ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

চামড়ার দাম নিয়ে হতাশা কাটেনি ব্যবসায়ীদের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৪১, ১১ জুলাই ২০২২   আপডেট: ১১:৪৩, ১১ জুলাই ২০২২
চামড়ার দাম নিয়ে হতাশা কাটেনি ব্যবসায়ীদের

ছবি: রাইজিংবিডি

রাজধানীজুড়ে হাজারো মানুষ পশু কোরবানি দিয়েছেন। তবে চামড়া কেনাবেচায় কোনো আগ্রহ দেখা যায়নি কোরবানিদাতা ও ব্যবসায়ীদের। ঈদের দিন এবং আজ (সোমবার) রাজধানীর কয়েকটি এলাকা ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।

রাজধানীর কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অনেক বাসাবাড়ির সামনের রাস্তায় কিংবা বারান্দায় কোরবানি হওয়া পশুর চামড়া পড়ে আছে। 

কোরবানির পশুর চামড়া কেনাবেচা বিষয়ে হাজারিবাগের মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন বলেন, চামড়া বিক্রিতে মানুষের আগের মতো আগ্রহ নেই। এখন আর বাড়ি বাড়ি গিয়ে কেউ চামড়া কিনেন না। আবার কোরবানি দেওয়া মানুষ ভাবে ১টা চামড়া বিক্রি করতে হাজারিবাগ বা ঝিগাতলা এলাকায় যেতে লোকবলের পাশাপাশি ২০০-৩০০ টাকা রিকশা ভাড়া লাগে। চামড়ার দাম পাওয়া যায় ৪০০-৫০০ টাকা। তারচেয়ে বেশিরভাগ মানুষই মাদ্রাসায় বা এতিমখানায় চামড়া দান করে দেন।

আজিমপুরের একজন চামড়া ব্যবসায়ী বলেন, আগে ঈদের দিনে ঘুরে ঘুরে ৫০০-৬০০ চামড়া কিনেছি। সেই চামড়া ট্যানারিতে বিক্রি করে ভালো ব্যবসাও হয়েছে। কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা ভালো না। চামড়ার দাম নিয়ে একটা বিরাট খেলা চলে। ট্যানারিওয়ালারা ঠিক দাম দেয় না। আবার লাখ লাখ টাকা বাকি রাখে। তাই এখন মানুষও নানান ঝামেলা করে চামড়া বেচতে চায় না। মাদ্রাসা-এতিমখানায় দিয়ে দেয়। আমাদের এখানেও বিক্রি করতে আসেন খুব কম মানুষ। কাল সারাদিনে মাত্র ৬৫টা চামড়া কিনতে পেরেছি।

হাতিরপুলের মোতালেব প্লাজা মার্কেটের পেছনে দেখা যায়, স্থানীয় বাসিন্দাদের কোরবানি দেওয়া পশুর অনেকগুলো চামড়া স্তুপ করে রাখা আছে। চামড়ার সামনে মন খারাপ করে বসে আছেন কয়েকজন যুবক। ছবি না তোলার অনুরোধ জানান তারা। এক যুবক বলেন, পরিচিতদের কাছ থেকে ৬০০-৭০০ টাকা করে প্রায় ৭০-৭৫টা চামড়া কিনেছি। এখন কোন ব্যবসায়ী সেই চামড়া ৫০০ টাকার বেশি করে বলছেন না।  না বুঝে ৪-৫ বন্ধু জমানো টাকার পুরোটাই ইনভেস্ট করেছি। চামড়া তো কিনে ফেলেছি। এখন বিক্রি করার জায়গা পাচ্ছি না, দামও পাচ্ছি না। 

রাজধানীর পরীবাগ থেকে হাতিরপুল বাজারে সংযোগ সড়কের একপাশে কয়েকটি গরুর চামড়া ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। সেখানকার একজন মুদি দোকানী বলেন, আগে এ এলাকায় ৪-৫ পার্টি চামড়া কিনতে আসতো। এইবার কাউকে দেখলাম না।

সেন্ট্রাল রোডের স্থায়ী বাসিন্দা সুলতান আহমেদ বলেন, দুটি গরুর চামড়া বেচার জন্য সারাদিনেও কাউকে পেলাম না। তাই এক মাদ্রাসা থেকে ছাত্ররা আসায় ওদের দিয়ে দিয়েছি।

ধানমন্ডি চার নম্বর রোডের বাসিন্দা ফররুখ ইকবাল বলেন, ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকার গরুর চামড়া বিক্রি করার মতো কাউকে পেলাম না। সারাদিন পর কাল সন্ধ্যায় একটি এতিমখানায় লোক দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। শুনেছি এবার চামড়ার দামও নাকি কম।

উল্লেখ্য, এবার গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুটে ৭ টাকা আর খাসির চামড়ার দাম ৩ টাকা বাড়ানো হয়েছে। সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ী, ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৪৭ থেকে ৫২ টাকা। ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৪ টাকা। এছাড়া খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ঢাকায় ১৮ থেকে ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

/মেয়া/সাইফ/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়