ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বাড়ছে করোনায় মৃত‌্যু-সংক্রমণ: কোন পথে শিক্ষা ব‌্যবস্থা?

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫৪, ২০ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ১৯:৪০, ২০ এপ্রিল ২০২১
বাড়ছে করোনায় মৃত‌্যু-সংক্রমণ: কোন পথে শিক্ষা ব‌্যবস্থা?

করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান কঠোর লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনি চলমান লকডাউনের সময়সীমা ২১ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে ২৮ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার অনিশ্চয়তা আরও ঘনীভূত হচ্ছে। সামনে এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষা। সংশ্লিষ্টদের মনে প্রশ্ন দানা বেঁধে উঠছে, কোন পথে যাচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থা?

শিক্ষাবিদরা বলছেন, দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর সরকার মার্চ মাস থেকেই খোলার চিন্তা করেছিল। তবে হুট করে পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যাওয়ায় খোলার সিদ্ধান্ত ঈদের পরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।  পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ বৈশ্বিক অবস্থা বিবেচনায় এখনই সবাইকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার তাগিদ দিয়েছেন তারা। অন্যথায় ঈদের পরও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।  দুশ্চিন্তা না করে যথাযথ প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া ও শিক্ষকদের তদারকি বাড়ানোর পরামর্শ দেন তারা।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ কমাতে ‘লকডাউন’ তেমন কার্যকর হবে না। যদি নিয়ম মানা না হয়। এক্ষেত্রে জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে কঠোর হতে হবে।  সরকারকেও সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘করোনায় ছাত্রছাত্রীদের ঝুঁকির মধ্যে না ফেলার নীতি নিয়েই সরকার এগিয়ে চলেছে। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রথম প্রয়োজন সবার মধ্যে সমন্বয়। বর্তমানে সংক্রমণের হার বেশি দেখতে পাচ্ছি আমরা। এ অবস্থায় ঝুঁকির মধ্যে ফেলা ঠিক হবে না।’

জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যাপক ইকরামুল কবির বলেন, ‘স্বাস্থ‌্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে আমাদের এটাও দেখতে হবে শিক্ষার্থীরা কতটুকু পড়াশোনার আওতায় আছে। সেটি যথাযথ মেইন্টেন হচ্ছে কি না, এটাও নিশ্চিত করতে হবে। পরিকল্পনামাফিক এগিয়ে যেতে হবে।’

শিক্ষার্থীদের দুশ্চিন্তা না করা আহ্বান জানিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন শিক্ষার্থীদের কোন ধরনের দুঃশ্চিনা না করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি হঠাৎ খারাপ হয়েছে। এতে আমাদের কারও হাত নেই। শিক্ষার্থীদের দুশ্চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। তাদের যেটুকু পড়ানো হবে; যা সিলেবাসে থাকবে, এখন থেকেই সেখানে তারা মনোযোগ দিলে পরবর্তী ধাপে বা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করবে। আমাদের নির্দিষ্ট সিলেবাস তারা কম্প্লিট করতে পারলেই তাদের থেকে প্রত্যাশিত ফল পাবো। মূলত এর ভিত্তিতেই একজন শিক্ষার্থী তার পরবর্তী পড়াশোনা এগিয়ে নেবে।’

প্রাথমিক শিক্ষাক্রম সদস্য ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘পরিস্থিতি বিবেচনায় পাঠপরিকল্পনায় পরিবর্তন আসছে। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতি সপ্তাহে একদিন স্কুল শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদের কাছে কাজ দেবেন। শিক্ষার্থীদের পাঠে রাখতে আমরা সবকিছুই করবো।’

প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। করোনা বাড়ায় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার প্রথমে ৫ এপ্রিল থেকে ৭ দিনের জন্য গণপরিবহন চলাচলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ জারি করেছিল। পরে তা আরও ২ দিন বাড়ানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরও কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরু হয়।  

গত ১২ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। লকডাউনের মধ্যে পালনের জন্য ১৩ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।  

/এনই/ 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়