ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

‘আগামী বাজেট হচ্ছে ব্যবসাবান্ধব’

সংসদ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:১৭, ৩১ মে ২০২১  
‘আগামী বাজেট হচ্ছে ব্যবসাবান্ধব’

জাতীয় সংসদের সাবেক ডেপুটি সার্জেন্ট-এট-আর্মস ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক উপ-কমিটি সদস্য স্কোয়াড্রন লিডার (অব) সাদরুল আহমেদ খান বলেছেন, আগামী বাজেট হচ্ছে ব্যবসাবান্ধব বাজেট।। শিল্পপ্রতিষ্ঠান সচল রেখে উৎপাদন ও রফতানি কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে বিনিয়োগকারীদের নীতিগত সহায়তা দেয়া হবে। নতুন করে কোনখাতে ভ্যাট ও কর আরোপ করা হচ্ছে না।

গত ২৫ মে  বাজেট নিয়ে রাইজিংবিডির সংসদ প্রতিবেদকের   সাথে আলাপ কালে তিনি একথা বলেন।

আগামী ৩ জুন জাতীয় সংসদে  ২০২১-২২ অর্থ বছরের বাজেট পেশ হবে । তিনি বাজেট নিয়ে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের  পরিকল্পনা ও উচ্চ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। সাদরুল আহমেদ খান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক উপ-কমিটি সদস্য। ২০০৯ সাল থেকে তিনি টানা এক দশক  জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপন কাজে সরাসরি জড়িত।

বাজেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, করোনায় সারাবিশ্বের অর্থনীতিতে বড় চাপ তৈরি হলেও বাংলাদেশ দ্রুত প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা ও তা বাস্তবায়ন করায় সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়। করোনার দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় ধাক্কা যাতে সামলানো যায় সেভাবেই আগামী বাজেট দেয়া হবে। মহামারী করোনার ক্ষয়ক্ষতি থেকে দেশের অর্থনীতি আবার ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে।

এবারের বাজেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, করোনাকালে ব্যবসাবান্ধব বাজেট দিতে যাচ্ছে সরকার। মহামারী করোনাভাইরাসে অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় আগামী অর্থবছরের জন্য কর ও ভ্যাট ছাড়ের বিশাল বাজেট দেয়া হবে। বাজেটে করের বোঝা না বাড়ায় স্বস্তি পাবেন ব্যবসায়ী ও সাধারণ আয়ের মানুষ। কর দিতে গিয়ে ব্যবসায়ীরা যেসব সমস্যায় পড়তেন, সেক্ষেত্রেও ব্যবসাবান্ধব কিছু পদক্ষেপ আসছে। ব্যবসায়ীরা পুরোপুরি হয়রানিমুক্ত থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারবেন। যে ব্যক্তির যত বেশি সম্পদ তিনি তত বেশি কর প্রদান করবেন। এজন্য আসন্ন বাজেটে সম্পদশালীদের সারচার্জ (সম্পদ কর) আরও বাড়ানো হবে। দাম বাড়বে বিলাসী পণ্যের, তবে কমবে ভোগ্য ও নিত্যপণ্যের।

এবারের বাজেটে কর ও ভ্যাট কি বাড়বে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য চাঙ্গা করতে কর ও ভ্যাট ছাড় দিয়ে আগামী বাজেট ঘোষণা করা হবে। অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য বিশেষ করে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ও ওষুধের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক হার কমলেও বাড়বে গাড়ির মতো বিলাসী পণ্যের। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সব ধরনের দ্রব্যের দাম কমবে। সিগারেট, বিড়ি ও জর্দার মতো পণ্যের দাম বাড়বে। দামী কসমেটিক্স পণ্য আমদানিতে শুল্কহার বাড়লেও কমবে সব ধরনের ভোগ্যপণ্য বিশেষ করে চাল, পেঁয়াজ, ভোজ্যতেলের মতো পণ্যের। এছাড়া ব্যবসায়ীরা নতুন বিনিয়োগও কর্মসংস্থানে ভূমিকা রাখতে পারলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর ও ভ্যাট ছাড় পাবেন। আমদানি পর্যায়ে আগাম আয়কর (এআইটি) হার কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। বর্তমানে ২ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত আগাম আয়কর দিতে হয়, যা কমানোর দাবি জানিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। এ হার কমিয়ে ১ থেকে ৩ শতাংশ পর্যন্ত করতে পারে এনবিআর। আমদানি পর্যায়ে আগাম কর ও ভ্যাট কমতে পারে। কাঁচামাল আমদানিতে বর্তমানে ৪ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে। এ হার ৩ শতাংশ নির্ধারণ করা হতে পারে। এতে ব্যবসায়ীদের কাছে নগদ অর্থের পরিমাণ বাড়বে।

করপোরেট ও ব্যক্তি পর্যায়ে কর কেমন হবে  জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ উৎপাদন, সরবরাহ ও কর্মসংস্থান বাড়াতে করপোরেট কর ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমানো হতে পারে। এ সুবিধা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এবং তালিকাভুক্ত নয়, উভয় ধরনের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে দেয়া হতে পারে। তবে ব্যাংক, বীমা, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মোবাইল অপারেটর কোম্পানি ও তামাকজাত পণ্যের কোম্পানির ক্ষেত্রে করপোরেট কর হার অপরিবর্তিত রাখা হতে পারে। তালিকাভুক্ত কোম্পানির করমুক্ত লভ্যাংশের সীমাও বাড়ানো হতে পারে। বর্তমানে তালিকাভুক্ত কোম্পানির লাভের ৫০ হাজার টাকা করমুক্ত। ব্যক্তি শ্রেণীর আয়কর অপরিবর্তিত থাকতে পারে। বর্তমানে করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা। তবে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাড়ানোর উদ্যোগ থাকবে। সব টিআইএনধারীর রিটার্ন দাখিল নিশ্চিত করতে চায় সরকার।

ঢাকা/ আসাদ/এমএম

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়