একুশের ব্যানারে ৭ বীরশ্রেষ্ঠের ছবি!

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের সময় র‌্যালির ব্যানারে বীরশ্রেষ্ঠদের ছবি ব্যবহার করায় সমালোচনার মুখে পড়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ।

এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে বিভাগটি।

মুক্তিযোদ্ধা, ইতিহাসবিদ ও প্রগতিশীল শিক্ষকরা বলেছেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ভাষা শহীদদের অসম্মান ও অপমান করা হয়েছে। দেশের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এধরনের ভুল অমার্জনীয় ও অনাকাঙ্ক্ষিত।

তবে বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক দীনবন্ধু পাল দাবি করেছেন, সকল শহীদদের স্মরণে এধরনের ব্যানার তৈরি করা হয়েছে। এখানে মুজিববর্ষের চেতনাকেও ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে তাড়াহুড়ার কারণে সেটি করা সম্ভব হয় নি। এখানে কাউকে ছোট কিংবা বড় করা হয়নি।

বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিভাগের সামনে থেকে র‌্যালি বের হয়। শহীদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এরপর বিভাগের সামনে একইস্থানে এসে র‌্যালিটি শেষ হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাশেম জানান, এ ধরনের ভুলের মাধ্যমে সংগীত বিভাগ চরমভাবে ইতিহাস সচেতনহীনতার পরিচয় দিয়েছে। এটি যদি সায়েন্স ফ্যাকাল্টির ভুল হতো তবে মেনে নেওয়া যেত। কিন্তু আদি মানবিকের এক শাখা সংগীত বিভাগের এ ধরনের ভুল অমার্জনীয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ও মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক সরকার সুজিত কুমার জানান, ইচ্ছাকৃত কিংবা অনিচ্ছাকৃত হোক, এ ধরনের ভুল অমার্জনীয়। এ মাধ্যমে ভাষা শহীদদের প্রতি অসম্মান জানানো হয়েছে।

নাট্যকলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আতাউর রহমান রাজু মনে করেন, ভাষা শহীদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরশ্রেষ্ঠ সবাই আমাদের কাছে সম্মানীয়। কিন্তু সবাই আলাদা আলাদা প্রেক্ষাপটে ও স্বতন্ত্রভাবে সম্মানীয়। সেক্ষেত্রে ভাষা দিবসের ব্যানারে বীরশ্রেষ্ঠদের ছবি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রত্যাশিত। এধরনের কর্মকাণ্ড আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছাবে। তারা ভাষা সৈনিক ও বীরশ্রেষ্ঠদের এক করে ফেলতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি মাত্র জানতে পেরেছি। বিভাগের সভাপতির সঙ্গে কথা বলবো। তারপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’


খালিদ/বুলাকী