ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

স্টক এক্সচেঞ্জের কার্যক্রমে সন্তুষ্ট নয় বিএসইসি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০১:৩৬, ২০ জানুয়ারি ২০২১  
স্টক এক্সচেঞ্জের কার্যক্রমে সন্তুষ্ট নয় বিএসইসি

দেশের স্টক এক্সচেঞ্জের কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্ট নয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে তাদের বিভিন্ন কার্যক্রমে এই অসন্তোষ প্রকাশ করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।

স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালকরা নিয়মিত পর্ষদ সভা করছে কিন্তু তাদের সুনির্দিষ্ট কোনো ভবিষ্যত পরিকল্পনা নেই। তাছাড়া ব্যবসা বাড়ানোসহ উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার কার্যকরি কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। ফলে গতানুগতিক ধারায় চলছে প্রতিষ্ঠানটি। আর এসব কারণেই অসন্তোষ প্রকাশ করে বিএসইসি। পাশাপাশি ডিএসইকে জানুয়ারির মধ্যে ব্যবসা উন্নয়ন সম্পর্কিত পরিকল্পনা করে এবং পরবর্তী মাসের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করতে নির্দেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে তার হালনাগাদ তথ্য কমিশনকে প্রতি মাসে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, ডিএসইর গত ৬ মাসে ১৫-২০টি বোর্ড মিটিং ও আইসিটি নিয়ে প্রায় ১০টি মিটিং করার স্বার্থকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় কমিশনের পক্ষ থেকে। এই মিটিংয়ের ফলাফল কি, তাও জানতে চাওয়া হয়। এছাড়া আইটিকে কেন্দ্র করে আজকের মিটিং করা হলেও ডিএসইর এ সংশ্লিষ্ট কমিটির ৫ জনের মধ্যে মাত্র ২ জন অংশগ্রহন করায় হতাশা প্রকাশ করে কমিশন। তবে এই মিটিংয়ে উপস্থিত হওয়ার ক্ষেত্রে ফি না থাকায় অন্যরা আগ্রহী হয়নি বলে অনেকে মনে করেন।

বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের ব্যবসা বাণিজ্য বাড়তে থাকলেও ডিএসইর প্রস্তুতির অভাব দেখছি। এই সমস্যা কাটিয়ে তোলার জন্য তাদেরকে এই জানুয়ারি মাসের মধ্যে কর্মপরিকল্পনা দিতে বলেছি। এতে সময় উল্লেখ করে করে কতদিন ধরে কি করবে, তা জানাতে বলেছি। একইসঙ্গে পরবর্তী মাসের শেষ কার্যদিবসে আপডেট দিতে বলেছি।

তিনি বলেন, বিএসইসি, সিএসই বা সিডিবিএলকে শুধু একা ডিজিটালাইজড হলে হবে না। এখানে সবপক্ষকেই পারস্পরিক সুবিধার্থে ডিজিটালাইজড হতে হবে। অন্যথায় কাস্টমারদেরকে সন্তুষ্টির ব্যর্থতায় ডিএসইকে লুজার হতে হবে। কিন্তু দেশের ভবিষ্যত উজ্জল সত্ত্বেও ডিএসই কেন এই বিষয়টি নিয়ে চুপচাপ বসে রয়েছে, তা আমার কাছে বোধগম্য না।

কমিশনের কাজ সবদিক থেকে সহযোগিতা করার কথা জানিয়ে বিএসইসির এই কমিশনার ডিএসই কর্তৃপক্ষকে বলেন, আপনারা যেকোন বিষয়ে আমাদেরকে জানাতে পারেন। আমরা সেখানেই সাহায্যের চেষ্টা করব। যেমন অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে (ওএমএস) সমস্যার কথা বলেছে। এখন সবাই যদি এক জায়গায় অর্ডার করতে থাকে, তাহলে তো ধীরগতি হয়ে যাবে। তাই এপিআইয়ের মাধ্যমে কাজ করতে হবে। তবে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান অর্ডার দিয়ে বসে থাকে, কিন্তু বাস্তবায়ন করে না। যেমন ১০ হাজার অর্ডার দেয়, কিন্তু বাস্তবায়ন করে ১০০-১৫০টি। এগুলো সমস্যার কারন হয়ে দাড়াঁয়। বিষয়টি সমাধানে প্রয়োজনে জরিমানা করতে হবে।

ডিএসইর আইটি কমিটিতে দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে জানিয়েছে শেখ শামসুদ্দিন বলেন, প্রয়োজনে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল থেকে জনবল নিতে পারে ডিএসই। ওখানে অনেক বিশেষজ্ঞ আছে।

তিনি বলেন, ভবিষ্যতে ৩ হাজার বা ৫ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হওয়ার বিষয়টি ডিএসইর পর্ষদ এখনো অনুধাবন করেনি। যে কারনে টেকনিক্যাল টিমও ভবিষ্যতে করণীয় নিয়ে কিছু বলছে না। অর্থাৎ তাদের ব্যবসা পরিকল্পনাই নাই।

ভবিষ্যত ভাবনা নিয়ে ডিএসই এর আগে কখনো আজকের মতো মিটিং করেনি বলে জানান বিএসইসির এই কমিশনার। তিনি বলেন, ইতিহাসের প্রথমবারের মতো ভবিষ্যতে করণীয় নিয়ে আজকে ডিএসই মিটিং করল। এর আগে পরিস্থিতির আলোকে মিটিং করেছে।

বৈঠকে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান, মো. আশরাফুল ইসলাম, উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ডিএসইর আইসিটি কমিটির প্রধান ও স্বতন্ত্র পরিচালক একেএম মাসুদ, পরিচালক শাকিল রিজভী, ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মতিন পাটোওয়ারি, প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা (সিটিও) মো. জিয়াউল করিমসহ অন্যান্যরা অংশগ্রহণ করেন।

ঢাকা/এনএফ/নাসিম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়