ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ভাড়া ভবনে চলছে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড, ঝুঁকিতে নথিপত্র 

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩৩, ২৯ মে ২০২২   আপডেট: ১৬:৪৮, ২৯ মে ২০২২
ভাড়া ভবনে চলছে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড, ঝুঁকিতে নথিপত্র 

ভাড়া ভবনে চলছে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের সব কার্যক্রম

পাঁচ বছর আগে দেশের ১১তম শিক্ষা বোর্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় ময়মনসিংহ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দুটি ভাড়া ভবনে চলছে বোর্ডের কার্যক্রম। নিজস্ব ভবন না থাকায় তাই কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র। পাশাপাশি পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় ব্যহত হচ্ছে বোর্ডের বিভিন্ন সেবা।

এদিকে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও গত বছর এসএসসিতে পাশের হারে সারা দেশে প্রথম হয়েছিল ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড।

জানা যায় ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, শেরপুর এবং জামালপুর এই চার জেলা নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে ময়মনসিংহ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। 

ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.গাজী হাসান কামাল বলেন, ‘বর্তমানে নগরীর কাঠগোলায় পৃথক দুটি ভবনে চলছে বোর্ডের কার্যক্রম। এক অফিস থেকে আরেক অফিসের দুরুত্ব প্রায় আধা কিলোমিটার। দুই অফিসে সমন্বয় করে কাজ করতে হয় কর্মকর্তা কর্মচারীদের। এদিকে নিজস্ব ভবন না থাকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় থাকতে হয়। যদিও আমরা গুরুত্বপূর্ণ নথির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করছি। নিজস্ব ভবন থাকলে বিষয়টি সহজ হতো।’

তিনি আরো বলেন, ‘এই শিক্ষাবোর্ডের জন্য ১৪০ জন জনবলের প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে এখানে কর্মরত আছেন ৩৩ জন। স্বল্প সংখ্যক জনবল দিয়েই দিনরাত কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভবন দুটি পৃথক হওয়ায় এক ভবন থেকে অন্য ভবনে দৌঁড়ঝাপ করে কাজ করতে হচ্ছে। জায়গারও সংকুলান হচ্ছে না।’ 

ময়মনসিংহ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (উচ্চ মাধ্যমিক) এসএম মোবাশ্বির হোসাইন বলেন, ‘ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে প্রায় তিন হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। সংকীর্ণ ভবনে কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে কিছুটা বেগ পেলেও আমরা সমন্বয় করে তা করতে পারছি। মন্ত্রণালয়ে সার্বিক সুযোগ-সুবিধার জন্য আবেদন করা হয়েছে। সেগুলো বাস্তবায়ন হলে আশাকরি সমস্যা দূর হয়ে যাবে।’  

উপ-সচিব প্রশাসন ও সংস্থাপন মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এখন জায়গা স্বল্পতায় কম্পিউটার ল্যাবের কার্যক্রম ঠিক মতো করা যাচ্ছে না। সবচেয়ে বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় বিদ্যুৎ চলে গেলে। সব শিক্ষা বোর্ডে অবিরত বিদ্যুৎ প্রবাহ রয়েছে। আমাদের নিজস্ব কার্যালয় না থাকায় সে সুবিধা পাচ্ছি না। লাখ লাখ শিক্ষার্থীর মার্কশিট স্ক্যান করতে হয়। প্রতিটি পরীক্ষার রেজাল্ট নির্ধারিত তারিখে প্রকাশ করতে হয়। কিন্তু বিদ্যুৎ চলে গেলে তা নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। গুরুত্বপূর্ণ কাজও আটকে থাকে।’

ময়মনসিংহ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. গাজী হাসান কামাল বলেন, ‘সম্প্রতি ব্রহ্মপুত্র নদের ওপাড়ে বিভাগীয় সদর দপ্তরে শিক্ষা বোর্ডের কার্যালয় স্থাপনের জন্য ১০ একর জমির জন্য বিভাগীয় কমিশনার বরাবর আবেদন করা হয়েছে। তবে আধুনিক শিক্ষাবোর্ড নির্মাণে হয়তো ছয় একরের মতো জমি আমরা পেতে পারি। ইতোমধ্যে শিক্ষা প্রকৌশলী দ্বারা আধুনিক শিক্ষা বোর্ড নিমার্ণের জন্য মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। দশ তলা ভবন নির্মাণের পাশাপাশি খেলার মাঠ, গোডাউন, মসজিদ, ওয়্যার হাউজ, ক্যান্টিন, কনফারেন্স রুম, রেস্ট হাউজ, স্কুল এন্ড কলেজ, শহীদ মিনার, বঙ্গবন্ধু কর্ণারসহ সব ধরণের সুযোগ সুবিধা থাকবে।’ 

তিনি আরো বলেন, ‘বোর্ড পরিচালনায় সুযোগ-সুবিধা না থাকলেও আমরা অন্য বোর্ডের চেয়ে ফলাফলের দিক দিয়ে এগিয়ে রয়েছি। আমাদের টার্গেট শিক্ষার মানে দেশে অন্যতম হওয়া।’  

ময়মনসিংহ বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিভাগীয় অফিস স্থাপনের জন্য জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি একনেক সভায় অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। আশা করছি দ্রুত অনুমোদন হলে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপাড়ে বিভাগীয় সদর দপ্তরের কাজ শুরু হবে। সেখানে  শিক্ষা বোর্ড স্থাপনের কাজও গুরুত্ব পাবে।’

মিলন/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়