউচ্যুয়াল ফান্ডে ভালো ক্যাপিটাল গেইন হয়েছে। সেদিক বিবেচনায় ডিভিডেন্ড ও ক্যাপিটাল গেইন মিলিয়ে বিনিয়োগকারীরা ভালো মুনাফা করেছেন। ফলে, মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে বিনিয়োগ করা সবচেয়ে নিরাপদ।’

বাংলাদেশ রেস ম্যানেজমেন্টর সিইও বলেন, ‘বাজারে অন্য ইনভেস্টমেন্টের তুলনায় বড় মিস প্রাইসিং আছে মিউচ্যুয়াল ফান্ডে। তার কারণ হচ্ছে, মিউচ্যুয়াল ফান্ড বাজারের অন্য দশটি করপোরট শেয়ারের মতো নয়। যেমন: একটি মিউচ্যুয়াল ফান্ড ৮ টাকায় ট্রেড করছে। কিন্তু এ মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ভেতরে একগুচ্ছ শেয়ার আছে। এসব শেয়ারকে বাজারে মূল্যায়ন করা যায়। এটাকে আমরা নিট সম্পদ মূল্য (এনএভি) বলে থাকি। বাজারে অধিকাংশ মিউচ্যুয়াল ফান্ডের এনএভি প্রায় ১১ টাকার কাছাকাছি আছে। অর্থাৎ মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ভেতরে যেসব শেয়ার আছে, তার সম্মিলিত মূল্য প্রায় ১১ টাকা। তাহলে, একজন বিনিয়োগকারী ৮ টাকার বিনিময়ে ১১ টাকার বিনিয়োগ কিনতে পারছি। ফলে, ইনভেস্টমেন্টের ভাষায় বলা যায়, মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করে কম টাকায় বেশি মূল্য সম্পদ কেনার সুযোগ আছে। এজন্য মিউচ্যুয়াল ফান্ড সম্ভাবনাময়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আশা করা যায়, শেয়ারবাজার ভালো থাকলে আগামী বছরের মিউচ্যুয়াল ফান্ড ভালো করবে। বর্তমান বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বে শেয়ারবাজারে যে গভর্নেন্স সৃষ্টি হচ্ছে, আশা করা যাচ্ছে, সামনেরে বছর শেয়ারবাজার ভালো থাকবে।’

ঢাকা/এনটি/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়