ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

করোনা আতঙ্ক, তবু চলছে অশ্লীল সিনেমা

রাহাত সাইফুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪৯, ১৬ মার্চ ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
করোনা আতঙ্ক, তবু চলছে অশ্লীল সিনেমা

ফাইল ফটো

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়েছে করোনা আতঙ্ক। এরই মধ্যে বাংলাদেশেও কয়েকজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। হলিউড, বলিউড, টলিউড থেকে শুরু করে সকল শোবিজ অঙ্গনে এই ভাইরাসের প্রভাব পড়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে শুটিং। এরই মধ্যে দেশের কয়েকটি সিনেমার শুটিংও বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া সিনেমা মুক্তির তারিখও পিছিয়ে দিচ্ছেন প্রযোজকরা। চারিদিকে যখন করোনা আতঙ্ক ঠিক তখন দেশের কিছু প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হচ্ছে অশ্লীল সিনেমা।

চলতি সপ্তাহে রাজধানীর আজাদ সিনেমা হলে প্রদর্শিত হচ্ছে ‘চ্যালেঞ্জের মুখে’ সিনেমা। এর পোস্টারে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গিতে দেখা যায় শিল্পীদের। এ সিনেমার পোস্টার দেখে পথচারীরাও লজ্জায় মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। বিশেষ করে নারী পথচারীরা বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন।

বলে রাখা ভালো, অশ্লীলতার সময় এক সিনেমার গান বিভিন্ন সিনেমায় কাটপিস হিসেবে ব্যবহার করা হতো। স্বাভাবিক কারণে যেসব সিনেমায় এই কাপটিস ব্যবহার করা হতো সেসব সিনেমা অশ্লীল সিনেমা বলেই গন্য হতো। যদিও এখন হল মালিকগণ দাবি করছেন, এসব সিনেমায় কাটপিস ব্যবহার করা হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অশ্লীল এই চলচ্চিত্রগুলো ডিজিটাল ফরম্যাটে রূপান্তর করে বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজধানীর বেশ কয়েকটি হলে এসব অশ্লীল সিনেমা প্রদর্শিত হচ্ছে। এ নিয়ে সিনেমা সংশ্লিষ্টদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। অনায়াসেই রাজধানীর বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে এসব সিনেমা প্রদর্শিত হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে সিনেমার যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তা খুব শিগগির মুখ থুবড়ে পড়বে বলে চলচ্চিত্র বোদ্ধারা মনে করছেন।

প্রেক্ষাগৃহে এখনো অশ্লীল সিনেমা প্রদর্শনের কথা স্বীকার করেছেন হল মালিক সমিতির সভাপতি কাজী শোয়েব রশিদ। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘এখনো অশ্লীল সিনেমা চালানো হয়। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের কিছু করার থাকে না। কারণ অনেক সিনেমা হলের মালিক আমাদের সংগঠনের সদস্য নয়। সদস্য হলে আমরা শাস্তির ব্যবস্থা করতে পারতাম। গাজীপুরে এখনো অশ্লীল সিনেমা চলে। আশা করছি, খুব শিগগির সকল হল মালিকদের সংগঠনের সদস্য করে নেব। এরপর আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারব।’

চলচ্চিত্রের সোনালি যুগের অবসানের পর নব্বই দশকের শেষের দিকে ঢাকাই চলচ্চিত্রে কাটপিস সিনেমার আগ্রাসন শুরু হয়। ২০০০ সালের দিকে বাংলাদেশের কয়েকজন নায়িকার বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে অশ্লীল দৃশ্যে অভিনয়ের অভিযোগ ওঠে। যে কারণে সিনেমাপ্রেমী মানুষ হলবিমুখ হতে শুরু করে। এর পরই ঢাকাই চলচ্চিত্র মুখ থুবড়ে পড়ে।

সরকারের কঠোর মনোভাব আর চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের একান্ত প্রচেষ্টায় বর্তমানে অশ্লীল চলচ্চিত্র নির্মাণের আর সুযোগ নেই। নির্মিত হচ্ছে ভালোমানের সিনেমা। চলচ্চিত্রের নতুন সম্ভাবনা তৈরিও হয়েছে। নতুন নতুন প্রযোজক আবার অর্থ লগ্নী করছেন। সিনেমাপ্রেমীরা আবারো পরিবার-পরিজন নিয়ে হলে যাওয়া শুরু করছেন। ঠিক এ অবস্থায় দেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে অশ্লীল সিনেমার প্রদর্শন। যা প্রত্যাশিত নয়, এগুলো দ্রুত বন্ধ করতে হবে বলে জানিয়েছেন কাজী শোয়েব রশিদ।


ঢাকা/রাহাত সাইফুল/শান্ত

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়