ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

করোনাতেই হতে যাচ্ছে কওমি মাদ্রাসার তাকমিল পরীক্ষা

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০১:২৭, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ০৩:১৯, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০
করোনাতেই হতে যাচ্ছে কওমি মাদ্রাসার তাকমিল পরীক্ষা

ফাইল ছবি

অবশেষে কওমি মাদ্রাসার সম্মিলিত শিক্ষা সংস্থা আল-হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ করোনার মধ্যেই দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল) পরীক্ষা নিতে যাচ্ছে। আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি'আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে এ পরীক্ষা।

সংস্থাটির স্থায়ী কমিটির ২৪ আগস্ট অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ২০ সেপ্টেম্বর সারাদেশে কওমি মাদ্রাসার তাকমিল বা দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। সেই সিদ্ধান্তের আলোকে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর আগে বেফাকুল মাদারিসিদ্দিনিয়্যা বাংলাদেশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সব হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও হিফজখানা ১২ জুলাই থেকে চালুর অনুমতি দেয় সরকার।

জানা গেছে, সংস্থাটির চেয়ারম্যান শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুতে আগামীকাল পরীক্ষা শুরু হবে কি না তা নিয়ে পরীক্ষার্থীদের সংশয় ছিলো। কিন্তু কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরীক্ষা যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। আল্লামা আহমদ শফী’র জানাজায় অংশ নিতে অনেক কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম গেছেন। তাই তাদের দাবি ছিলো পরীক্ষা একদিন পেছানোর।

কিন্তু সংস্থাটির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা মুহাম্মাদ ইসমাইল জানিয়েছেন, পরীক্ষার তারিখ ও সময় পরিবর্তন করা হয়নি। এমনকি এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে। ফলে করোনার মধ্যে এই প্রথম অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বড় ধরনের কোনো পাবলিক পরীক্ষা।

জানা গেছে, এ পরীক্ষা রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) থেকে শুরু হয়ে আগামী মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) শেষ হবে। আগের মতো দাওরায়ে হাদিস (তাকমীল) পরীক্ষা ১০ বিষয়েরই হবে। পরীক্ষা তিন ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে। চারটি প্রশ্নের মধ্যে দুটির উত্তর দিতে হবে। (নাসায়ী ও ইবনে মাজাহ শরীফ, তিরমিযী-২ ও শামায়েলে তিরমিযি শরীফ এবং মুওয়াত্তায়ে ইমাম মালিক ও মুওয়াত্তায়ে ইমাম মুহাম্মদ কিতাবের দুটি প্রশ্নের একটির উত্তর প্রদান করতে হবে।)

এর আগে গত ১৭ আগস্ট মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, করোনা মহামারির কারণে আটকে থাকা কওমি মাদ্রাসার ডিগ্রি ও মাস্টার্স পর্যায়ের পরীক্ষাগুলো নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সেদিন কিতাব বিভাগের কার্যক্রম চালু ও পরীক্ষা নেওয়ার সুযোগ করে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন জানিয়েছিল জাতীয় দ্বীনি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড। ওইদিন সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে আবেদনপত্রটি পৌঁছে দেন সংশ্লিষ্টরা।

করোনা মহামারির কারণে দেশের প্রায় ২২ হাজার কওমি মাদ্রাসার ২৫ লাখের বেশি শিক্ষার্থী গত শিক্ষাবর্ষের বার্ষিক পরীক্ষা দিতে পারেনি। ঈদুল ফিতরের পর কওমি মাদ্রাসাগুলোর নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হলেও করোনার কারণে তা স্থগিত রাখা হয়। 

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উল্লেখযোগ্য আলেমদের উপস্থিতিতে কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের সমমান দেওয়ার ঘোষণা দেন। ১৩ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ (সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, শাখা-১) থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। 

স্বীকৃতি প্রদানের কারণে ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেশের আলেম ও কওমি শিক্ষার্থীদের সমাবেশে প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনাকে ‘কওমি জননী’ উপাধি দেয় আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া। 

বর্তমানে ছয়টি বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশের সব কয়টি দাওরায়ে হাদিস কওমি মাদ্রাসা আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়ার অধীনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।

ঢাকা/সনি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়