ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের এক বছর পূর্ণ

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:২২, ১৬ মার্চ ২০২১   আপডেট: ১১:৩১, ১৬ মার্চ ২০২১
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের এক বছর পূর্ণ

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটির এক বছর পূর্ণ হল আজ।

দেশে ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর গত বছরের ১৬ মার্চ শিক্ষার্থীদের নিরাপদ রাখতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা হয়। 

ওইদিন দেশের সব স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

প্রথম দফা ১৫ দিন অর্থাৎ ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দিলেও পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সেই ছুটি দফায় দফায় বাড়িয়ে এখনও চলছে। গত বছর জুন থেকে আস্তে আস্তে সব কিছু খুলে দিলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্তে অটল থাকে সরকার। তবে বন্ধের এ সময় অনলাইন, সংসদ টিভি, বেতারসহ বিভিন্ন ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে ক্লাস চলমান ছিল।

মাঝে সংক্রমণ কমে আসায় আগামী ৩০ মার্চ থেকে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। কিন্তু সংক্রমণ ফের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় সেই তারিখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়েও অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। 

এদিকে, সোমবার (১৫ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে এক বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, যেহেতু সংক্রমণ বাড়ছে, তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে। এর আগে শুক্রবার (১২ মার্চ) শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, করোনার শনাক্তের হার বাড়তে থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটির বিষয়টি পুর্নবিবেচনা করা হবে।

তবে ঘোষিত তারিখের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সব ধরনের প্রস্ততি শেষ করতে তোড়জোড় চালাচ্ছে শিক্ষা এবং প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ লাখ ৩০ হাজার আবাসিক শিক্ষার্থী, কিন্ডারগার্টেন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সব স্তরের শিক্ষক-কর্মচারীদের টিকার আওতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

ইতোমধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে ২ লাখের বেশি শিক্ষক-কর্মচারী টিকা গ্রহণ করেছেন। আগামী ২০ মার্চের মধ্যে সবাইকে টিকা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। একইভাবে অন্যান্য স্তরের শিক্ষক কর্মচারীরা টিকা নিচ্ছেন। 

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ গোলাম ফারুক বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার যত ধরনের প্রস্তুতি প্রয়োজন সব প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে। সরকার ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী শ্রেণিকক্ষে যেতে প্রস্তুত শিক্ষক-কর্মচারীরা। করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় সরকার যদি ছুটি বর্ধিত করে সেটি ভিন্ন বিষয়। তবে আমরা প্রস্তুত।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনায় শিক্ষাখাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।  ২০২০ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক সমাপনি, জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করে পরবর্তীতে শ্রেণিতে অটো প্রমোশন দেওয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের।  এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা জেএসসি-এসএসসি গড় ফলাফলের ভিত্তিতে বিশেষ মূল্যায়ন করে ফল দেওয়া হয়েছে।  বাকি সব শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা বাতিল করে পরের শ্রেণিতে অটোপ্রমোশন দেওয়া হয়েছে।

তবে শিক্ষার্থীদের শিখন দূর্বলতা চিহ্নিত করে পরের শ্রেণিতে তা সমাধান করতে এক মাসের সংক্ষিপ্ত অ্যাসাইমেন্ট নেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর।

অন্যদিকে করোনার কারণে ২০২১ সালে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেজন্য এসএসসিতে ৩০ কার্যদিবস এবং এইচএসসিতে ৮০ কার্যদিবসের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরি করে তা প্রকাশ করা হয়েছে। যখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে তখন সরাসরি শ্রেণিকক্ষে এ সিলেবাস পড়িয়ে তারপর পরীক্ষা নেওয়া হবে। একই ভাবে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস হবে প্রাথমিকের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে।

পরীক্ষার্থী ব্যাচ ছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের অন্যান্য শ্রেণির পরিমার্জিত সিলেবাস নিয়ে কাজ করছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। যখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে তখন থেকে এ পরিমার্জিত সিলেবাস পড়িয়ে সেখান থেকে পরীক্ষা বা মূল্যায়ন করা হবে।

ঢাকা/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়