শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবরুদ্ধ ভিসিকে উদ্ধার, সংঘর্ষ

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবরুদ্ধ ভিসিকে উদ্ধার করে বাসভবনে পৌঁছে দিয়েছে পুলিশ। বোববার (১৬ জানুয়ারি) বিকেল ৩টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি শিক্ষাভবনে তিন দফা দাবিতে ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অবরুদ্ধ করে রাখে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। 

সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে তাকে উদ্ধার করে বাসভবনে পৌঁছে দেয়া হয়। তখন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পুলিশের বিশেষ টিম সিআরটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। শিক্ষার্থীরাও প্রতিরোধ গড়ে তোলে। একপর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী ছাত্রী হলের প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবি আদায় এবং ছাত্রীদের চলমান আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগে রোববার সকাল ৮টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর সংলগ্ন রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। 

পরে দুপুর ৩টার দিকে গোলচত্বরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক জহীর উদ্দীন আহমদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. তুলসী কুমার দাস, প্রক্টর ড. আলমগীর কবির এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মহিবুল আলমসহ অন্যান্য শিক্ষকরা। 

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়ে হলের গুণগত মান উন্নত করা এবং অব্যবস্থাপনার সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এজন্য তিনি শিক্ষার্থীদের কাছে সাত দিনের সময় চান। কিন্তু শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি না মানার পরিপ্রেক্ষিতে তারা বর্ধিত সময় দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন। এরপরে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের পিছু নেন এবং অর্জুন তলা থেকে ফিরে রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে গেলে ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে সামনে পান। তখন শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পিছু নিয়ে ধিক্কার ধিক্কার স্লোগান দিতে থাকে। তখন উপাচার্যকে নিয়ে উপস্থিত শিক্ষক ও কর্মকর্তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনে ঢুকলে শিক্ষার্থীরা সেখানে ভিসিকে অবরুদ্ধ করেন।

ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত করার জন্য সাড়ে ৩টার দিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে ধাক্কাধাক্কি ও বাকবিতণ্ডা হয়। বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনের সামনে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন হয়। সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভিসিকে উদ্ধার করে তার বাসভবনে পৌঁছে দেয়া হয়।

জালালাবাদ থানার ওসি নাজমুল হুদা জানান, ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ কে নিরাপদে বাসভবনে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। আহতদের ব্যাপারে তাৎক্ষণিক তিনি কিছু জানাতে পারেননি।

তিনদফা দাবিতে বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) রাত থেকে আন্দোলন করে আসছে শিক্ষার্থীরা।