ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

একই বিষয়ে বছরের পর বছর পরীক্ষা, তারপরও অধিকাংশই ফেল! 

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৫১, ২৩ নভেম্বর ২০২১   আপডেট: ২১:৩৫, ২৩ নভেম্বর ২০২১
একই বিষয়ে বছরের পর বছর পরীক্ষা, তারপরও অধিকাংশই ফেল! 

সাফিয়া খাতুন (ছদ্মনাম)। ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) তার প্রথম বর্ষের একটি বিষয়ের (রসায়ন-১ নন মেজর) পরীক্ষা ছিলো। পরীক্ষা শেষে ইডেন কলেজ কেন্দ্র থেকে চোখ মুছতে মুছতে বের হয় সে। 

পরীক্ষা কেমন হয়েছে জানতে চাইলে সাফিয়া বলেন, সাত কলেজের নন মেজর রসায়ন-১ বিষয়ের বিশেষ পরীক্ষা ছিলো আজ। যেখানে পরীক্ষার্থী ছিলো ২০০৯-১০ সেশন থেকে শুরু করে ২০১৬-১৭ সেশনের। পুরাতন সিলেবাসে প্রশ্ন হওয়ার কথা থাকলেও কীভাবে প্রশ্ন সাজিয়েছে সেটা ঢাবি কর্তৃপক্ষই জানেন। সময় দুই ঘণ্টা, পূর্ণমান ৮০। প্রশ্নে নম্বর বাড়িয়ে দিলেও এমনভাবে সাজিয়েছে, উত্তরে লিখতে হবে ১৭টি প্রশ্ন। এই অল্প সময়ে কীভাবে সম্ভব?

কান্না বিজড়িত কণ্ঠে এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘প্রশ্ন এতটাই কঠিন করেছে, হলে নরমাল নজরদারি থাকা স্বত্বেও শিক্ষার্থীরা পাস মার্ক তোলার মতো উত্তর দিতে পারেনি। সিলেবাস কোনোভাবেই ফলো করা হয়নি। এভাবে আর কত বছর? বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই অনার্সের সব বর্ষ শেষ করে বসে আছে তিন-চার বছর ধরে। শুধু এই একটা বিষয়ে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়ার প্রয়োজন মনে করছে না কর্তৃপক্ষ। কঠিন টাইপের প্রশ্ন প্রণয়ন করে বছরের পর বছর ঝুলিয়ে রাখছে। এ নিয়ে সাত বার দিলাম। একবারও কি পাস করার মতো লিখিনি? না হলে বাকি বর্ষগুলো উত্তীর্ণ হলাম কীভাবে।’ 

‘এদিকে চাকরিতে আবেদনের বয়সও শেষের দিকে। সামনের বার পরীক্ষা দিলেই যে পাস হবে সেই ভরসাও পাই না। নন মেজর বিষয় নিয়ে এতটা কঠোর না হলেও হতো। বছরের পর বছর ফরম ফিলাপের টাকাকে ব‌্যবসা হিসেবে মনে করে থাকলে আমাদের বলুক, একেবারে দিয়ে দিই। তবুও আর হয়রানি নয়।’

ওই শিক্ষার্থীর দাবি, আজকের পরীক্ষায় ৯৮ শতাংশই ফেল করবে। নিজের মতো আরও অনেককেই কাঁদতে দেখেছে সে। বেশিরভাগের ২০১৭ সালেই অনার্সের সব বর্ষ ক্লিয়ার। 

আকুতি জানিয়ে সাফিয়া বলেন, আমরা অনেক বছর পিছিয়ে গেছি। কোনো নিয়মকানুনের বালাই নেই। যখন যেভাবে মন চাচ্ছে খাতা দেখতে, রেজাল্ট দিচ্ছে। হয়রানির উপর হয়রানি। এভাবে আর কত! আমাদের প্রতি সুবিচার করুন। হয়তো পাস দিন, না হলে ফের পরীক্ষার ব্যবস্থা করুন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যাঁড়াকলে পড়ে আমাদের জীবনটা এমনিতেই শেষ।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহালুল হক চৌধুরী ব‌লেন, বিষয়‌টি জানা ছি‌লো না। আপনাদের মাধ্যমে মাত্র জান‌তে পারলাম। বুধবার (২৪ নভেম্বর) এটি নি‌য়ে আমরা আলোচনা করবো। এমন‌টি কেন ঘটেছে সে‌টিও জানা‌তে পার‌বো।

/এনএইচ/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়