ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

উপানুষ্ঠানিক শিক্ষায় দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারত্বের ভিত্তিতে কাজ করবে সরকার

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:১৭, ১৭ অক্টোবর ২০২১   আপডেট: ২২:১৭, ১৭ অক্টোবর ২০২১
উপানুষ্ঠানিক শিক্ষায় দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারত্বের ভিত্তিতে কাজ করবে সরকার

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ব্র্যাকের শিক্ষা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন বিএনএফই’র মহাপরিচালক

সরকার উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার ক্ষেত্রে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারত্বের ভিত্তিতে কাজ করবে। রোহিঙ্গা ও হোস্ট কমিউনিটিতে ব্র্যাক দীর্ঘদিন ধরে যে কাজ করছে, তা বেশ ইতিবাচক ও বাস্তবসম্মত। ব্র্যাকের সে অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চায় সরকার। গত শনিবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে ১৫ ও ১৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ব্র্যাকের শিক্ষা কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে কক্সবাজারের এক হোটেলে আলোচনা সভায় উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর (বিএনএফই) মহাপরিচালক মো. আতাউর রহমান এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

রোববার (১৭ অক্টোবর) ব্র‍্যাকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ‌্য জানানো হয়েছে।

ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর উপ-পরিচালক (প্রশাসন) মো. রিপন কবীর লস্কর, ব্র্যাকের শিক্ষা কর্মসূচির পরিচালক সাফি রহমান খান, একই কর্মসূচির চিফ অব পার্টি মো. মাহমুদ হাছান, ব্র্যাকের মানবিক সহায়তা কর্মসূচির (এইচসিএমপি) আওতাধীন শিক্ষা সেক্টরের লিড খান মোহাম্মদ ফেরদৌস ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বিএনএফই মহাপরিচালক রোহিঙ্গা ও হোস্ট কমিউনিটিতে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষায় ব্র্যাকের মাঠ পর্যায়ে কর্মীদের কাজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নতুন কিছু উদ্ভাবন করার তাগিদ দেন।

তিনি বলেন, ‘ব্র্যাকের যে ব্যাপক কার্যক্রম আছে, তা সত্যিই বিস্ময়কর। সংস্থাটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৩ থেকে ১৪ বছর বয়সী ৬৯ হাজার ৪২৩ শিশুকে শিক্ষার আওতায় এনেছে। এর পাশাপাশি হোস্ট কমিউনিটিতে ৩ হাজার ৭৫৯ শিশুকে নিয়ে কাজ করছে সংস্থাটি। ব্র্যাকের এ অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে যৌথ উদ্যোগে নতুন কিছু করতে পারে সরকার ও ব্র্যাক।‘

এর আগে ওই দিন সকালে তিনি কক্সবাজারের কুতুপালংয়ের ১৫ ও ১৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থিত শিশুদের পাঠশালা হিসেবে বিবেচিত ‘ব্র্যাক লার্নিং সেন্টার’ পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি লেভেল-১ থেকে লেভেল-৪ এ অধ্যয়নরত রোহিঙ্গা শিশু, তাদের অভিভাবক, শিক্ষক ও বাবা-মা’র সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সঙ্গে কিছুক্ষণ সময় কাটান। একই সঙ্গে তিনি এ ধরনের শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সঙ্গে ব্র্যাকের সম্পর্ক ১৯৮৫ সাল থেকে। দীর্ঘ সম্পর্কের কারণে নতুন উদ্ভাবনী ধারণা ও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সরকার ব্র্যাকের পাশে থাকবে। এ ক্ষেত্রে যত ধরনের সহযোগিতা দেওয়া দরকার, সরকারের পক্ষ থেকে তা দেওয়া হবে। ব্র্যাকও সরকারের সহযোগী হিসেবে পাশে থাকবে বলে আমি আশা করছি।’

আলোচনা অনুষ্ঠানে এইচসিএমপির আওতাধীন শিক্ষা কার্যক্রম সংক্রান্ত উপস্থাপনা তুলে ধরেন সংশ্লিষ্ট সেক্টর লিড খান মোহাম্মদ ফেরদৌস। এতে বলা হয়, ব্র্যাক এ পর্যন্ত রোহিঙ্গা ও হোস্ট কমিউনিটিতে ৭৩ হাজার ১৮২ জন ছেলে-মেয়েকে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার আওতায় এনেছে। ব্র্যাকের লক্ষ্য—ভবিষ্যতে ১ হাজার সেন্টারের মাধ্যমে ১ লাখ সুবিধাবঞ্চিত শিশুকে এ ধরনের শিক্ষার আওতায় আনা।

প্রসঙ্গত, ক্যাম্পে এলসিএফএ (লার্নিং কম্পিটেন্সি ফ্রেমওয়ার্ক অ‌্যাপ্রোচ- গাইডলাইন ফর ইনফরমাল এডুকেশন প্রোগ্রাম) কারিকুলামের আওতায় লেভেল-১ থেকে লেভেল-৪ পর্যন্ত এবং হোস্ট কমিউনিটিতে বাংলা ভাষায় সরকার অনুমোদিত প্রাথমিক শিক্ষা কারিকুলামের মাধ্যমে প্রি-প্রাইমারি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা দেওয়া হয়। এছাড়া, মিয়ানমারের কারিকুলামের আলোকে রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভাষায় ষষ্ঠ থেকে নবম গ্রেড পর্যন্ত এ শিক্ষা দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। সরকারের সহযোগিতায় ইউনিসেফ, ইউএনএইচসিআর, এডুকেশন ক্যান নট ওয়েট, দুবাই কেয়ারস, অস্ট্রেলিয়ান সরকারের ডিপার্টমেন্ট অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ট্রেড, হিলটন ফাউন্ডেশন, এডুকেট এ চাইল্ড, নিপ্পন ফাউন্ডেশন, পর্টিকাস, ইউবিএসের অর্থায়নে ব্র্যাক এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।

ঢাকা/হাসান/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়