মনোদৈহিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের গল্প ‘চিত্রাঙ্গদা’

মহাবীর অর্জুন সত্যপালনের জন্য একযুগ ব্রহ্মচর্যব্রত গ্রহণ করে মণিপুর বনে যান। মণিপুরের রাজকন্যা চিত্রাঙ্গদা অর্জুনের প্রেমে উদ্বেলিত হলেও অর্জুন রূপহীন চিত্রাঙ্গদাকে প্রত্যাখ্যান করেন। অপমানিত হয়ে চিত্রাঙ্গদা প্রেমের দেবতা মদন এবং যৌবনের দেবতা বসন্তের সহায়তায় এক বছরের জন্য অপরূপ সুন্দরীতে রূপান্তরিত হন। তারপর অর্জুন চিত্রাঙ্গদার প্রেমে পড়েন। কিন্তু অর্জুনকে লাভ করেও চিত্রাঙ্গদার অন্তর দ্বন্দ্বে ক্ষতবিক্ষত হতে থাকে, অর্জুন প্রকৃতপক্ষে কাকে ভালোবাসেন, চিত্রাঙ্গদার বাহ্যিক রূপ নাকি তার প্রকৃত অস্তিত্বকে?

এভাবে চিত্রাঙ্গদা পৌরাণিক কাহিনির আড়ালে যেন এ কালেরই নর-নারীর মনোদৈহিক সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং পাশাপাশি পারস্পরিক সম্মানাবস্থানের প্রেরণারূপে উপস্থাপিত হয়। একইসঙ্গে এতে প্রকাশিত হয় সেই অনিবার্য সত্য, যা বাহ্যিক রূপের চেয়ে অনেক বেশি মূল্যবান নারী-পুরুষের চারিত্রিক শক্তি। এতেই প্রকৃতপক্ষে আত্মার স্থায়ী পরিচয়।

এমন গল্প নিয়ে গড়ে উঠেছে ‘চিত্রাঙ্গদা’ নাটকের কাহিনি। ২০১১ সালে নাট্যসংগঠন স্বপ্নদল মঞ্চে নিয়ে আসে দর্শকপ্রিয় এ প্রযোজনা। এরপর দেশ-বিদেশি প্রশংসা কুড়ায় এ নাটক। আগামী ২২ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে এ নাটকের ৭৯তম মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হবে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিরায়ত সৃষ্টি চিত্রাঙ্গদার গবেষণাগার নাট্যরীতিতে নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন জাহিদ রিপন। স্বপ্নদলের এ প্রযোজনা নির্মিত হয়েছে রবীন্দ্রনাথের কাব্যনাট্য চিত্রাঙ্গদা পাণ্ডুলিপি অবলম্বনে। এ নাটকের বিভিন্ন চরিত্র রূপায়ন করছেন—সোনালী, জুয়েনা, শিশির, শ্যামল, অর্ক, হ্যাপী, সুমাইয়া, সামাদ, ঊষা, সম্রাট, আলী, বিপুল, অনিন্দ, অমর, মাসুদ, সুকুমার, শঙ্কর প্রমুখ।


ঢাকা/শান্ত