ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ২৫ কোম্পানিকে এক মাস সময়

নুরুজ্জামান তানিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৪১, ৬ ডিসেম্বর ২০২১   আপডেট: ২৩:২৯, ৬ ডিসেম্বর ২০২১
৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ২৫ কোম্পানিকে এক মাস সময়

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ২৫টি কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের জন্য এক মাস সময় দিয়েছে শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোম্পানিগুলো সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ হলে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন কমিশন।

সোমবার (৬ ডিসেম্বর) শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ২৫টি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর এ সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে। একই সঙ্গে বিষয়টি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) ও সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অবহিত করা হয়েছে। এ চিঠি জারির তারিখ থেকে কোম্পানিগুলোর শেয়ার ধারণের জন্য এক মাস সময় কার্যকর হবে বলে জানা গেছে।

পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ কোম্পানিগুলো হলো—সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, সালভো কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ, রতনপুর স্টিল রি-লোরিং মিলস (আরএসআরএম), প্রাইম ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, মিথুন নিটিং অ্যান্ড ডায়িং, অলিম্পিক এক্সেসরিজ, ফার্মা এইডস, সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইলস, ডেল্টা স্পিনার্স, কাট্টালি টেক্সটাইল, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, আজিজ পাইপস, অ্যাপোলো ইস্পাত কমপ্লেক্স, আলহাজ্জ টেক্সটাইল মিলস, অগ্নি সিস্টেমস, অ্যাডভান্ট ফার্মা, অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যালস, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ফু-ওয়াং ফুডস, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক, ফ্যামিলিটেক্স বিডি, ফাইন ফুডস, ফু-ওয়াং সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ ও ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট।

কোম্পানিগুলোর কাছে পাঠানো চিঠিতে বিএসইসি জানিয়েছে, একাধিক বার আলোচনা, বৈঠক ও সতর্কতার পরে এটি এখনও প্রতীয়মান হচ্ছে যে, ২০১৯ সালের ২১ মে বিএসইসির জারি করা নির্দেশনা অনুযায়ী আপনার কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালক এখনও সম্মিলিতভাবে পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করেননি। চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ের মাসিক শেয়ার ধারণ পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। ফলে, আপনার কোম্পানি ২০১৯ সালের ২১ মে বিএসইসির জারি করা নির্দেশনা পরিপালন করেনি।

চিঠিতে আরও বলা হয়, এ পরিস্থিতিতে আপনার কোম্পানিকে আগামী এক মাসের মধ্যে সম্মিলিতভাবে পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের লক্ষ্যে ২০১৯ সালের ২১ মে বিএসইসির জারি করা নির্দেশনা যথাযথভাবে পরিপালন করতে নির্দেশ দেওয়া হলো। অন্যথায়, ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর জারি করা নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেবে বিএসইসি৷

বিএসইসির ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর জারি করা নির্দেশনায় উল্লেখ রয়েছে, সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ কোম্পানির পর্ষদ কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে অতিরিক্ত দুজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেবে। তারা ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের বিষয়টি তদারকি করবেন এবং পর্ষদে এক মেয়াদের জন্য থাকবেন। তদারকির জন্য একটি কমিটি গঠন করবেন। এছাড়া, অতিরিক্ত নিয়োগকৃত স্বতন্ত্র পরিচালকরা প্রতি প্রান্তিক শেষ হওয়ার ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে রিপোর্ট জমা দেবে। শেয়ারহোল্ডারদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য এ জাতীয় কোম্পানিগুলো কমিশনের নির্দেশনা জারির পরবর্তী ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে হাইব্রিড সিস্টেমে (স্বশরীরে ও ডিজিটালি) সাধারণ মিটিং (এজিএম বা ইজিএম) আয়োজন করবে।

তথ্য মতে, ২০১১ সালের ২২ ডিসেম্বর পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনা করে তালিকাভুক্ত কোম্পানির প্রত্যেক পরিচালককে ন্যূনতম ২ শতাংশ ও সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ বাধ্যতামূলক করে নির্দেশনা দেয় সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বাধীন বিএসইসি। সংস্থাটির আইনের ‘২সিসি’ ধারার ক্ষমতাবলে সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের এই নির্দেশনা জারি করা হয়। তবে, শুরুতে এই নির্দেশনাটি নিয়ে কয়েকটি কোম্পানির পরিচালক হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনা করে বিএসইসির নির্দেশনার পক্ষে রায় দেন হাইকোর্ট। এরই ধারাবাহিকতায় বিএসইসি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সব কোম্পানিকে উদ্যোক্তা ও পরিচালক সম্মিলিতভাবে পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের জন্য নির্দেশনা দেয়। তবে, সর্বশেষ ২০২০ সালের ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বেএসইসির বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে এই ২৫টি কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালক সম্মিলিতভাবে পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে, সার্বিক দিক বিবেচনা করে কোম্পানিগুলোকে আরও এক মাস সময় দিয়েছে বিএসইসি।

এ বিষয়ে বিএসইসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘সম্মিলিতভাবে পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ কোম্পানিগুলোর এটাই শেষ সুযোগ। এবার তারা ব্যর্থ হলে কমিশন আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’

এনটি/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়