ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বাজেটে অগ্রিম আয়কর কমলে লাভবান হবে ব্রোকার: ডিবিএ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৫৩, ২৪ মে ২০২২  
বাজেটে অগ্রিম আয়কর কমলে লাভবান হবে ব্রোকার: ডিবিএ

আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে সিকিউরিটিজ লেনদেনের ওপর অগ্রিম আয়কর কমানো, ডিভিডেন্ড আয়ের ওপর করমুক্ত সীমা বাড়ানো, ডিভিডেন্ড আয়ের ওপর অগ্রিম আয়কর কমানো ও শর্তহীন প্রদর্শিত অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করেছে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)।

এসব সুবিধা দেওয়া হলে পুঁজিবাজারের সদস্যভুক্ত ব্রোকাররা লাভবান হবেন। বিনিয়োগকারী তাদের শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের ওপর কমিশন সুবিধা পেয়ে বিনিয়োগে আরও বেশি আগ্রহী হবেন। আর লেনদেন বৃদ্ধির মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে।

সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা অস্থিরতা বিরাজ করছে পুঁজিবাজারে। নানা পদক্ষেপেও স্থিতিশীল রাখা যাচ্ছে না বাজার। তাই আসন্ন বাজেট শেয়ার বাজারবান্ধব করার লক্ষ্যে এসব প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে ডিবিএ।

ডিবিএ’র মতে, সিকিউরিটিজ লেনদেনের ওপর অগ্রিম আয়কর কমানো উচিত। এজন্য সিকিউরিটিজ লেনদেনের ওপর ০.০১৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া বিধি ৮২সি, ২(বি) এর অন্তর্গত ৫৩ বিবিবি ধারাটি রহিতকরণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে  অগ্রিম আয়কর হ্রাস হলে আয়কর নীতি ও কাঠামো, ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনায় প্রকৃত অবস্থান প্রতিষ্ঠিত হয়ে লেনদেনের ওপর আইনের প্রতি কর প্রদানকারীর সন্তুষ্টি ও আস্থা তৈরিসহ শতভাগ পরিপালনযোগ্য হবে।  আর ৮২সি, ২(বি) এর অন্তর্গত ৫৩ বিবিবি ধারায় কর অব্যবস্থাপনা থেকে মুক্তি লাভ করে ব্রোকারেজ হাউজগুলো সঠিক ও যথাযথ প্রক্রিয়ায় কর প্রদান করে বিনিযোগকারীদের জন্যে সেবা ও সুবিধা বৃদ্ধিসহ বাজার উন্নয়নে আরও বেশি সক্রিয় ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। বাজারের লেনদেন বৃদ্ধি পেয়ে ব্রোকারগন লাভবান হবে। বিনিয়োগকারী তাদের শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের ওপর কমিশন সুবিধা পেয়ে বিনিয়োগে আরও বেশি আগ্রহী হবে। লেনদেন বৃদ্ধির মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে।

অপরদিকে, ব্যক্তির ক্ষেত্রে ডিভিডেন্ড আয়ের ওপর করমুক্ত সীমা বাড়ানো উচিত। এজন্য ডিভিডেন্ড আয়ের ওপর করমুক্ত সীমা দুই লাখ টাকা পর্যন্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে ভালো লভ্যাংশ প্রদানকারী সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ বাড়বে। ডিভিডেন্ডের প্রতি বিনিয়োগকারীর আগ্রহ দেখে অপেক্ষাকৃত দুর্বল কোম্পানিগুলো তাদের আর্থিক উন্নয়ন ও ব্যবসায়িক উন্নয়নে মনোয়োগী হবে। দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগে বিনিয়োগকারী লাভবান হবে।

এছাড়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ডিভিডেন্ড আয়ের ওপর অগ্রিম আয়কর কমানো দারকার। ব্যক্তির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ, পূর্ণাঙ্গ ও চূড়ান্ত নিষ্পত্তিকরণ এবং প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ, পূর্ণাঙ্গ ও চূড়ান্ত নিষ্পত্তিকরণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে বিনিয়োগে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হবে। মূল প্রতিষ্ঠান। আয়ের ওপর তার সহয়োগী প্রতিষ্ঠানকে বিনিয়োগে আর্থিক অগ্রিম আয়কর সহায়তা প্রদানে আরও বেশি আগ্রহী হবে। নতুন বিনিয়োগকারী পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে অংশগ্রহণ করবে। পুঁজি উত্তোলনের সুযোগ সৃষ্টিসহ বাজারে লেনদেনের গতি বৃদ্ধি পাবে।

ডিবিএ আরও মনে করে, প্রদর্শিত অর্থ পুঁজিবাজারে শর্তহীন বিনিয়োগের সুযোগ প্রদান করতে হবে। এতে পুঁজিবাজারে অর্থের তারল্য বৃদ্ধি পাবে। পুঁজিবাজারের গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে। দেশীয় শিল্প-অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটবে এবং অর্থের পাচার রোধ হয়ে দেশে বিনিয়োগের ফলে সরকারের রাজস্ব আয়ে কার্যকরি ভূমিকা রাখবে।

এছাড়া বিনিয়োগ ভাতার সর্বোচ্চ সীমা হিসেবে মোট করযোগ্য আয়ের শতকরা ৩০ ভাগ অথবা প্রকৃত বিনিয়োগ অথবা ১৫ মিলিয়ন টাকা (উপরের তিনটির যেটি কম) প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে উচ্চ মানের স্বতন্ত্র ব্যক্তি ইকুইটি বাজারসহ তরলযোগ্য সিকিউরিটিজে বিনিয়োগে উৎসাহিত হবে। এ জাতীয় বিনিয়োগকারী উদ্যোক্তা সরকারের উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগে অধিক আগ্রহী হবে।

এ বিষয়ে ডিবিএর জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও শ্যামল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাজিদুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেন, পুঁজিবাজার বান্ধব জাতীয় বাজেট প্রণয়নের জন্য ডিবিএর পক্ষ থেকে বেশকিছু প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি ডিবিএ’র প্রস্তাবগুলো বাজেটে বাস্তবায়ন হবে। এতে ব্রোকার ও বিনিয়োগকারীসহ সরকারও লাভবান হবে।

এর আগে গত ৮ মে প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের কাছে এসব প্রস্তাব উপস্থাপন করে ডিবিএ।

/এনটি/সাইফ/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়