ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

‘আমি গুণ্ডামির বিপক্ষে, ছাত্ররাজনীতির নয়’

বিশ্ববিদ‌্যালয় সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ১৭ অক্টোবর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘আমি গুণ্ডামির বিপক্ষে, ছাত্ররাজনীতির নয়’

শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্যে চার বরণীয় ব্যক্তিত্বকে সম্মাননা জানিয়েছে সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি।

এই চার গুণী ব্যক্তিত্ব হলেন জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, প্রফেসর ইমেরিটাস সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন এবং শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তনে তাঁদের এ সম্মাননা জানানো হয়। তবে অসুস্থতার কারণে রাবেয়া খাতুন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।

এ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই গুণীজনদের প্রথমে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়। এরপর তাঁদের উত্তরীয় পরিয়ে দিয়ে সম্মান জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. পারভীন হাসান। অনুষ্ঠানে প্রত্যেকের হাতে মানপত্র ও ক্রেস্ট তুলে দেয়া হয়।

মানপত্র পাঠ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহনাজ পারভীন, আফরিন ইসলাম, আবদুস সেলিম ও হাসান সিরাজী। এ সময় এই চার ব্যক্তিত্বের ওপর নির্মিত চারটি প্রামাণ্যচিত্রও প্রদর্শিত হয়।

অধ্যাপক আনিসুজ্জামান তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে মত-দ্বিমত থাকবে। যুক্তি থাকবে এবং এর খণ্ডন থাকবে। উভয়ে পাশাপাশি অবস্থান করবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার যে অবস্থার কথা আমরা আজকাল শুনছি, তা আমাদের ব্যথিত করে। এখানে ছাত্ররাজনীতির নামে গুণ্ডামি হচ্ছে, অপরাধ হচ্ছে। আমি এর বিপক্ষে, তবে ছাত্ররাজনীতির বিপক্ষে নই।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাকে বিদেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় সম্মাননা দিয়েছে। কিন্তু দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া এটিই প্রথম সম্মাননা। তাই এই সম্মাননা আমার কাছে বিশেষ সম্মানের ও গুরুত্বপূর্ণ।’

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশে উন্নয়ন হচ্ছে, তবে সেই উন্নয়নের অন্তরালে অনেক অন্ধকার রয়ে গেছে। সমাজে নারীরা নির্যাতিত হচ্ছেন, পুঁজিবাদের কারণে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব মানুষ শোষণ-নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। শিক্ষার আলো দিয়ে এই অন্ধকার দূর করতে হবে।’

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু থেকেই এর সাথে আছি। ফলে এই সম্মাননা পেয়ে আমার মনে হচ্ছে, আমি আমার আপনজনের কাছ থেকে উপহার পেলাম।’

রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষার মাধ্যমে যে মূল্যবোধ তৈরি হয়, পরিবার থেকেই তার চর্চা করতে হবে। শতকরা ৮০ ভাগ নারী তার ঘরেই নির্যাতনের শিকার হন। তাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঘর থেকেই প্রতিবাদ করতে হবে।’

সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. পারভীন হাসান তাঁর সমাপনী বক্তব্যে বলেন, ‘এই আত্মত্যাগী মানুষদের যথার্থ সম্মান জানানোর ক্ষমতা আমাদের নেই। বরং তাঁরা যে আমাদের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে আজ এখানে উপস্থিত হয়েছেন, তাতে আমরাই সম্মানিত বোধ করছি। এই গুণীজনেরা বাংলাদেশের বিভিন্ন সময়ের মোড় ঘোরানো ইতিহাসের প্রত্যক্ষ সাক্ষী এবং সক্রিয় কর্মী। যেকোনো সামাজিক অবস্থান থেকেই দেশ ও সমাজের প্রত্যাশিত পরিবর্তনে এবং মানব কল্যাণে অবদান রাখা সম্ভব এই গুণীজনেরা আমাদের সামনে সেই দৃষ্টান্তই উপস্থাপন করেছেন। তাঁদের আদর্শ এবং প্রদর্শিত পথ অনুসরণ করার মতো সৎসাহসী উত্তরাধিকার বর্তমান প্রজন্মে আবশ্যক। তাঁরা পথ দেখিয়েছেন, তাঁদের প্রদর্শিত পথকে প্রসারিত এবং সুগম্য করা বর্তমান প্রজন্মের কর্তব্য।’

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ ইমেরিটাস অধ্যাপক নাজমা চৌধুরী, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান কাজী জাহেদুল হাসান এবং সদস্য কাজী জিসান হাসান, কোষাধ্যক্ষ ড. এম মোফাখখারুল ইসলাম, রেজিস্ট্রার ইলিয়াস আহমেদ, সোশিওলজি অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মালেকা বেগম, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারপারসন সজীব সরকার, ফটোসাংবাদিক তাসলিমা আখ্তার এবং বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।



সিডব্লিউইউ/হাকিম মাহি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়