ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

নিত্যপণ্যের দাম নাগালে রাখতে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:১৯, ২০ অক্টোবর ২০২২   আপডেট: ১০:২৩, ২০ অক্টোবর ২০২২
নিত্যপণ্যের দাম নাগালে রাখতে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ

ফাইল ছবি

নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে রাখতে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য স্থিতিশীল রাখার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সংস্থাটি ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে নিম্নআয়ের এক কোটি পবিবারের মাঝে প্রতি মাসে ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপণ্য বিক্রি করছে। পাশাপাশি বাজার মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্তকর্তা জানান, টিসিবির মাধ্যমে নিম্নআয়ের পরিবারের কাছে ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি, ভোক্তার স্বার্থ ও অধিকার নিশ্চিত করতে দেশের সব জেলা থেকে বাজার পরিস্থিতি বিষয়ক প্রতিবেদন সংগ্রহ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে শতাধিক মনিটরিং অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এই মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ এসব অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানের মাধ্যমে অসাধু ব্যবসায়ীদের জরিমানাও করা হয়েছে। আগামীতে অভিযান আরও জোরদার করা হবে।

এদিকে, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় রপ্তানি বাজার বাড়ানো ও রপ্তানিপণ্য বহুমুখীকরণই প্রধান সমস্যা বলে মনে করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়া বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থার ভঙ্গুরতা, আমদানিকৃত পণ্যমূল্য বৃদ্ধি ও বিশ্বায়নের ফলে পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে খাপ খাওয়ানো একটা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সঙ্গে ‘এপিএ’ চুক্তিতে এ তথ্য তুলে ধরেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

সূত্র জানায়, রপ্তানি বাজার বাড়ানো এবং রপ্তানিপণ্য বহুমুখীকরণে সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর দুর্বলতা রয়েছে। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কৌশলগুলোর মধ্যে এলডিসি সার্ভিস ওয়েভার ও ট্রিপস এক্সেম্পশনকে ব্যবহার করে ওষুধ খাতকে শক্তিশালী করা ও সেবা খাতে রপ্তানি বাড়ানো এবং টিপিএস-ওআইসি-এর রুল্স অব অরিজিন বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন মনে করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

সূত্র জানায়, রপ্তানি বাড়াতে চলতি অর্থবছরে বিদ্যমান ‘রপ্তানি নীতি ২০২১-২০২৪’ পর্যালোচনার পাশাপাশি আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি সইয়ের লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা করা হবে। রপ্তানি বাড়াতে ‘বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেক্টিভিটি প্রজেক্ট-১’-এর আওতায় সার্ভে পরিচালনা করা হবে। দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় বাণিজ্য সংক্রান্ত ট্রেড নেগোসিয়েশনে অংশগ্রহণ করা হবে। বিদেশে নতুন বাণিজ্যিক মিশন চালু এবং মিশনের কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়নে পর্যায়ক্রমে বাণিজ্যিক মিশন পরিদর্শনের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, রপ্তানি বাড়াতে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ভুটানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ‘অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি’ (পিটিএ) সই করা হয়েছে এবং সরকারের যথাযথ উদ্যোগের ফলে ২০২০ সালের জুলাই থেকে চীনের বাজারে ৮ হাজার ২৫৬টি পণ্যে (৯৭%) শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা পাওয়া গেছে। এছাড়া ৯টি দেশের সঙ্গে ‘এফটিএ’ সম্পাদনের বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে সরকার। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে-তুরস্ক, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, মালি, সেনেগাল, সিয়েরালিওন, মিয়ানমার ও মরিশাস।

এদিকে শুধু রপ্তানি নয়, সারা দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। এজন্য নিয়মিতভাবে অভিযানও পরিচালনা করা হয়ে থাকে। 

প্রসঙ্গত, দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে চাল, ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যমূল্য দীর্ঘদিন ধরেই ঊর্ধ্বমুখী। এসব পণ্যের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি ও ডলারের দাম বাড়াকে দায়ী করে আসছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। চলতি অর্থবছরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মপরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে-তৈরি পোশাক কারখানার কমপ্ল্যায়েন্স অর্জনে সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণ, ডিজিটাল কমার্সের সমন্বিত অনলাইন অভিযোগ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা ইত্যাদি।

/হাসনাত/সাইফ/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়