মীর আখতারের ক্যাশ ফ্লো বেড়েছে ২৩১ শতাংশ, ব্যাখ্যা তলব

শেয়ার বাজারে প্রকৌশল খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি মীর আখতার হোসাইন লিমিটেডের শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) আগের বছরের তুলনায় ২৩১.০১ শতাংশ বেড়েছে। তবে, হঠাৎ ক্যাশ ফ্লো অনেক বাড়ার বিষয়ে কোম্পানিটির প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদনে কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। তাই, কোম্পানিটির কাছে এর ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।

সম্প্রতি এ বিষয়ে জানতে চেয়ে মীর আখতার হোসাইন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে ডিএসই সূত্রে জানা গেছে। বিষয়টি শেয়ার বাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) জানানো হয়েছে।

ডিএসই’র চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কোম্পানিটির চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ৫.২৩ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ছিল ১.৫৮ টাকা। সে হিসাবে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো বেড়েছে ৩.৬৫ টাকা বা ২৩১.০১ শতাংশ।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বিএসইসির ২০১৮ সালের ২০ জুন জারি করা নোটিফিকেশন অনুযায়ী কোনো কোম্পানির দেওয়া তিন মাসের আর্থিক প্রতিবেদনে কোনো প্যারামিটারে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়ে থাকলে, সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে। তবে, ডিএসই পর্যবেক্ষণ করে দেখেছে, এই দুই সময়ের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো উল্লেখযোগ্য হারে পরিবর্তন রয়েছে। তবে, কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো উল্লেখযোগ্য হারে পরিবর্তনের বিষয়ে চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিক আর্থিক প্রতিবেদনের নোটে ব্যাখ্যা দেয়নি। ফলে, বিষয়টি ২০১৮ সালের ২০ জুন জারি করা নোটিফিকেশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়। তাই, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (লিস্টিং) রেগুলেশন, ২০১৫ এর রেগুলেশন ৩৭(২) অনুযায়ী, কোম্পানিটির অবস্থান স্পষ্ট করতে মেইলে সফট কপি ও হার্ড কপি জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি দেশের উভয় শেয়ার বাজারে মীর আখতার হোসাইন লিমিটেডের লেনদেন শুরু হয়। ‘এন’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ১২০ কোটি ৭৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। সে হিসেবে কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ১২ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৪৭টি। এর মধ্যে সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালক বা পরিচালকের হাতে ৪৮.৫৮ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৩.৭৪ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৪৭.৬৮ শতাংশ শেয়ার আছে।

কোম্পানিটির চলতি ২০২১-২২ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫৬ পয়সা। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি ৮৬ পয়সা আয় হয়েছিল। গত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ শেষে শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৪৬ টাকা ৫৬ পয়সা।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএসই’র একজন কর্মকর্তা জানান, বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী মীর আখতার হোসাইন লিমিটেড তাদের আর্থিক প্রতিবেদনে শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো আগের বছরের তুলনায় ২৩১.০১ শতাংশ বাড়ার বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি। ফলে, বিষয়টি ডিএসই’র দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তাই কোম্পানিটির কাছে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মীর আখতার হোসাইনের কোম্পানি সচিব মো. মিসাউস সুন্নাহ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ডিএসই’র চিঠির জবাব আজকে দেওয়া হবে।’ তবে প্রথম প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।