ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

দৌড়ে গিয়ে সৌমিত্রদার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম: ববিতা

রাহাত সাইফুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:২৪, ১৫ নভেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৯:২২, ১৫ নভেম্বর ২০২০
দৌড়ে গিয়ে সৌমিত্রদার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম: ববিতা

টলিউডের মহীরুহ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় আর নেই। গত ৩৯ দিন ক্ষীরদা সমস্ত ফাইটিং স্পিরিট দিয়ে লড়েছিলেন, শেষমেষ হেরে গেলেন। রোববার (১৫ নভেম্বর) দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে প্রয়াত হন এই অভিনেতা।

উত্তম সমসাময়িক যুগেও বাঙালির মনের মণিকোঠায় জায়গা করে নিয়েছিলেন সৌমিত্র। ছয় দশক দীর্ঘ তার চলচ্চিত্র জীবন। ওপার বাংলার পাশাপাশি তার সঙ্গে বাংলাদেশের শিল্পীরাও অভিনয় করেছেন। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘অশনি সংকেত’ সিনেমার নায়িকা হয়েছিলেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ববিতা। নন্দিত এই শিল্পীর মৃত্যুর খবরে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছেন এই অভিনেত্রী।

সৌমিত্রের মৃত্যুর খবরে ববিতার ভীষণ মন খারাপ। এ অভিনেত্রী রাইজিংবিডিকে বলেন, অনেক দিন ধরেই উৎকণ্ঠায় ছিলাম। সৌমিত্রদার শরীরটা ভালো যাচ্ছিল না বলে। প্রার্থনা করেছি তার সুস্থতার জন্য। মৃত্যুর খবরটা শুনে ভীষণ মর্মাহত হয়েছি। তাকে নিয়ে অনেক কথা অনেক স্মৃতি আছে। এখন যেন কিছুই বলতে পারছি না।

স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ববিতা বলেন, তিনি অনেক ভালো একজন মানুষ ছিলেন। আমি ১৯৭৩ সালে সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’ সিনেমায় কাজ করি। সেময় আমার বয়স ১৬ বছর। ছোট থাকার কারণে দাদা আমাকে খুব আদর করতো। শুরুতে দাদাকে দেখে একটু নার্ভাস ছিলাম। কারণ দাদার ‘অপুর সংসার’ সিনেমাটি আমি দেখেছিলাম। বিদেশে গিয়ে বিদেশি শিল্পীদের সঙ্গে অভিনয় করব। এটা নিয়ে আমি চিন্তিত ছিলাম। কিন্তু সৌত্রদার ব্যবহারে সব ভুলে গিয়েছি। তিনি এতটা আপন করে নিয়েছিলেন যে মোটেও খারাপ লাগেনি। কাজ করতে গিয়ে আমাদের মধ্যে মিষ্টি সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।

সর্বশেষ ঢাকায় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা হয় ববিতার। সে সময়ের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, কয়েক বছর আগে দাদা ঢাকায় এসেছিলেন একটি অনুষ্ঠানে। সেখানে আমিও গিয়েছিলাম। এটাই আমাদের শেষ দেখা। সেদিন দৌড়ে গিয়ে সৌমিত্রদার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। তার সঙ্গে আমার আত্মার সম্পর্ক ছিল।

১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে জন্মগ্রহণ করেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ১৯৫৯ সালে প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় ‘অপুর সংসার’ চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন। পরবর্তীতে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ১৪টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন সৌমিত্র।

মৃণাল সেন, তপন সিংহ, অজয় করের মতো পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেন তিনি। কবি ও খুব উচ্চমানের আবৃত্তিকার হিসেবে তার দারুণ খ্যাতি রয়েছে। ২০১২ সালে ভারতের চলচ্চিত্রাঙ্গনের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার লাভ করেন সৌমিত্র। ২০০৪ সালে ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মান পদ্মভূষণ পান তিনি। তাছাড়া ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, সংগীত নাটক একাডেমি পুরস্কার, ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কারসহ নানা পুরস্কার পেয়েছেন এই শিল্পী।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়