অবসরের আবেদন ঢাবি অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষের
অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ
চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অবসরে যেতে আবেদন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ।
এর আগে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির দায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে তাকে।
অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অবসরের আবেদন করেছি। এ বিষয়ে আর কোন মন্তব্য করতে চাই না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিষ্ট্রার আব্দুল কুদ্দুছ ভূঞা বলেন, এখনও আমাদের কাছে তার অবসরের আবেদন এসে পৌঁছায়নি। হাতে হলে নিয়ম অনুযায়ী প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষের ২০২৩ সালে চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা।
জানা গেছে, গত মার্চে বিভাগের চেয়ারম্যান সৈয়দ আজিজুল হকের কাছে বিশ্বজিৎ ঘোষের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের লিখিত অভিযোগ দেন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী। ২৯ মার্চ বিভাগের একাডেমিক কমিটির সভায় অভিযোগটি উত্থাপন করা হলে কমিটি সর্বসম্মতভাবে বিশ্বজিৎ ঘোষের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বিশ্বজিৎ ঘোষসহ ১৮ শিক্ষক ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলা বিভাগের একাডেমিক কমিটির ওই সভার কার্যবিবরণীতে বলা হয়, বিশ্বজিৎ ঘোষের বিরুদ্ধে একজন শিক্ষার্থীর আনা যৌন নিপীড়নের লিখিত অভিযোগের বিষয়টি বিভাগের চেয়ারম্যান একাডেমিক কমিটির সামনে উপস্থাপন করেন। তিনি ওই ছাত্রীর অভিযোগপত্রটি পড়ে শোনান। কমিটির সদস্যরা এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। বিশ্বজিৎ ঘোষ ওই ঘটনায় তার ভুল হয়েছে বলে মনে করেন। তিনি সবার কাছে ‘ক্ষমা প্রার্থনা ও করুণা ভিক্ষা’ করেন। কিন্তু একাডেমিক কমিটির সদস্যরা তার দ্বারা সংঘটিত অতীতের বিভিন্ন যৌন নিপীড়নের ঘটনার কথা উল্লেখ করে তার পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রার্থনা গ্রহণ করেননি।
বিশ্বজিৎ ঘোষ নিজেকে নির্দোষ দাবি করলেও সভায় উপস্থিত শিক্ষকদের কাছে তা সত্য বলে মনে হয়নি। বরং তার ‘ক্ষমা প্রার্থনা ও করুণা ভিক্ষার’ ঘটনায় তার অপরাধ স্বীকারের বিষয়টিই প্রমাণিত হয়।
ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে গত ২৯ মার্চ বিশ্বজিৎ ঘোষকে সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়াসহ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের একাডেমিক কমিটি।
কার্যবিবরণীতে বলা হয়, একাডেমিক কমিটি সর্বসম্মতভাবে বিশ্বজিৎ ঘোষের বিরুদ্ধে কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এগুলো হলো- সব একাডেমিক কার্যক্রম (সব ধরনের ক্লাস নেওয়া, পরীক্ষায় প্রত্যক্ষণ, উত্তরপত্র মূল্যায়ন, এমফিল-পিএইচডি গবেষণা তত্ত্বাবধায়ন, পরীক্ষা কমিটির কাজে অংশগ্রহণ প্রভৃতি) থেকে বিশ্বজিৎ ঘোষকে অব্যাহতি দেওয়া, ভবিষ্যতে তাকে কোনো একাডেমিক কার্যক্রমে যুক্ত না করা, সিঅ্যান্ডডি ও একাডেমিক কমিটির সভায় তাকে না ডাকা, বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে তার নামে বরাদ্দ থাকা বিভাগীয় কক্ষ বাতিল, আরও বৃহত্তর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করা হবে কি না, অভিযোগকারীর মতামত সাপেক্ষে সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং তদন্তের সময়ও একাডেমিক কমিটির এসব সিদ্ধান্ত বহাল রাখা।
/ইয়ামিন/এসবি/
আরো পড়ুন