ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

সম্মুখ বাস্তবতার সফল মঞ্চায়ন ‘জলবাসর’

বিনোদন ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:০০, ২৫ জানুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সম্মুখ বাস্তবতার সফল মঞ্চায়ন ‘জলবাসর’

গতকাল ২৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটারে হয়ে গেল ‘জলবাসর’-এর উদ্বোধনী মঞ্চায়ন। এটি দেশ নাটকের ২৩তম প্রযোজনা।

আজ নাটকটির দ্বিতীয় শো প্রদর্শিত হবে সন্ধ‌্যা ৭টায় শিল্পকলা একাডেমির একই মঞ্চে।

মাসুম রেজার রচনা ও নির্দেশনায় নাটকটির সফল মঞ্চায়নের জন‌্য গত ৯ মাস ধরে অনুশীলন করে আসছিল দলটি। তাদের প্রচেষ্টা যে সার্থক হয়েছে নাটক শেষে দর্শকের প্রতিক্রিয়ায় তা ফুটে উঠেছে।

‘জলবাসর’ মূলত সম্মুখ বাস্তবতার নাটক। এই রীতিকে জাদুবাস্তবতার ধারায় অন্তর্ভুক্ত করা যায়। নমস‌্য নাট‌্যকার সেলিম আল দীন ‘নিমজ্জন’ নাটকে এই রীতির কথা বলেছিলেন। দর্শক বহুদিন পর সেই রীতির সফল প্রয়োগ উপভোগ করলেন জলবাসরে। নাটকটির মূল বক্তব‌্য আগামীর পরিবেশ।

ভয়ানকভাবে পরিবেশগত যে বিপর্যয়ের সম্মুখীন এই নিগূঢ় সত‌্য নাটকে উঠে এসেছে। জল, জঙ্গল, মাটি, গিরিশৃঙ্গ নষ্ট করে আমরা কোথায় যাত্রা করছি- জলবাসর এই প্রশ্নটি আরেকবার মনে করিয়ে দিয়েছে। ফলে এ নাটকে জাদুবাস্তব সাহিত‌্যের সীমা অতিক্রম করার প্রবণতা লক্ষ‌্য করা যায়। যা বর্তমান সময়কে অতিক্রম করে দর্শককে নিয়ে যায় ভবিষ‌্যতে।

নাটকের গল্প তিন বোনকে কেন্দ্র করে। চান্নিপসর আর ডুবদহ গ্রামের বাসিন্দা তারা। মানুষের শরীর থেকে ছায়া আলাদা হয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ায়। হরিণের দেহ থেকেও তার ছায়া নিরুদ্দেশ হয়। নাটকে চলে সেই ছায়ার সন্ধান। এক পুরুষের ছায়ার সঙ্গে নারীর মিলন ঘটে। জন্ম হয় এক অদ্ভুত যমজের। অর্থাৎ অতিপাকৃতিক উপাদান এই নাটকের ঘটনাবলিকে সামনে নিয়ে গেছে। যার মাধ‌্যমেই ফুটে উঠেছে সম্মুখ বাস্তবতার ভয়াবহ সত‌্য।

নির্দেশক ও নাট‌্যকার মাসুম রেজা বলেন, ‘জলবাসরে আমি মূলত ন‌্যাচারাল সেটিংস তৈরি করেছি। মহাভারতে কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব‌্যাস যা লিখেছেন তা ঘটতে থাকে। যা ঘটে তা দেখে তিনি লিখেছেন বিষয়টি তা নয়। এটা এক ধরনের লেখার কৌশল। এই নাটকে এরকম একটি লেখার কৌশলে রয়েছে। তবে আমার নাটকের গল্প পুরোপুরি মৌলিক।’

প্রথম মঞ্চায়নে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাট‌্যজন নাসিরউদ্দিন ইউসুফ, সালাউদ্দিন লাভলু প্রমূখ।

প্রথম মঞ্চায়ন উপভোগ করেন রাইজিংবিডির উপদেষ্টা সম্পাদক উদয় হাকিম। তিনি বলেন, নাটকের গাঁথুনি চমৎকার। সংলাপগুলো অসাধারণ। নাটকীয়তা ছিল প্রতিটি মুহূর্তে। অভিনয়শৈলী, সেট সবই ছিল প্রশংসনীয়। দর্শক মন্ত্রমুদ্ধের মতো নাটকটি উপভোগ করেছেন। উপজীব‌্য হিসেবে প্রকৃতি এবং প্রেম নাটকটিকে করেছে অনন‌্য।

নাটকে মোট ১৭টি চরিত্র রয়েছে। এসব চরিত্র রূপায়ন করেন—নাজনীন চুমকি, বন্যা মির্জা, সুষমা সরকার, ফিরোজ আলম, কামাল আহমেদ, তিথিসহ অনেকে। নাটকের কস্টিউম ডিজাইন করছেন বন্যা মির্জা, আলোক পরিকল্পনা করছেন টিটু, মঞ্চ পরিকল্পনায় ছিলেন মুকুল। পোস্টার ডিজাইন করছেন আফজাল হোসেন।

নাটকটির অভিনয় নির্দেশনায় ছিলেন ইশরাত নিশাত। সম্প্রতি তার প্রয়াণে তাকে উৎসর্গ করেই নাটকের সবগুলো মঞ্চায়ন হবে বলে জানানো হয়েছে।

 

আলোকচিত্র: উদয় হাকিম


ঢাকা/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়