ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

অটোপাস নিয়ে কী ভাবছেন শিক্ষাবিদরা

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:১০, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০  
অটোপাস নিয়ে কী ভাবছেন শিক্ষাবিদরা

করোনায় দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব কার্যক্রম।  ফলে চলতি বছরের শিক্ষা কার্যক্রম পিছিয়ে যাচ্ছে।  এই সংকট থেকে উত্তরণের জন‌্য পরীক্ষা ছাড়াই পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণের পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা চলছে। শিক্ষাবিদরা বলছেন, শুরুতে শিক্ষার্থীদের জন্য ক্লাস চালু করা গেলে সংক্ষিপ্ত উপায়ে একটি মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে। যদি খোলা না যায়, তাহলে আগের ক্লাসগুলোতে শিক্ষার্থীর অবস্থান বিবেচনায় রাখা যেতে পারে।  আর অটোপাসের সুযোগ থাকতে পারে একেবারে শেষ স্তর হিসেবে।

তবে, সরকার বারবার বলছে, এখনো অটোপাসের বিষয়ে কোনো চিন্তা নেই।  যদি কোনোভাবেই পাঠসম্পন্ন করে মূল্যায়ন সুযোগ না থাকে, তখন বিকল্প চিন্তা হতে পারে অটোপাস।   

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের একেবারে অটোপাসের মধ্য দিয়ে ছেড়ে দেওয়া উচিত হবে না। যতটুকু সম্ভব, বিকল্প ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। যদি কিছুদিনের জন্য হলেও প্রতিষ্ঠান খোলা যায়, তাহলে তাদের সব বিষয় না হলেও মেজর কিছু সাবজেক্ট ধরে সংক্ষিপ্ত পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন উচিত। ’

আরেফিন সিদ্দিক  আরও বলেন, ‘তবে প্রতিষ্ঠান একেবারেই খোলা না গেলে তখন অবশ্যই অটোপাসের চিন্তা করতে হবে।  এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের আগের ক্লাসগুলোর অবস্থান বিবেচনায় রাখতে হবে। এছাড়া মূল্যায়নের জন্য সাক্ষাৎকারের ব‌্যবস্থাও রাখা যেতে পারে।’

শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যাপক একরামুল কবির বলেন, ‘অটোপাস দিলে শিক্ষাক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে।  দেখা গেলো, একজন শিক্ষার্থী অষ্টম শ্রেণি পাসের যোগ্য নয়, তবু নবম শ্রেণিতে ভর্তি হলো।  আবার কেউ নবম থেকে দশমে উঠলো।  কিন্তু সে মূল পাবলিক পরীক্ষায় নিজেকে কোয়ালিফাই করতে পারছে না। এর ফলে নিচের ক্লাসগুলোর চেয়ে ওপরের ক্লাসগুলোতে বিরূপ প্রভাব বেশি পড়বে। কারণ নিচের ক্লাসগুলোতে অটোপাস দিলেও শিক্ষার্থী নিজেকে তৈরি করে নিতে পারবে। কিন্তু অষ্টম থেকে ওপরের ক্লাসগুলোতে এর প্রভাব বেশি থাকবে। এতে এসএসসি পরীক্ষায় ফেলের সংখ্যা বেড়ে যেতে পারে। ’

শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যেন ঝুঁকিতে না পড়ে, সে বিষয়ে যথেষ্ট চেষ্টা করছে সরকার। এইচএসসি বিষয়ে এখনো অনেক চিন্তাভাবনা করতে হচ্ছে। পিইসি, জেএসসি বাতিল করা হয়েছে। পরিস্থিতি যদি এমন হয় যে, একেবারেই নিয়ন্ত্রিত নয়, তাহলে অটোপাসের বিকল্প নেই। তবে এক্ষেত্রে বিকল্প  মূল‌্যায়নের সুযোগ থাকলে অবশ্যই সেটি গ্রহণ করা যেতে পারে। এজন‌্য মূল বিষয়গুলো আলাদা করে সংক্ষিপ্ত পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে।  অথবা সার্বিক বিষয়ের ওপর মূল্যায়ন করা যেতে পারে। ’

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘পরিস্থিতি অনুকূলে না এলে অটোপাস দিতে পারে।  সরকার সর্বশেষ স্তর হিসেবে এই সিদ্ধান্তে যেতে পারে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে যখন শিক্ষার্থী পরের ক্লাসে ভর্তি হবে, তখন তার জন্য মূল‌্যায়নের ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে।  যেটি ভর্তিপরীক্ষা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন স্কুলে নেওয়া হয়ে থাকে।  সেক্ষেত্রে তাকে মূল্যায়ন করা যায়।’ এই পদ্ধতি শিক্ষার্থীর ওপর খুব বেশি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে না বলেও তিনি মনে করেন।

ঢাকা/এনই

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়