ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সুপারিশের ৭ মাস পরও নিয়োগ নেই, হতাশ সহকারী শিক্ষক চাকরিপ্রার্থীরা

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৪২, ১৬ জুলাই ২০২১  
সুপারিশের ৭ মাস পরও নিয়োগ নেই, হতাশ সহকারী শিক্ষক চাকরিপ্রার্থীরা

সরকারি মাধ‌্যমিক বিদ‌্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে গত ডিসেম্বরে। আরেক ডিসেম্বর ঘনিয়ে আসছে। নিয়োগের সুপারিশ পেয়েও কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার আশায় দিন গুনছেন ২ হাজার ১৫৫ জন প্রার্থী। গত সাত মাসেও তারা কর্মস্থলে যোগ দিতে পারেননি। এ নিয়ে তাদের মধ‌্যে হতাশা তৈরি হয়েছে।

নিয়োগের জন‌্য সুপারিশপ্রাপ্তরা বলছেন, ‘করোনার কারণে দেড় বছর ধরে কোনো নিয়োগ পরীক্ষা নেই। বয়স শেষ হয়ে যাচ্ছে। পরিবার আর কত টানবে? পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) সব ধাপ শেষ করার পর গত ডিসেম্বরে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে। তবে গত ৭ মাসেও আমাদের কোনো পুলিশ ভেরিফিকেশন বা স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়নি। একবার শুরু করে স্বাস্থ‌্য পরীক্ষা স্থগিত করে রেখেছে। কর্মস্থলে যোগ দিতে পারছি না। দিন দিন হতাশা বেড়েই চলছে।’

বাদল সাহা নামের এক প্রার্থী বলেন, ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে বেকার বসে থাকা কতটা কষ্টের, কেবল ওই বেকারই বোঝে। পরিবার থেকে এ সময়ে টাকা আনা মানে চরম লজ্জার বিষয়। আমাদের দেশে চাকরি পাওয়া, বিশেষ করে সরকারি চাকরি পাওয়া খুব কঠিন। আবার, চাকরি পাওয়ার পরও যখন কাউকে দীর্ঘদিন ধরে বেকার থাকতে হয়, তখন এটি আরও কষ্টের।‘

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সুপারিশকৃত প্রার্থীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে স্বাস্থ‌্য পরীক্ষা এখনও শেষ হয়নি। সারা দেশে ৩১১টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট আছে। তাদের দ্রুতই নিয়োগ দেওয়া হবে।

জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১১ সালে শেষবারের মতো ওই বিদ‌্যালয়গুলোতে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছিল। পরে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিসিএস নন-ক্যাডার পরীক্ষার্থীদের মধ্য থেকে অনেককে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। তবে, বিসিএস নন-ক্যাডার প্রার্থীদের মধ্য থেকে পর্যাপ্ত বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক পাওয়া যাচ্ছিল না। এছাড়া, বিসিএস নন-ক্যাডার তালিকা থেকে আসা বেশিরভাগ শিক্ষকই শেষ পর্যন্ত অন্য চাকরিতে চলে যান। ফলে, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকের ঘাটতি রয়ে গেছে।

এসব দিক বিবেচনা করে পিএসসি ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগের জন‌্য একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। বিজ্ঞপ্তির লিখিত পরীক্ষা ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত হয়। মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার পর পিএসসি গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে এবং ২ হাজার ১৫৫ জন প্রার্থীকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (বিদ্যালয়) অধ্যাপক মো. বেলাল হোসাইন বলেছেন, ‘সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের দ্রুত নিয়োগ দিতে প্রার্থীদের ডোপ টেস্টসহ স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছে। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় তা বন্ধ আছে। প্রার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পর দ্রুত সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।’

ইয়ামিন/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়