ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

প্রতারণার অভিযোগে সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের বিরুদ্ধে তদন্ত

নুরুজ্জামান তানিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৩২, ১১ নভেম্বর ২০২১  
প্রতারণার অভিযোগে সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের বিরুদ্ধে তদন্ত

শেয়ারবাজারে বস্ত্র খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলসের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সাধারণ শেয়াহোল্ডারদের প্রতারিত কারার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির উদ্যোক্তা ও তৎকালীন পরিচালকদের দ্বারা কোনো প্রতারণামূলক কার্মকাণ্ড ঘটেছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে চার সদস্যের এ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সম্প্রতি বিএসইাসি এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তদন্ত কমিটিকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন বিএসইসিতে দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন—বিএসইসি’র উপ-পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম, উপ-পরিচালক শাহরিয়ার পারভেজ, সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ সাদেকুর রহমান ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সিনিয়র ম্যানেজার মো. আব্দুল কাদের।

আদেশে উল্লেখ রয়েছে, সাধারণ শেয়াহোল্ডারদের প্রভাবিত করতে সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলসের উদ্যোক্তা ও তৎকালীন পরিচালকরা কোনো প্রতারণামূলক কার্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করে বিএসইসি। তাই, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ (১৯৬৯ সালের অধ্যাদেশ নং XVII) এর ধারা ২০(এ) এবং সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ আইন, ১৯৯৩ এর ধারা ১৭ক অনুযায়ী তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হলো। তদন্ত কর্মকর্তারা নির্ধারিত শর্তাবলী অনুসারে এ তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলসের সার্বিক বিষয়, সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের প্রভাবিত করার লক্ষ্যে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের কোনো প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড হয়েছে কি না, কোম্পানিটির উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা ঘোষণা ছাড়া কোনো শেয়ার বিক্রি করেছেন কি না, কোনো মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দ্বারা উদ্যোক্তা-পরিচালকরা শেয়ারের মূল্যকে প্রভাবিত করেছেন কি না, কোম্পানিটির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের দ্বারা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ইতোপূর্বে কোনো আইন লঙ্ঘন হয়েছে কি না, সেসব তথ্য সংগ্রহ করা; প্রাথমিক গণ প্রস্তাবের (আইপিও) সময়  উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের দ্বারা সংঘটিত যেকোনো জালিয়াতি বা প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড ঘটেছে কি না এবং এ সম্পৃক্ত অন্যান্য যেকোনো বিষয় তদন্ত করা হবে।

এ বিষয়ে বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র মো. কামরুল আনম খান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলসের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের বিরুদ্ধে ঘোষণা ছাড়াই শেয়ার বিক্রিসহ সাধারণ শেয়াহোল্ডারদের সঙ্গে প্রতারণামূলক কার্মকাণ্ডের অভিযোগ আছে। বিষয়গুলোর সত্যতা যাচাই করার লক্ষ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিএসইসি।’

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলসের পরিশোধিত মূলধন ২৩৯ কোটি ৩১ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার ২৩ কোটি ৯৩ লাখ ১৬ হাজার। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে আছে ৬২.১৯ শতাংশ শেয়ার। প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৫.৬৭ শতাংশ এবং উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে ২২.১৪ শতাংশ শেয়ার আছে।

এদিকে, গত পাঁচ বছর ধরে সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলসের কার্যক্রম বন্ধ আছে। তবে, এ পরিস্থিতির মধ্যেও কোম্পানিটি অধিগ্রহণ করতে আলিফ গ্রুপের প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে বিএসইসি। তবে, সাতটি শর্তে আলিফ গ্রুপকে এ অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থ বিবেচনা করে বিএসইসি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত ৭ অক্টোবর আলিফ গ্রুপ ও সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে অধিগ্রহণবিষয়ক সম্মতির চিঠি পাঠিয়েছে বিএসইসি।

ঢাকা/এনটি/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়