পাঠ্যবইয়ে সীমাবদ্ধ না থেকে বিজ্ঞানচর্চার আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর

শুধু পাঠ্যবইয়ে সীমাবদ্ধ না থেকে বিজ্ঞানচর্চা করতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে অনেক সত্যেন বোসকে খুঁজে পেতে চাই আমরা। বড় বড় সাহিত্যিক, বিজ্ঞানী খুঁজে পেতে চাই।’

শুক্রবার (৪ জুন) ১১তম বাংলাদেশ জাতীয় ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের সমাপনী পর্বের অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।

ডা. দীপু মনি বলেন, ‘জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা সারা দেশের সব শিক্ষার্থীর মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। জ্ঞান-বিজ্ঞান বিষয় পাঠ্যসূচির মধ্যে থাকবে, আমরা সেটি পড়ব। মুখস্ত করে পরীক্ষার খাতায় লিখব। ভালো নম্বর পাব। আমাদের বহু বাবা-মা গর্ববোধ করবেন যে, আমার ছেলেমেয়ে ভালো শিখছে। এ জায়গা থেকে বেরিয়ে আমাদের শিক্ষার্থীদের সত্যি সত্যি বিষয়গুলোকে নিয়ে চর্চা করা, বুঝতে পারা, এই বিষয়ের মধ্যে যে আনন্দ আছে, সেটা উপভোগ করা প্রয়োজন। ফিজিক্স অলিম্পিয়াড সে চেষ্টা করছে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় যত রকম ঘাটতি ও বৈকল্য আছে, সেগুলোকে চিহ্নিত ও দূর করার ক্ষেত্রে অলিম্পিয়াডগুলোর বিশেষ ভূমিকা আছে।‘

দীপু মনি বলেন, ‘আমরা একেবারেই যে শ্রেণিকক্ষে আনন্দ দেখতে পাই না, তা নয়। তবে, যে রকম আনন্দ দেখতে চাই, সে রকমটা পাই না। পড়াশোনা মানেই ভয়, পরীক্ষা, চাপ, জিপিএ-ফাইভ নিয়ে বাবা-মায়েদের প্রতিযোগিতা। কিন্তু সারা পৃথিবীতে যত সফল মানুষ আছেন—তারা পরীক্ষায় ভালো ফল করে সফল হয়েছেন, এটি মনে করার কারণ নেই। বহু মানুষ প্রাতিষ্ঠানিক কোনো পরীক্ষাই দেননি। তার মানে এই নয় যে, আমাদের শিক্ষার্থীদের ক্লাসের দরকার নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকাল বাচ্চাদের পড়তে বললে নাকি বলে—বিল গেটস তো পরীক্ষাই শেষ করেননি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তো প্রাতিষ্ঠানিক কোনো ডিগ্রি অর্জন করেননি। কিন্তু আমরা সবাই তো রবীন্দ্রনাথ বা বিল গেটস হবো না। আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রত্যেকেই ভালো মানুষ হবে, মুক্তবুদ্ধির চর্চা করবে, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চার্চা করবে। যার যে বিষয় ভালো লাগে, সে বিষয় চর্চা করবে। আগ্রহ নিয়ে কোনো বিষয় জানবে। নিজের জীবনে যেখানে শিক্ষা প্রয়োগ করা দরকার, করবে। নিরানন্দের শিক্ষা থেকে আমাদের উত্তরণ প্রয়োজন।’