ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

রাইজিংবিডিতে খবর প্রকাশের পর সেই স্টান্টম্যানের পাশে অপু

প্রকাশিত: ০৭:০৬, ৯ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রাইজিংবিডিতে খবর প্রকাশের পর সেই স্টান্টম্যানের পাশে অপু

চলচ্চিত্রে কাজ করতে গিয়ে পঙ্গুত্ববরণ করে ঘরে বসে আছেন ফাইটার ও স্টান্টম্যান আমিনুল। অর্থাভাবে তার জীবন কাটে। কয়েকদিন আগে রাইজিংবিডিতে আমিনুলকে নিয়ে ‘স্টান্টম্যানের আর্তনাদ: দুধের বাচ্চাকেও খাওয়াতে পারিনি’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এই প্রতিবেদন দেখে স্টান্টম্যান আমিনুলের পাশে দাঁড়িয়েছেন চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস।

আমিনুল ২০১৪ সালে শাকিব খান প্রযোজিত ও অভিনীত ‘হিরো দ্য সুপার স্টার’ সিনেমার শুটিং এফডিসির কড়ইতলায় করছিলেন। এসময় জাম্প দিতে গিয়ে আমিনুলের ঘার নিচে পড়ে যায়। সেখানেই জ্ঞান হারান তিনি। পরে শুটিং সেটের লোকজন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এর পর থেকেই তিনি একরকম অচল। এদিকে করোনা মহামারিতে গৃহবন্দি তিনি। তার এই অসহায় মুহূর্তে অপু বিশ্বাস আর্থিক সহযোগিতা করেছেন বলে রাইজিংবিডিকে জানিয়েছেন আমিনুল।

আমিনুল বলেন, ‘আমার এই বিপদের সময় অপু বিশ্বাস যে সহযোগিতা করেছেন। এজন্য আমি তার কাছে কৃতজ্ঞ। অনেকেই তো আছেন, কিন্তু তারা তো খোঁজও নিচ্ছে না।’

এ প্রসঙ্গে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘‘দেখুন এই বিষয়টি একদমই মানবিক। এ নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছিলাম না। ‘হিরো দ্য সুপার স্টার’ সিনেমার শুটিংয়ের সময় আহত হয়। এর পর তার অবস্থা এতটা খারাপ তা জানতাম না৷ রাইজিংবিডির প্রতিবেদন দেখে আমার খুব খারাপ লাগে। পরবর্তীতে তার মোবাইলে যোগাযোগ করি। আপদকালীন সময়ে যতটুকু পেরেছি তার পাশে থেকেছি। যাদের জন্য আমিনুলের এই দুর্দশা, তাদের আগেই এগিয়ে আসা উচিত ছিল। আমি বলব, এটা আমাদের দুর্ভাগ্য।’’

আমিনুল নব্বইয়ের দশকে ঢাকায় এসে যোগ দেন ফাইট গ্রুপে। চলচ্চিত্রকে ভালোবেসে ৪০-৫০টি চলচ্চিত্রে স্টান্টম্যান ও ৭০টি চলচ্চিত্রে ফাইটের দৃশ্যে অভিনয় করেন।

আরো পড়ুন: স্টান্টম্যানের আর্তনাদ: দুধের বাচ্চাকেও খাওয়াতে পারিনি

এর আগে আমিনুল এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আক্ষেপ করে বলেন, ‘শাকিব খান সেই সময় শুধু হাসপাতালের বিলটা দিয়েছিলেন। এরপর প্রত্যেক দিন ৪-৫ শ’ টাকার ঔষধ খেতে হয়েছে। সে টাকা কেউ দেয়নি। শুধু আরমান ভাই পাশে ছিলেন। এছাড়া এফডিসি থেকে সহযোগিতা করার কথা ছিল। শেষ পর্যন্ত তাও পেলাম না। এ দিকে তখন আমার বাচ্চার দুধ কেনার সামর্থ্য ছিল না। আমার দুধের বাচ্চাকেও ঠিকমতো খাওয়াতে পারিনি। আমি এখনকার সব শিল্পীর সঙ্গে কাজ করেছি, কিন্তু কেউ আমাকে সহযোগিতা করেননি।’

করোনা সংক্রমণে চলচ্চিত্রের সব কার্যক্রম বন্ধ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘করোনায় সবকিছু বন্ধ থাকায় আয় রোজগারও বন্ধ। দুইটা সন্তান নিয়ে এখন দিশেহারা। শুনেছি, এফডিসিতে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আমি এখন পর্যন্ত কিছুই পেলাম না। শিল্পী সমিতির সদস্যপদ স্থগিত করায় শিল্পী সমিতি থেকেও কিছু দেওয়া হচ্ছে না।’

আমিনুল এখন স্বাভাবিকভাবে কোনো কাজ করতে পারছেন না। নিয়তির উপর আক্ষেপ করে বলেন, ‘চলচ্চিত্র আমার জীবন শেষ করে দিয়েছে। আমি এখন অচল। ভারি কোনো কাজ করতে পারছি না। চলচ্চিত্রে কত মানুষের সঙ্গে কাজ করেছি। কেউ কোনো দিন দু’ পয়সা দিয়ে সাহায্য করল না। আমার দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ কী তাও জানি না।’

 

ঢাকা/রাহাত সাইফুল/শান্ত

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়