ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ডেল্টা স্পিনার্সের তিন উদ্যোক্তার জব্দকৃত বিও চালুর অনুমতি

নুরুজ্জামান তানিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৪০, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২  
ডেল্টা স্পিনার্সের তিন উদ্যোক্তার জব্দকৃত বিও চালুর অনুমতি

শেয়ারবাজারে বস্ত্র খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ডেল্টা স্পিনার্সের তিন জন উদ্যোক্তা বা পরিচালকের বেনিফিশিয়ারি (বিও) হিসাব শর্ত সাপেক্ষে চালু করার অনুমতি দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। 

সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের নির্দেশনা পূরণের লক্ষে কোম্পানিটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে আগামী দুই মাসের জন্য শুধুমাত্র শেয়ার কিনতে ওই জব্দৃকত বিও হিসাবগুলো খুলে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

সম্প্রতি ডেল্টা স্পিনার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।

একইসঙ্গে বিষয়টি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালককেও অবহিত করা হয়েছে।

ডেল্টা স্পিনার্সের যেসব উদ্যোক্তা বা পরিচালকের বিও হিসাব চালু করা হয়েছে তারা হলেন- আরএ হাওলাদার, মোস্তফা জামাল হায়দার ও জিনাত ফেরদৌসী।

তথ্য মতে, ডেল্টা স্পিনার্স চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের শুরুতে বিএসইসিতে জব্দকৃত বিও হিসাব চালু করার জন্য আবেদন জানায়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বর্তমানে কোম্পানির সকল উদ্যোক্তা বা পরিচালকের শেয়ার ডিএসইতে জব্দকৃত অবস্থায় রয়েছে। তাই কোম্পানিটির উদ্যোক্তা বা পরিচালকের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করার জন্য শেয়ার কিনতে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তাই বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার কেনার জন্য কোম্পানিটির উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের জব্দ অবস্থায় থাকা বিও হিসাব চালু করে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে বিএসইসি কোম্পানিটির উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের বিও হিসাব চালু করার বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে। বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ডেল্টা স্পিনার্সের আবেদনের প্রেক্ষিতে কোম্পানির উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের দ্বারা সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের নির্দেশনা পূরণের লক্ষে ওই জব্দকৃত বিও হিসাব চালু করার অনুমতি দেওয়া হলো।

তবে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের বিও হিসাব চালু করার বিষয়ে শর্ত দিয়েছে বিএসইসি। বিএসইসির শর্ততে উল্লেখ করা হয়েছে, দুই মাসের জন্য বিও হিসাবগুলো শুধুমাত্র শেয়ার কেনার জন্য খুলে দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে উল্লেখিত বিও হিসাবগুলোতে শেয়ার বিক্রি করা যাবে না। এছাড়া কোম্পানির শেয়ার কেনার জন্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ তালিকাভুক্তির আইন মেনে চলতে হবে।

এদিকে, ২০১১ সালের ২২ ডিসেম্বর পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে তালিকাভুক্ত কোম্পানির প্রত্যেক পরিচালককে ন্যূনতম ২ শতাংশ ও সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ বাধ্যতামূলক করে নির্দেশনা জারি করে তৎকালীন চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বাধীন কমিশন। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর ধারা ২সিসি এর ক্ষমতাবলে সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের এই নির্দেশনা জারি করা হয়। তবে, শুরুতে ওই নির্দেশনাটি নিয়ে কয়েকটি কোম্পানির উদ্যোক্তা বা পরিচালক হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। তবে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনা করে বিএসইসির নির্দেশনার পক্ষে রায় দেন হাইকোর্ট। এরই ধারাবাহিকতায় বিএসইসি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানির উদ্যোক্তা বা পরিচালককে সম্মিলিতভাবে পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের জন্য নির্দেশনা দেয়। 

তবে, ২০২০ সালের ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিএসইসির বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে ২৫টি কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালক সম্মিলিতভাবে পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে, সার্বিক দিক বিবেচনা করে কোম্পানিগুলোকে আরও এক মাস অর্থাৎ চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছিল বিএসইসি। সর্বশেষ ওই নির্ধারিত সময়ের মধ্যেও কোম্পানিটি বিএসইসি’র ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়। তবে ৩০ শতাংশ শেয়ারধারণের জন্য সময়ের আবেদন করেছে কোম্পানিটি। ওই আবেদনের বিষয়ে এখনও কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি বিএসইসি।

শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে এ বিষয়ে ডেল্টা স্পিনার্সের কোম্পানি সচিব মাসুদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসইসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রাইজিংবিডিকে বলেন, ডেল্টা স্পিনার্সের উদ্যোক্তা বা পরিচালকরা বিএসইসি’র নির্দেশনা অনুযায়ী সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের জন্য আবেদন জানিয়েছেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন সার্বিক দিক বিবেচনা করে কোম্পানিটিকে শর্ত সাপেক্ষে জব্দকৃত বিও হিসাব খুলে দেওয়া অনুমতি দিয়েছে।

ঢাকা/এনএইচ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়