ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

অনুদানের সিনেমা নিয়ে গড়িমসি, মামলাতেও টনক নড়ছে না

রাহাত সাইফুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪৩, ২৭ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ১০:৩৬, ২৮ অক্টোবর ২০২০
অনুদানের সিনেমা নিয়ে গড়িমসি, মামলাতেও টনক নড়ছে না

‘যৌবতী কন্যার মন’ সিনেমার দৃশ্য

চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে সরকার প্রতিবছরই অনুদান দিয়ে থাকে। চলচ্চিত্রশিল্পে মেধা ও সৃজনশীলতাকে উৎসাহ দিতে ১৯৭৬ থেকে সরকারি অনুদান প্রথা চালু হয়। কিন্তু সরকারি অনুদানের সিনেমার অধিকাংশই আলোর মুখ দেখছে না। অনুদানপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র নয় মাসের মধ্যে নির্মাণের নিয়ম থাকলেও নির্ধারিত সময়ে বেশিরভাগ নির্মাতাই চলচ্চিত্র জমা দিতে পারেন না।

এদিকে নির্ধারিত সময়ে সিনেমা মুক্তি না দেওয়ায় গত ২৫ অক্টোবর কবি ও নির্মাতা টোকন ঠাকুরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর বিষয়টি নিয়ে হইচই পড়ে যায়। অন্যদিকে সরকারি অনুদান পাওয়ার পর দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও অনেক সিনেমা আলোর মুখ দেখেনি। অনুদানের সিনেমা নিয়ে যেন ধুম্রজাল কাটছেই না!

বিভিন্ন বছর অনুদান পাওয়া যেসব সিনেমা এখনো আলোর মুখ দেখেনি তার তালিকায় রয়েছে-এনামুল করিম নির্ঝরের ‘নমুনা’, চিত্রনায়ক উজ্জ্বলের ‘উদয় তারা’, আখতারুজ্জামানের ‘সূচনা রেখার দিকে’, মারুফ হাসান আরমানের ‘নেকড়ে অরণ্য’সহ ২০টির মতো চলচ্চিত্র।

২০১১-১২ সালে অনুদান পাওয়া ‘একা একা’ চলচ্চিত্রের পরিচালক সৈয়দ সালাউদ্দীন জাকী অসুস্থতার কারণে সিনেমাটি নির্মাণ করতে পারেননি। ২০১২-১৩ অর্থবছরে অনুদান পাওয়া নির্মাতা তারেক মাসুদের ‘কাগজের ফুল’ চলচ্চিত্রের কাজ নির্মাতার মৃত্যুর পর থেকেই আটকে আছে। একই বছরে অনুদান পাওয়া ‘যৌবতী কন্যার মন’ সিনেমাটি মুক্তি দিতে পারেননি নির্মাতা নারগিস আকতার। এজন্য ২০১৬ সালে পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল তথ্য মন্ত্রণালয়।

২০১৪-১৫ অর্থবছরে অনুদানপ্রাপ্ত নূরুল আলম আতিকের ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’র নির্মাণ পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি। একই অর্থবছরে অনুদান পাওয়া মাহমুদ দিদারের আরেক চলচ্চিত্র ‘বিউটি সার্কাস’ এখনো মুক্তি পায়নি। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে অনুদান পাওয়া কামার আহমেদ সাইমনের ‘শিকলবাহা’ এখনো মুক্তি পায়নি। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে অনুদান পাওয়া ‘রূপসা নদীর বাঁকে’ সিনেমাটি মুক্তি পায়নি। এটি পরিচালনা করেন নির্মাতা তানভীর মোকাম্মেল। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের হাবিবুর রহমানের পরিচালনায় ‘অলাতচক্র’ মুক্তি পায়নি।

অনুদান কমিটির সদস্য পরিচালক মতিন রহমান। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। অনুদানের অর্থ যারা নিলেন তাদের নৈতিক দায়িত্ব থাকে সিনেমাটির কাজ শেষ করে মুক্তি দেওয়া। এটা কারো ব্যক্তিগত টাকা নয়, জনগণের টাকা। সিনেমাটি নির্মাণ করে মুক্তি দিতে হবে। এই দায়িত্ব থেকে কেন তারা দূরে সরে যান এই প্রশ্নের জবাব তারাই দিতে পারবেন। একজন জনগণ হিসেবে সংশ্লিষ্টদের এমন কর্মকাণ্ড সমর্থন করি না।’

করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘ সাত মাসের বেশি সময় ধরে সব ধরনের শুটিং বন্ধ থাকায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে অনুদানপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রগুলোর জন্য নির্ধারিত সময় শিথিল করা হবে বলে জানিয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়। তাছাড়া বিষয়গুলো নিয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় কঠোর হচ্ছে। সিনেমাগুলো আলোর মুখ দেখাতে এরই মধ্যে বেশ কয়েকজনের নামে মামলাও করা হয়েছে বলে জানা যায়।

ঢাকা/রাহাত সাইফুল/শান্ত

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়