ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

আসছে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা, শিক্ষায় বড় ক্ষতির শঙ্কা  

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৩৭, ১০ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ০৯:৪০, ১১ অক্টোবর ২০২০
আসছে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা, শিক্ষায় বড় ক্ষতির শঙ্কা  

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও করোনার দ্বিতীয় আঘাতের আশঙ্কায় ফের বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্থগিত করা হয়েছে চলমান বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষাও। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়।  নভেম্বর-ডিসেম্বর নাগাদ করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর আশঙ্কায় বাতিল করা হয়েছে এইচএসসি পরীক্ষা। মূলত পুরো শীতকালে এই ধাক্কার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।  এরফলে ২০২১ সালের এসএসসি ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি নিয়ে নতুন করে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, করোনা দেশের অর্থনীতিসহ অন‌্যান‌্য খাতের পাশাপাশি চরম ক্ষতি করেছে শিক্ষা খাতেরও।  প্রায় এক বছর নষ্ট হয়েছে ইতোমধ্যে।  তবে, সরকার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অনলাইন ক্লাস, টেলিভিশন পাঠদান চলমান রাখলেও সে সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ। সামনে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা এলে পাঠদানের ক্ষতির পাশাপাশি এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে নতুন সংশয় তৈরি হবে।

সাধারণত বছরের জুলাই মাসে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রাক-নির্বাচনি আর অক্টোবরে নির্বাচনি পরীক্ষা নেওয়া হয়। আর দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রাক-নির্বাচনি বা অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা জুলাই-আগস্টে এবং ডিসেম্বরে নির্বাচনি পরীক্ষা হয়। এরপর নভেম্বরে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ ও ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ করা হয়। ইতোমধ্যে এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রাক-নির্বাচনি পরীক্ষা বাতিল হয়ে গেছে। একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষাও হয়নি। একাদশ শ্রেণিতে কলেজ পর্যায়ে নেওয়া বিভিন্ন ক্লাস টেস্ট আর অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার ফলের ওপর ভিত্তি করে এসব শিক্ষার্থীকে ‘অটো পাস’ দেওয়া হয়েছে।

আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, ‘প্রতি বছর ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি ও এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষা হয়। করোনাকালে প্রাতিষ্ঠানিক পাঠদান বন্ধ।  সরাসরি পরীক্ষা বা ক্লাস টেস্ট নেওয়ারও কোনো সুযোগ নেই। এ কারণে পরীক্ষা যথাসময়ে শেষ করাটা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরীক্ষা ও ক্লাস সংক্রান্ত যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।’

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান খোলার সুযোগ নেই। তবে টেলিভিশনে আমাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অনলাইন পাঠদান অব্যাহত থাকবে। করোনা দ্বিতীয় ধাক্কা নিয়ে নতুনভাবে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ পরিস্থিতি একেবারে স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আমরা প্রতিষ্ঠান খোলতে পারি না।’

জানা গেছে, নভেম্বরে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হবে, তখন সংক্রম আরও বাড়তে পারে। সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছেন, দ্বিতীয় ঢেউ এলে, সংক্রমণ বাড়লে তখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে সংশয় রয়েছে। সে হিসেবে এ বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা অনিশ্চিত।

এছাড়া শীতকালে করোনার প্রকোপ থাকলে সে হিসেবে নতুন বছরের শুরুতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যাবে কি না, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।

জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আকরাম আল হোসেন বলেন, ‘শীতপ্রধান দেশে এর প্রকোপ বেশি। আমাদের দেশে শীত শুরু হয় নভেম্বরের শেষ থেকে। ডিসেম্বর থেকে এর প্রকোপ বাড়তে থাকে। এই সময়ের মধ্যে করোনার বিস্তার বাড়তে পারে। আর করোনা বাড়লে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সুযোগ নেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে শিক্ষার্থীদের সশরীরে কোনো ক্লাস বা পরীক্ষা নেওয়া যাবে না।’  পরিস্থিতি অনুযায়ী সরকার সিদ্ধান্ত নেবে বলেও তিনি মন্তব‌্য করেন।

ঢাকা/এনই

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়